হজ আল্লাহ তাআলা তাআলার ইবাদত। এ ইবাদত সামর্থবান মানুষের ওপর ফরজ। হজ ও ওমরা পালনের সময় আল্লাহর কাছে মানুষ চাওয়া-পাওয়া পূরণের আবেদন, আরজু ও আকাঙ্খার কমতি থাকে না। প্রতিটি মানুষই তাঁর এ চাওয়া-পাওয়াগুলো নিজের ভাষায় আল্লাহ তাআলার কাছে কামনা করে।
Advertisement
কিন্তু তালবিয়া পাঠের ক্ষেত্রে রয়েছে ভিন্নতা। তালবিয়া আদায় করতে হবে আরবিতে। আর তা হতে সহিহ এবং বিশুদ্ধ। আমাদের দেশ থেকে এবারো প্রায় সোয়া লাখেরও বেশি মানুষ হজ আদায় করবে। তাদের অনেকেরই তালবিয়া জানা নেই।
আবার অনেকেই জানে না ইহরাম কিভাবে বাঁধতে হয়। অথচ ইহরাম পরিপূর্ণভাবে আদায় না হলে জরিমানা স্বরূপ কুরবানি দিতে হবে। হজ হবে অসম্পূর্ণ।
হজের আরেক গুরুত্বপূর্ণ ফরজ হলো তাওয়াফ। তাওয়াফের ফজিলতও সবচেয়ে বেশি। এ তাওয়াফের বিধিবিধান- অনেকের জানা নেই। ইজতিবা ও রমল তাওয়াফের কার্যক্রমের অংশ।
Advertisement
তাওয়াফের পরই আদায় করতে হয় সাঈ। আর সবের প্রতিটি ধাপে ধাপেই আদায় করতে হয় তালবিয়া। তাই হজের অন্যান্য সব বিষয়ের সঙ্গে সঙ্গে হজ পালনকারীদের জন্য তালবিয়া বিশুদ্ধভাবে শিখে নেয়া জরুরি।
তালবিয়া‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক;লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক;ইন্নাল হামদা ওয়ান নি’মাতা লাকা ওয়াল মুলক;লা শারিকা লাক।’
এ তালবিয়া হচ্ছে হজের জন্য আল্লাহর দরবারে হাজিরা দেয়ার ঘোষণা। আল্লাহর একত্ববাদের ঘোষণা। হজ পালনকারীর তালবিয়া পাঠের সঙ্গে আশ-পাশের অন্যান্য জীব-জগৎও তালবিয়া পাঠ করে। হাদিসে এসেছে-
হজরত সাহল বিন সা’দ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যখন তালবিয়া পাঠ করা হয় তখন তালবিয়া পাঠকারী হাজি’র ডান-বাম দিকের পাথর, গাছ ও মাটি (এ সবই) তার সঙ্গে তালবিয়া পড়তে থাকে।
Advertisement
একজন হাজি যখন তালবিয়া পাঠ করার মাধ্যমে আল্লাহর (হামদ) শ্রেষ্ঠত্ব ও বড়ত্বের প্রকাশ করতে থাকে; তখন আল্লাহ তাআলা খুশি হন।
তালবিয়া পড়ার শর্তহজ পালনকারীর জন্য ইহরামের পর প্রথমবার তালবিয়া পড়া শর্ত। পরের বার তালবিয়া পড়া সুন্নত। মনের রাখতে হবে, তালবিয়া মুখে উচ্চারণ করাও শর্ত; শুধু মনে মনে পড়লে হবে না।আর তালবিয়ার শব্দ যা উল্লেখ করা হয়েছে হুবহু তা-ই পড়া সুন্নত।
যে সময়ে তালবিয়া পড়াপ্রত্যেক ফরজ ও নফল নামাজের পর অধিক হারে তালবিয়া পড়া মুস্তাহাব। তাছাড়া হজের এক রোকন থেকে অন্য রোকন পালনে রওয়ানা হওয়ার সময় বেশি বেশি তালবিয়া পড়া। উঁচু স্থানে আরোহণের সময়, কিংবা নিচে নামার সময় অথবা কোনো আরোহীর দলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এবং শেষ রাতে, ঘুম থেকে উঠার পর বেশি বেশি তালবিয়া পড়া।
তালবিয়ার শব্দগুলো থেকে কোনো শব্দ বাদ দেয়া যাবে না। কারণ তা থেকে কোনো শব্দ বাদ দেয়া নিষিদ্ধ।
পুরুষরা উচ্চ স্বরে তালবিয়া পড়বে। আর মহিলারা জোরে তালবিয়া না পড়ে স্বশব্দে তালবিয়া পড়বে। তাদের তালবিয়ার আওয়াজ শুধু তারাই শোনবে।
দলবদ্ধভাবে তালবিয়া পড়ার চেয়ে একাকী তালবিয়া পড়াই উত্তম। অন্যের ক্ষতি না করে তালবিয়ার আওয়াজ উঁচু করা সুন্নত। তবে মসজিদে অবস্থানকালে আস্তে আস্তে তালবিয়া পড়া।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর সব ওমরা ও হজ পালনকারীদেরকে যথাযথভাবে তালবিয়া শেখার তাওফিক দান করুন। হজের প্রতিটি ধাপে ধাপে তালবিয়া পড়ার মাধ্যমে আল্লাহর প্রশংসা ও তাওহিদের ঘোষণাসহ তার দরবারে হাজিরা দেয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/আইআই