এটা আশঙ্কার বিষয় যে বন্যা পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হচ্ছে না। বরং তা আরো বিস্তৃত হচ্ছে। এতে দেখা দিয়েছে সীমাহীন দুর্ভোগ। বাড়ি-ঘর রাস্তাঘাট ডুবে গেছে। অধিকাংশ বন্যা দুর্গত এলাকায়ই যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। দেখা দিয়েছে খাদ্য সংকট। উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে বন্যায় প্রাণহানির ঘটনাও ঘটছে। বিশেষ করে শিশুরা খুবই অনিরাপদে আছে। গৃহপালিত পশু মারা যাচ্ছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে দুর্গতদের সাহায্যার্থে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে ত্রাণ সহায়তা অব্যাহত রাখা হয়েছে। তবে পর্যাপ্ত ত্রাণের অভাব রয়েছে। এ অবস্থায় বানভাসি মানুষের সাহায্যার্থে সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রয়োজন।
Advertisement
গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, হু হু করে বাড়ছে পদ্মা নদীর পানি। গত ২৪ ঘণ্টায় এ নদীর পানি রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ পয়েন্টে ২১ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপদসীমার ৭৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অন্যদিকে, ভাগ্যকূল পয়েন্টে ১৭ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপদসীমার ১৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে বইছে দেশের অন্যতম প্রধান এ নদীর পানি। পানি বৃদ্ধির ধারা আরও তিনদিন অব্যাহত থাকতে পারে। এর ফলে রাজধানী ঢাকাসহ মধ্যাঞ্চলে বন্যা দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
উত্তরাঞ্চলের বন্যাকবলিত এলাকা সমূহে বর্তমানে সেনাবাহিনীর ২৮ প্লাটুন সদস্য মোতায়েন রয়েছে। সেনাবাহিনী ১ হাজার ৭৮৫ জনকে উদ্ধারসহ গবাদি-পশু ও গৃহস্থালি সামগ্রী উদ্ধার করেছে। এ ছাড়া সেনাবাহিনী সৈয়দপুর ও গাইবান্ধায় ভেঙে যাওয়া বাঁধ নির্মাণে স্থানীয় প্রশাসনকে সহায়তা প্রদান করেছে সেনাবাহিনী। সেনাবাহিনী নিবিড়ভাবে বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে এবং বন্যাদুর্গত এলাকায় যেকোনো ধরনের সহায়তা প্রদানে প্রস্তুত রয়েছে।
বন্যার্তদের সাহায্যার্থে বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক সংগঠনকেও এগিয়ে আসতে হবে। এই সময়ে শুকনো খাবার, স্যালাইন, বিশুদ্ধ খাবার পানি, হাত ধোয়ার সাবানসহ জীবনরক্ষাকারী ওষুধপত্রেরও প্রয়োজন হয়। ত্রাণ কার্যক্রমে এসব অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। পানি সরে যাওয়ার পর দ্রুত অবকাঠামোগত ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। বন্যার্তদের পুনর্বাসনেরও উদ্যোগ নিতে হবে। বানভাসি মানুষের সাহাযার্থ্যে একটি মানবিক জাগরণ অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে।
Advertisement
এইচআর/আরআইপি