জাতীয়

শক্তি পাচ্ছে মুক্তা, ব্যথাও কমছে

বিরল চর্মরোগে আক্রান্ত সাতক্ষীরার মুক্তামণি আগের চেয়ে অনেক সবল হয়েছে, ব্যথা কমেছে। একটু একটু হাঁটতেও পারছে। গত মঙ্গলবার (১১ জুলাই) থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি আছে মুক্তা। প্রথমদিন থেকেই সে রক্তশূন্যতা এবং পুষ্টিহীনতায় ভুগছিল। সে সময় মুক্তার শরীরে রক্ত পাচ্ছিলেন না চিকিৎসকরা। তবে আগের অবস্থা থেকে এখন অনেকটাই ভালো বোধ করছে সে।

Advertisement

চিকিৎসকের পরামর্শে শনিবার সকাল থেকে তার এমআরআই, এক্স-রে এবং আল্ট্রাসনোগ্রাফি করা হয়েছে। এগুলোর রিপোর্টের ভিত্তিতে চিকিৎসার পরবর্তী ধাপ নির্ধারণ করবেন তারা।

শনিবার থেকে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা নিয়ে ব্যস্ত মুক্তা জাগো নিউজকে বলে, ‘আপনারা আমার জন্য দোয়া করবেন, যাতে সুস্থ হতে পারি।’

মুক্তার বাবা ইব্রাহীম হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, সকাল থেকে বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে টেস্ট করাচ্ছি। মুক্তার ব্যথা থাকলেও আগে থেকে অনেক কমেছে। সবকিছু খেতে পারছে সে। বাইরে থেকে দেখে মনে হচ্ছে শারীরিক উন্নতি হয়েছে।

Advertisement

এর আগে চিকিৎসকরা বলেছিলেন, মুক্তার চারটি সম্ভাব্য চর্মরোগের মধ্যে যেকোনো একটি হয়েছে। এগুলো হচ্ছে- ডার্মাল ভাসকুলার মালফরমেশন (চর্ম সংবহনতান্ত্রিক বিকলাঙ্গতা), লিম্ফ্যাটিক মালফরমেশন (লসিকানালি/রসবাহী নালির বিকলাঙ্গতা), নিউরোফিবরোম্যাটোসিস (একটি জিনগত ব্যাধি যা স্নায়ু টিস্যুতে টিউমার তৈরি করে) এবং কনজেনিটাল হাইপারকেরাটোসিস (বহির্বিভাগ অর্থাৎ বহিঃত্বক কোষ পুরু থেকে পুরুতর হওয়া)।

এই রোগের কারণে তার অপারেশন দরকার। তবে শরীরে রক্ত না থাকায় এখনই অপারেশন করছেন না চিকিৎসকরা। তাকে অপারেশনের জন্য প্রস্তুত করতে প্রাথমিকভাবে তিন ব্যাগ রক্ত দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন তারা। ইতোমধ্যে দুই ব্যাগ দেয়া হয়েছে। আগামীকাল আরেক ব্যাগ রক্ত দেয়া হতে পারে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। এরপর তার হিমোগ্লোবিনসহ নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে অপারেশনের সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

এ বিষয়ে বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন জাগো নিউজকে বলেন, মুক্তার ডান হাতের অপারেশন দরকার। তাকে রক্ত দেয়ার পর তার আরও রক্ত লাগবে কি না এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানানো হবে। এছাড়া তাকে পুষ্টিকর খাবার দিয়ে অপারেশনের জন্য প্রস্তুত করতে হবে। আমরা আশা করছি অল্প কয়েকদিনের মধ্যে সে অপারেশনের জন্য প্রস্তুত হবে। আমরা তার সুচিকিৎসার বিষয়ে আশাবাদী।

সম্প্রতি বিভিন্ন গণমাধ্যমে বিরল রোগে আক্রান্ত মুক্তার সংবাদটি প্রকাশিত হয়। গত রোববার (৯ জুলাই) জাগো নিউজে ‘লুকিয়ে রাখতে হয় মুক্তাকে’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। এ প্রতিবেদন প্রকাশের পর মুক্তার চিকিৎসার দায়িত্ব নেন স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবারকল্যাণ বিভাগের সচিব মো. সিরাজুল ইসলাম। পরে প্রধানমন্ত্রী মুক্তার যাবতীয় চিকিৎসার ব্যয়ভার বহনের দায়িত্ব নেন।

Advertisement

এআর/বিএ/জেআইএম