দেশজুড়ে

ধর্ষণের পর অন্তঃসত্ত্বা, ৩ লাখে রফাদফা

রাজশাহীর তানোরে সংখ্যালঘু প্রতিবন্ধী এক তরুণী ধর্ষণের ঘটনায় তিন লাখ টাকায় নিষ্পত্তি করেছেন স্থানীয় প্রভাবশালীরা। তবে সালিশের ১৩ দিনেও জরিমানার ওই টাকা হাতে পায়নি ধর্ষণের শিকার ওই নারীর পরিবার।

Advertisement

এছাড়া মামলা দায়েরের ১৭ দিনেও গ্রেফতার নেই দুই ধর্ষক। পুলিশ বলছে, তারা লাপাত্তা। ধর্ষণের শিকার ওই তরুণী শারীরিক ও বাকপ্রতিবন্ধী।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রায় ৫ মাস আগে উপজেলার কামারগাঁ ইউনিয়নের মির্জাপুর এলাকা সনজিতের ছেলে রানা ও কার্তিকের ছেলে সবুজ তাকে ধর্ষণ করে। এতে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন ওই তরুণী। পাঁচ মাস পর বিষয়টি টের পায় তার পরিবার।

এ নিয়ে গত ১৩ মে ওই দুই ধর্ষকের নামে থানায় মামলা দায়ের করেন তরুণীর মা। এরপর থেকেই এলাকাছাড়ারানা ও সবুজ। মামলা দায়েরের পর স্থানীয় প্রভাবশালীরা বিষয়টি মীমাংসায় উঠেপড়ে লাগে।

Advertisement

গত ১৭ মে ওই ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আলাউদ্দিন চাপ প্রয়োগ করে ধর্ষণের শিকার ওই তরুণীর পরিবারকে আনেন সালিশে। সেখানে তিনিই ওই দুই ধর্ষককে দেড় লাখ টাকা করে তিন লাখ টাকা জরিমানা করেন। সালিশে দুই ধর্ষক ছিলেন অনুপস্থিত। তাদের পরিবার সেখানেই দেড় লাখ টাকা তুলে দেন ইউপি সদস্যআলাউদ্দিনের হাতে। বাকি দেড় লাখ টাকা মামলা তুলে নেয়ার পর দেয়ার সিদ্ধান্ত হয় সালিশে। জরিমানার টাকা পুরোটাই আলাউদ্দিন নিজের কাছে রেখে দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন সালিশে উপস্থিত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন।

টাকা নেয়ার কথা স্বীকার করেছেন ইউপি সদস্য আলাউদ্দিন। তিনি দাবি করেন, সালিশে ধর্ষক রানার সঙ্গে ওই তরুণীর বিয়ের সিদ্ধান্ত হয়। এতে পুরোহিত ও নেতাদের ম্যানেজ করতে ওই দেড় লাখ টাকা নেয়া হয়েছে। কিন্তু পরে ধর্ষক রানা বিয়েতে অস্বীকৃতি জানালে বিয়ে আটকে যায়।

তবে ধর্ষণের শিকার ওই তরুণীর পরিবারের ভাষ্য, টাকা নিয়ে ধর্ষকদের পালাতে সহায়তা করেছেন ইউপি সদস্য আলাউদ্দিন। বিষয়টি তারা থানা পুলিশকে জানিয়েছেন। জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন তারা।

জানতে চাইলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও তানোর থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) সাইফুল ইসলাম বলেন, ভিকটিমের পরিবার মীমাংসার নামে টাকা নেয়ার বিষয়টি তাদের জানিয়েছেন। এটি খতিয়ে দেখছেন তারা। এ নিয়ে আইনত ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানান তিনি। তবে পলাতক থাকায় আসামিদের গ্রেফতার করা যাচ্ছে না বলেও জানান তিনি।

Advertisement

ফেরদৌস সিদ্দিকী/এএম/পিআর