দেশের বিভিন্ন জায়গায় ভবন নির্মাণে রডের বদলে বাঁশ ব্যবহার করা হলেও এবার ওসমানীনগরের গোয়ালাবাজার আদর্শ মহিলা ডিগ্রি কলেজ ভবন নির্মাণে রড-ই ব্যবহার করেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
Advertisement
শনিবার বিকেলে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও কলেজ গর্ভনিং বডির সভাপতি ইয়াহইয়া চৌধুরী সরেজমিনে এসে ভবনের বিভিন্ন পিলার ও লিন্ডার ভেঙে এই সত্যতা পান। এসময় ৩য় ও ৪র্থ তলার ঠিকাদার শাহ আলমসহ ৩ জনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের বিরুদ্ধে দুদকে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছে কলেজ কর্তৃপক্ষ।
জানা যায়, স্থানীয় শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের আওতায় গোয়ালাবাজার আদর্শ মহিলা ডিগ্রি কলেজের চতুর্থ তলা ভবনের নির্মাণ কাজ শুরু হয় গত বছরের আগস্ট মাসে। এক কোটি ৫৭ লাখ টাকা মূল্যে প্রথম ও দ্বিতীয় তলার কাজ পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পূষ্পা কন্সট্রাকশন। প্রথম দিকে নির্মাণ কাজ ভালো করলেও শেষ দিকে এসে অনিয়মের অভিযোগ উঠে।
সিলেট-২ আসনের সংসদ সদস্য ইয়াহইয়া চৌধুরী সাংবাদিক, কলেজ কমিটির সদস্যসহ শিক্ষকদের নিয়ে পরিদর্শনে এসে ভবনের বিভিন্ন পিলার ও লিন্ডার ভেঙে দেখতে পান বাইরে রডের মাথা বের করা থাকলেও ভেতরে কোনো রড ব্যবহার করা হয়নি।
Advertisement
এছাড়াও দেখা যায় ভবনের বড় লিন্ডারে রডের পিঞ্জিরাও ব্যবহার করা হয়নি। এসময় ঘটনাস্থল থেকে ভবনের তৃতীয় ও চতুর্থ তলার ঠিকাদার শাহ আলম ও তার সহযোগী আবদুল কাইয়ুম ও লোকমান হোসেনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। এঘটনায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে চরম প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
এ ভবন নির্মাণ তদারকির দায়িত্বে থাকা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর সিলেটের প্রকৌশলী তাজুল ইসলাম প্রথম থেকে এখন পর্যন্ত তিনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষে সাপাই গেয়ে আসছেন।
ওসমানীনগর থানা পুলিশের ওসি মোহাম্মদ সহিদ উল্যা বলেন, তিনজনকে আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়েছে।
কলেজের অধ্যক্ষ আবদুল মুকিত আজাদ বলেন, প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ৪তলা ভবনের কাজ হচ্ছে। প্রথম দিকে কাজের মান ভালো রাখলেও শেষ দিকে এসে অনিয়ম শুরু করে। গতকাল এমপি মহোদয় এসে ভবনের বিভিন্ন স্থানের লিন্ডার ও পিলার ভেঙে দেখতে পান রডের মাথা বের করা থাকলেও ভেতরে রড নেই। এঘটনায় আমরা দুদকে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছি।
Advertisement
প্রকৌশলী তাজুল ইসলাম বলেন, সাব ঠিকাদার কাজটিতে কিছু ত্রুটি করেছে। সেটি আমাদের কাছে ধরা পড়েছে। এবং সেগুলো পুনরায় করে দিতে বলেছি।
পুষ্পা কন্সট্রাকশনের স্বত্ত্বাধিকারী রাখাল দেব বলেন, কাজে কোনো অনিয়ম করিনি। কাজটি একজনকে সাবলিজ দিয়ে নিজে দেখাশোনা করছিলাম। কিন্তু ঈদের সময় কিছু কাজ করেছে তাতে কিছু সমস্যা করেছে। কোথাও কোথাও অতিরিক্ত কাজও করেছে।
সিলেট-২ আসনের সংসদ সদস্য ইয়াহ্ইয়া চৌধুরী বলেন, ভবন নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ পেয়ে গতকাল সরেজমিনে এসে কয়েকটি পিলার ও লিন্ডার ভেঙে কোনো রডই পাইনি। রডের পিঞ্জিরাও ব্যবহার করা হয়নি। রড দেখার জন্য শুধু বাইরে রডের মাথা বের করে রেখেছে। ঘটনাস্থল থেকে এক ঠিকাদারসহ তিনজনকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে।
ছামির মাহমুদ/এমএএস/জেআইএম