কৃষিপ্রধান জেলা দেশের সবচেয়ে বড় চালের মোকাম নওগাঁ। ঈদের পর থেকে মোটা চালের দাম কমতে শুরু করেছে কেজিপ্রতি ২-৩ টাকা।
Advertisement
তবে এলসির চালের প্রভাব নওগাঁয় এখনও পড়েনি। চাল ব্যবসায়ীরা মনে করছেন, এলসি চালের প্রভাবে আগামী সপ্তাহের মধ্যে চালের দাম আরও কমবে। এতে স্বস্তি পাবেন খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের আগস্ট থেকে দফায় দফায় চালের মূল্যবৃদ্ধি পায়। গত ১০ মাসে মোটা জাতের চালের মূল্যবৃদ্ধি পায়। সে তুলনা চিকন জাতের চালের দাম তেমন বৃদ্ধি পায়নি। মোটা জাতের চালের দাম প্রায় ১৬-১৮ টাকা বৃদ্ধি পায়।
ঈদের আগে খুচরা চালের বাজার ছিল, বিআর-২৮, ৪৮ টাকা, হাইব্রিড ৪০ টাকা ও স্বর্ণা ৪৫ টাকা কেজি। বতর্মানে চালের বাজার বিআর-২৮, ৪৫-৪৬ টাকা, হাইব্রিড ৩৭-৩৮ টাকা ও স্বর্ণা ৪২-৪৩ টাকা কেজি।
Advertisement
অর্থাৎ প্রতি কেজি মোটা চাল কেজিতে ২-৩ টাকা কমেছে। তবে চিকন চাল জিরাশাইল ৫০ টাকা কেজি ও পাইজাম ৫৮ টাকা কেজি হলেও কোনো দরপতন হয়নি। আর বস্তাপ্রতি পূর্বে ছিল বিআর-২৮, ২২০০-২২৫০ টাকা, স্বর্ণা ২১৫০-২২০০ টাকা, হাইব্রিড ১৮৫০-১৯০০ টাকা। মোটা চাল ৫০ কেজি ওজনে প্রতি বস্তায় কমেছে ১৫০-২০০ টাকা। তবে পাইকারি বাজারে বস্তাপ্রতি ২০০-২৫০ টাকা কমলেও খুচরা বাজারে কমেছে ১৫০-২০০ টাকা।
অবাক করা বিষয় হলো এলসির প্রভাব বাজারে পড়ার পূর্বেই শুল্ক কমার সঙ্গে সঙ্গে বাজারে চালের দাম স্বাভাবিকভাবে কমতে শুরু করেছে। কারণ হিসেবে একশ্রেণির সিন্ডিকেটকারীরা ধান-চাল মজুদ রাখায় বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি হয়েছিল।
এলসির চাল প্রবেশ করলে বাজারে চালের দাম কমে যাবে বুঝতে পেরে ওই সিন্ডিকেটকারীরা আগেই বাজারে চাল ছাড়তে শুরু করে। ফলে বাজারে চালের দাম কমতে শুরু করে। পাইকারি বাজারে চালের দাম কমতে শুরু করায় খুচরা বাজারেও চালের দাম কমতে শুরু করেছে।
ভারত থেকে ব্যাপক হারে দেশের বাজারে চাল আসতে শুরু করায় দাম কমতে শুরু করেছে। যেহারে চালের দাম কমতে শুরু করেছে, তাতে চালের ক্রয়মূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে চলে আসবে। পাশাপাশি বেশি দামে ধান কিনে রাখা ব্যবসায়ীদের লোকসান গুনতে হবে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
Advertisement
সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, আটা, ওএমএসের চাল বন্ধ রাখায় চালের এই মূল্যবৃদ্ধি পায়। সরকারিভাবে এটা চালু থাকলে বাজার নিয়ন্ত্রণে থাকবে এবং খেটে খাওয়া ও সাধারণ মানুষরা স্বস্তি ফিরে পাবে।
নওগাঁ পৌর ক্ষুদ্র চাল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মকবুল হোসেন বলেন, ঈদের পর চালের যে আমদানি হওয়ার কথা ছিল সেটা নেই। যে কারণে ক্রেতা কম এবং বিক্রিও কম। মোটা চালের দাম কেজিপ্রতি ২-৩ টাকা কমেছে। তবে এলসির চাল খুরচা বাজারে এখনও আসেনি। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে এলসির চাল খুচরা বাজারে এলে দাম কিছুটা কমবে।
মৌ এগ্রো অ্যারোমেটিক অটোমেটিক রাইস মিলস লিমিটেডের নির্বাহী পরিচালক, রফতানিকারক ও সরবরাহকারী মো. নুরুল ইসলাম বলেন, এলসিতে ২৮ শতাংশ শুল্ক থেকে ১৮ শতাংশ করা হয়েছে। এ কারণে গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে পাইকারি চালের বাজারে বস্তাপ্রতি ২০০ থেকে ২৫০ টাকা কমেছে। তবে খুচরা বাজারে এখন এর তেমন কোনো প্রভাব পড়েনি। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে এলসির চাল বাজারে আসতে পারে। যদি ভারতে চালের দাম আবারও বৃদ্ধি পায় তাহলে বাংলাদেশেও চালের মূল্যবৃদ্ধি পাবে।
আব্বাস আলী/এএম/জেআইএম