জাতীয়

এল বাড়ি ফেরার বেলা

প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করার বাঙালি ঐতিহ্য দীর্ঘদিনের। তাই শত বাধা, ভোগান্তি ও বিড়ম্বনা উপেক্ষা করেই নাড়ির টানে গ্রামে ফেরে রাজধানীর লাখো কর্মব্যস্ত মানুষ।

Advertisement

প্রতি বছর রেলস্টেশনে পরিবারের সঙ্গে ঈদ উদযাপনে ঘরমুখো মানুষের যে ভিড় লক্ষ্য করা যায়, এবারও ঈদুল আজহা উপলক্ষে তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না।

রোববার সকাল থেকেই ঘরমুখো মানুষের উপচেপড়া ভিড় ছিল কমলাপুর স্টেশনজুড়ে। সেখানে প্লাটফর্মে দাঁড়ানো ট্রেনগুলো কানায় কানায় পূর্ণ ছিল। এছাড়া কাঙ্ক্ষিত ট্রেনের অপেক্ষায় প্লাটফর্মে বসে থাকতে দেখা গেছে অসংখ্য মানুষকে।

টিকিটপ্রাপ্তি থেকে শুরু করে বাড়ি পৌঁছানো পর্যন্ত প্রতিটি ক্ষেত্রেই ঈদে ঘরমুখো মানুষের প্রতিবারই যে দুর্ভোগ ও হয়রানি পোহাতে হয়, তার কোনো আশঙ্কা দেখা গেল না যাত্রীদের কারও চোখে-মুখে। প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগির জন্য ঘরে ফিরতেই উদগ্রীব যেন সবাই।

Advertisement

গত ১৮ আগস্ট দেয়া হয় আজকের ২৭ আগস্টের ট্রেনের টিকিট। সে সময় দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে রোববারের টিকিট সংগ্রহ করতে হয়েছিল এসব ঘরমুখো মানুষকে।

উত্তরবঙ্গগামী একতা এক্সপ্রেস ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করছিলেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তানভির আহমেদ। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, প্রতি বছর ঈদে বাড়ি ফিরতে অতিরিক্ত ভোগান্তি পোহাতে হয়। আজকের টিকিটের জন্য নির্দিষ্ট দিনে সারারাত লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট সংগ্রহ করেছিলাম। আজ যখন যাব, তখন আবার ট্রেন বিলম্ব। প্লাটফর্মে অসংখ্য যাত্রীর ট্রেনের জন্য অপেক্ষা। ট্রেন আসলেই সবাই ঠেলাঠেলি করে উঠবে, তিল ধারণের ঠাঁই থাকবে না।

তিনি বলেন, এত ভোগান্তি, তবু বাড়ি ফেরাতে আলাদা আনন্দ। তাই সবাই ভোগান্তি উপেক্ষা করেও বাড়ি ফেরে।

ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করছিলেন বেসরকারি চাকরিজীবী নীলা আক্তার। তিনি বলেন, সড়কপথে অতিরিক্ত যানজট। তাই এবার অনেকে ভোগান্তি পোহায়ে ট্রেনের টিকিট কেটেছি। কিন্তু স্টেশনে এসে দেখি ট্রেন দেরি করে ছাড়বে। স্টেশনে ঘরে ফেরা মানুষের এত ভিড় দেখে মনে হচ্ছে ট্রেনে উঠে আসন পর্যন্ত পৌঁছাতেই পারব না। প্রতিবারই ঈদে ঘরে ফেরায় ভোগান্তি থাকে। তবুও যখন বাড়ি ফিরে প্রিয়জনদের মুখ দেখি, তখন সব ভোগান্তি ভুলে যাই।

Advertisement

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কমলাপুর স্টেশন থেকে আজ সারাদিনে ৬৬টি ট্রেন প্রায় ৭০ হাজার যাত্রী নিয়ে বিভিন্ন গন্তব্যে ছেড়ে যাবে।

এদিকে সকাল সাড়ে ৮টার পরে ঢাকার ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন ও তেজগাঁও স্টেশনের মাঝামাঝি স্টাফ রোডে রেললাইনে সমস্যা হওয়ার কারণে কমলাপুর স্টেশন থেকে ট্রেন ছাড়তে দেরি হচ্ছে।

লাইন ডাউন হওয়ার কারণে নীলসাগর, একতা, অগ্নিবীণা এক্সপ্রেস ট্রেন এক ঘণ্টা করে দেরিতে স্টেশন ছেড়ে গেছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েন ওইসব ট্রেনের যাত্রীরা। তবে দুপুর ১২টা পর্যন্ত কমলাপুর স্টেশন থেকে মোট ১৮টি ট্রেন ছেড়ে গেছে।

এ বিষয়ে কমলাপুর রেলস্টেশনের ম্যানেজার সীতাংশু চক্রবর্তী জাগো নিউজকে বলেন, লাইনে সমস্যা হওয়ায় ট্রেন আসতে দেরি হচ্ছে, তাই ছেড়ে যেতেও দেরি হবে। বর্তমানে দুই লাইনের পরিবর্তে এক লাইনে ট্রেন চলাচল করছে। লাইন মেরামতের আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।

এএস/এসআর/পিআর