ঈদুল ফিতরের ছুটি তিনদিনই বহাল থাকছে। এবারের ঈদে আশা করা হয়েছিল সরকারি ছুটি তিনদিন থেকে বাড়িয়ে ছয়দিন করা হবে। কিন্তু সেই সুখবর আর পেলেন না সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
Advertisement
সোমবার জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব উপস্থাপনের কথা ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা হয়নি।
মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম বলেন, ছুটি বাড়ানোর বিষয়ে আজকের বৈঠকে কোনো আলোচনা হয়নি। ফলে আপাতত ঈদের সরকারি ছুটি তিনদিনই থাকছে।
তবে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ছয়দিনের ছুটির প্রস্তাবটি অনুমোদন হলে আগামী ২৮ ও ২৯ জুন সরকারি ছুটি হতো। কিন্তু ২৮ জুন সংসদে ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট পাস হওয়ার কথা রয়েছে। তাই গুরুত্বপূর্ণ এ সময়ে এ সিদ্ধান্ত নেয়নি সরকার।
Advertisement
ঈদে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি তিনদিন থেকে দ্বিগুণ করার বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রলালয় থেকে মন্ত্রিসভায় পাঠানো সারসংক্ষেপে বলা হয়, ঈদের ছুটির সময় যানবাহনের ওপর মাত্রাতিরিক্ত চাপ, দুর্ঘটনা বৃদ্ধিসহ দীর্ঘ ট্রাফিক জ্যামের সৃষ্টি হয়। ঈদের ছুটি শেষে অফিস খোলার পরবর্তী দু-একদিন কর্মচারীদের উপস্থিতি কম থাকে। তা সত্ত্বেও অফিসের ইউটিলিটি সার্ভিস, লিফট, গাড়ি চালু রাখতে হয়। ফলে বিদ্যুৎ, গ্যাস ও প্রয়োজনীয় জিনিসের সর্বোচ্চ ব্যবহার হয়।
এজন্য পবিত্র ঈদুল ফিতর ও আজহার তিনদিনের ছুটির সঙ্গে নৈমিত্তিক ছুটি ২০ দিনের পরিবর্তে ১৪ দিন রেখে বাকি ছয়দিন দুই ঈদের সঙ্গে তিনদিন করে সমন্বয় করা যায়। অন্য ধর্মাবলম্বীরা ঈদের ছুটি ভোগ করেন বিধায় তাদের প্রধান দুটি ধর্মীয় উৎসবের সরকারি ছুটির সঙ্গে দু’দিন করে চারদিন ঐচ্ছিক ছুটি দেয়া হবে। ফলে বিভিন্ন পর্বের জন্য বিদ্যমান ছুটির ভারসাম্য বজায় থাকবে। এতে যানবাহনের ওপর চাপ, যানজট ও দুর্ঘটনা হ্রাস পাবে। ছুটি শেষে কর্মস্থলে ফিরে আসার প্রবণতা বৃদ্ধি পাবে।
প্রস্তাব অনুসারে, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বাৎসরিক ২০ দিনের নৈমিত্তিক ছুটি থেকে ছয়দিন কেটে নিয়ে দুই ঈদের ছুটির সঙ্গে তিনদিন করে যুক্ত করে ঈদের ছুটি বৃদ্ধি করা হবে। এ ছুটির সঙ্গে কাউকে ঐচ্ছিক ছুটি দেয়া হবে না। এছাড়া অন্য ধর্মাবলম্বীরা ঈদের ছুটি ভোগ করে বিধায় তাদের প্রধান দুটি ধর্মীয় উৎসবে সরকারি ছুটির সঙ্গে দুদিন করে চারদিন ঐচ্ছিক ছুটি দেয়া হবে।
গত কয়েক বছর ধরে ঈদের ছুটি বাড়ানো নিয়ে বিতর্ক চলছে। গত বছর ঈদের ছুটি বাড়িয়ে তা আবার সাপ্তাহিক ছুটি শনিবারের সঙ্গে সমন্বয় করা হয়। তখন অনেকেই বদলি ছুটির পরিবর্তে নৈমিত্তিক ছুটির সঙ্গে সরকারি ছুটি সমন্বয়ের তাগিদ দেন।
Advertisement
বিশ্বের অনেক দেশেই ধর্মীয় বা জাতীয় উৎসবে দীর্ঘ ছুটি দেয়ার রেওয়াজ রয়েছে। ঈদে ছুটি বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন সময় পুলিশের পক্ষ থেকে সরকারকে প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। তাদের যুক্তি হচ্ছে, মাত্র তিনদিন ছুটি থাকায় একসঙ্গে প্রচুর লোক ঢাকা ও বিভিন্ন শহর থেকে গ্রামের উদ্দেশে রওনা হন। এতে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। এ সময় ঘরমুখো মানুষ নানা হয়রানির মুখে পড়েন। অবশেষে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ইনোভেশন টিম থেকে ঈদের ছুটি দ্বিগুণের প্রস্তাব করা হয়।
এমইউএইচ/এমএআর/আরআইপি