সৌদি আরবের নেতৃত্বে কাতারকে বয়কটের সিদ্ধান্ত থেকে দেশগুলোকে সরে আসার অনুরোধ জানিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান। কাতারে বাড়তি সেনা মোতায়েনের বিল পাস হওয়ার পর রিয়াদকে বিদ্বেষ ভুলে ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ারও আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। খবর আল-জাজিরার।
Advertisement
এরদোয়ান বলেন, কাতারকে বয়কট করে এ অঞ্চলের কোনো সমস্যার সমাধান হবে না। আঞ্চলিক সমস্যা সমাধানে ক্ষমতার সবটুকু দিয়ে সহযোগিতারও প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।
রমজান মাস উপলক্ষে শুক্রবার ইফতারের পর তিনি জাস্টিস অ্যান্ড ডেভলপমেন্ট পার্টির সদস্যদের বলেন, আমরা আমাদের কাতারি ভাইদের পরিত্যাগ করবো না।
এ সময় তিনি আরও বলেন, সৌদি প্রশাসনের কাছে আমার বিশেষ অনুরোধ, উপসাগরীয় অঞ্চলে আপনারা বৃহৎ এবং সবচেয়ে বেশি ক্ষমতাধর রাষ্ট্র। ভ্রাতৃত্বের জন্য আপনাদের কাজ করা উচিত; বিদ্বেষ ছড়ানো নয়। একসঙ্গে সবাই মিলে থাকার জন্য আপনাদের কাজ করা উচিত। এটা সৌদি আরবের পবিত্র মসজিদগুলোর রক্ষণাবেক্ষণকারীদের কাছ থেকে আমাদের প্রত্যাশা।
Advertisement
কাতারের প্রতি নিষেধাজ্ঞা সম্পর্কে এরদোয়ান বলেন, আমি মনে করি এটা সম্পূর্ণ বাতিল করা উচিৎ।
বৃহস্পতিবার সৌদি আরব, বাহরাইন, মিসর এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত যৌথ এক বিবৃতিতে জানায়, কাতারের ৫৯ জন ব্যক্তি এবং ১২টি দাতব্য প্রতিষ্ঠান সন্ত্রাসী কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত। এ ধরনের অভিযোগের ব্যাপারে এরদোয়ান বলেন, সেখানে এ ধরনের কিছু নেই। প্রতিষ্ঠানগুলো সম্পর্কে আমি জানি।
এখনও পর্যন্ত সৌদি আরব, মিসর, বাহরাইন, সংযুক্ত আরব আমিরাত, লিবিয়া, ইয়েমেন ও মালদ্বীপ কাতারের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছে। সর্বশেষ সেই তালিকায় নাম লিখিয়েছে জর্ডান।
এতে করে কার্যত একঘরে হয়ে পড়েছে কাতার। একঘরে অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে কাতারকে ইসলামপন্থী ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী হামাস এবং মিসরের মুসলিম ব্রাদারহুডের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করতে হবে বলে জানিয়েছে সৌদি প্রশাসন।
Advertisement
তবে কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুল রহমান আল-থানি বলছেন, নিজেদের পররাষ্ট্রনীতি বাদ দিয়ে কাতার অন্যদের কাছে বশ্যতা স্বীকার করবে না।
তবে কাতারের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক বজায় রেখেছে তুরস্ক। মিসরের মুসলিম ব্রাদারহুডের প্রতি উভয়ই সমর্থন জানিয়ে আসছে।
কাতারের সহায়তায় সেখানে সেনা মোতায়েন করছে তুরস্ক। এ বিষয়ে একটি প্রস্তাব পাস করেছে তুরস্কের পার্লামেন্ট। বুধবার এ প্রস্তাবের ওপর ভোট হয় তুরস্কের পার্লামেন্টে। এর পক্ষে পড়ে দুইশ ৪০ ভোট। এতে সমর্থন দেয় ক্ষমতাসীন দল ও বিরোধী জাতীয়তাবাদী এমএইচপি।
তুরস্ক ২০১৪ সালে সামরিক ঘাঁটি স্থাপনের জন্য কাতারের সাথে চুক্তি করেছিল। ২০১৫ সালে কাতারে নিযুক্ত তুর্কি রাষ্ট্রদূত আহমদ দেমিরক বলেছিলেন, তুরস্কে তিন হাজার সৈন্য মোতায়েন করতে চান তিনি।
কেএ/এনএফ/জেআইএম