বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নবনির্বাচিত কমিটির দায়িত্ব গ্রহণ অনুষ্ঠান ছিল বুধবার। সেখানে নতুন কমিটিকে শুভেচ্ছা জানাতে উপস্থিত ছিলেন ঢাকাই ছবির মিষ্টি মেয়ে কবরী। কবরীকে ফুল দিয়ে শিল্পী সমিতির নতুন কমিটি স্বাগতম জানায়।
Advertisement
কবরী আসন গ্রহণ করেই সাংবাদিকদের সঙ্গে পরিচিতি পর্ব সারেন। বুধবার (২৪ মে) শিল্পী সমিতির নতুন কমিটির দায়িত্ব গ্রহণ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চনসহ আরও অনেকে।
উপস্থিত ছিলেন নতুন কমিটির সদস্য ছাড়াও নির্বাচন কমিশনের তিন সদস্য। অনুষ্ঠানের শুরুতে কবরী বলেন, আমি চলচ্চিত্রের মেয়ে কবরী। আপনারা সাংবাদিক ভাই-বোনেরা কে কোন প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন জানাবেন প্লিজ।
কবরীর অনুরোধে সাংবাদিকরাও তাদের নাম ও প্রতিষ্ঠানের পরিচয় দেন। এ সময় এত এত চলচ্চিত্র সাংবাদিক দেখে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন কবরী।
Advertisement
তিনি বলেন, ‘আমার সৌভাগ্য যে এতসব নবীন-প্রবীণ চলচ্চিত্র সাংবাদিক একসঙ্গে দেখতে পাচ্ছি। আমরা যখন নিয়মিত কাজ করতাম তখন এত সাংবাদিক ছিল না। আমাদের ও আমাদের ছবির এত প্রচার হতো না। সেই সময় কেবল একটা পত্রিকাই ছিল-চিত্রালী।’
‘এখন আমার লোভ হয়, যদি এত সাংবাদিকের সাপোর্ট পেতাম! এখানে যারা আছ সবাই আমার ছোট। আমি তোমাদের ভাই-বন্ধু বলেই ডাকতে চাই। তোমরা আমাদের একই পরিবারের। ডুবন্ত এই ইন্ডাস্ট্রির পাশে থেক। এই নতুন কমিটির পাশে থেক,’ বলেন কবরী।
এ সময় অনিয়মের যৌথ প্রযোজনা ও সাফটা চুক্তির প্রভাবে ঢাকাই ছবির বেহাল দশা নিয়ে আক্ষেপ করেন এই নায়িকা। এসব নিয়ে সাংবাদিকদের শক্তিশালী ভূমিকা রাখার অনুরোধ করেন। সাংবাদিকরা বরাবরই এসব অনিয়ম নিয়ে সোচ্চার ছিলেন। কিন্তু চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট সমিতি, মানুষজন, মন্ত্রণালয় ও কর্তৃপক্ষ কানে তোলেন না।
সাংবাদিকদের এমন বক্তব্যে কবরী সবাইকে এক হয়ে কাজ করার কথা বলেন। এ সময় তিনি চলচ্চিত্রের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর সমালোচনা করেন। তার তদারকির গাফিলতি নিয়েও কথা বলেন।
Advertisement
পাশাপাশি সেন্সর বোর্ড, চলচ্চিত্রে সরকারি অনুদান কমিটি, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার বাছাই ও প্রদান কমিটির দুর্বল ব্যবস্থাপনার কথা তুলে ধরেন। এসব বিষয়ে শিল্পী, প্রযোজক, পরিচালক ও সাংবাদিকদের আরও সোচ্চার হতে বলেন।
কবরী আরও বলেন, ‘আমরা অনেক প্রত্যাশা নিয়ে এই কমিটিকে সমর্থন দিয়েছি। শুরুতেই এদের পাশে ছিলাম। আমরা এ প্রত্যাশার সফল রূপদান দেখতে চাই। যারা পরাজিত হয়েছে তারাও এদের সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করবে সেটাও চাই। এসব মামলা মোকদ্দমায় ইন্ডাস্ট্রির যে ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে তা আমাদেরই ফিরিয়ে আনতে হবে।’
প্রসঙ্গত, গত ৫ মে অনুষ্ঠিত হয় চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। ১১ মে পরাজিত প্রার্থী রমিজ উদ্দিন নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ এনে ফলাফল বাতিল ও ক্ষমতা হস্তান্তর না করতে আবেদন করেন নিম্ন আদালতে। পরে ওই আবেদনের পক্ষে স্থগিতাদেশ দেন আদালত।
সেই পরিপ্রেক্ষিতে ১৮ মে আবেদনের বিবাদীরা আপিল করলে আগের স্থগিতাদেশ বহাল রাখে। পরবর্তীতে জেলা জজ আদালতে আপিল করলে বিচারক কুদ্দুস জামান স্থগিতাদেশ বাতিল করে রায় দেন। ফলে ক্ষমতা হস্তান্তরে আইনি কোনো বাধা নেই বলে জানান বিবাদী পক্ষের আইনজীবী কাওসার হাসান।
এরপরই বুধবার আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন কমিশনারের হাত থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্বগ্রহণ করে নতুন কমিটি। দুই বছর মেয়াদে এই কমিটির সভাপতি হয়েছেন মিশা সওদাগর ও সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান।
এলএ/এমএমএ/জেআইএম