মতামত

দ্রুত সম্পন্ন হোক ধর্ষণের বিচার

রাজধানীর বনানীতে দুই তরুণীকে ধর্ষণের মামলায় গ্রেফতার সাফাত আহমেদের ৬ ও সাদমান সাকিফের ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতারের বিষয়টি স্বস্তির। তবে এখনো অন্য অভিযুক্তরা পলাতক আছেন। তাদেরও গ্রেফতার করতে হবে অবিলম্বে। ধর্ষণের ঘটনায় অপরাধীরা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি পাবে এটাই দেখতে চায় মানুষজন।

Advertisement

বনানীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রী ধর্ষণের প্রধান আসামি সাফাত আহমেদ ও আরেক আসামি সাদমান সাকিফকে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে সিলেটে গ্রেফতার করা হয়। সাফাত ও সাদমান সিলেটে আত্মীয়ের বাসায় আত্মগোপনে ছিলেন। গত ২৮ মার্চ বন্ধুর সঙ্গে জন্মদিনের অনুষ্ঠানে গিয়ে বনানীর ‘দ্য রেইন ট্রি’ হোটেলে ধর্ষণের শিকার হন দুই বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া তরুণী। ওই ঘটনায় গত ৬ মে রাজধানীর বনানী থানায় অভিযুক্ত সাফাত আহমেদ, নাঈম আশরাফ ও সাদমান সাকিফসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন তারা। মামলার পর থেকেই পলাতক ছিলেন আসামিরা।

দেরিতে হলেও অভিযুক্তদের গ্রেফতারের বিষয়টি স্বস্তির। কিন্তু মামলা নিতে দেরি হওয়া, আসামি ধরতেও গড়িমসিসহ এরই মধ্যে এই মামলা নিয়ে যে ধরনের শৈথিল্য দেখানো হয়েছে সেটি ভালভাবে নেয়নি মানুষজন। দেশে ধর্ষণের বিরুদ্ধে একটি জনমত সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে বনানীর ‘দ্য রেইন ট্রি’র ঘটনায় যে ভয়াবহ চিত্র দেখা যাচ্ছে তাতে এখনই লাগাম টেনে ধরতে হবে। কথা উঠেছে ওই দিন রেইন ট্রি হোটেল কর্তৃপক্ষের আচরণ নিয়েও। এই হোটেলে অনুমোদনহীন অনেক কর্মকাণ্ড চলে বলে গণমাধ্যমের রিপোর্টে ওঠে এসেছে। সেসব নিয়েও তদন্ত করতে হবে।

এছাড়া আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদ ছেলে  সাদমান সম্পর্কে সাফাই গাইতে গিয়ে বলেছেন, ‘জোয়ান পোলা একটু আধটু করবোই, আমিও করি’ এ থেকে এদের মানসিকতা ও দাম্ভিকতার বিষয়টিও স্পষ্ট। শুল্ক গোয়েন্দারা এরই মধ্যে আপন জুয়েলার্সের বিভিন্ন বিষয় খতিয়ে দেখছে। কোনো অনিয়ম পাওয়া গেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নিতে হবে।

Advertisement

ধর্ষণ নারীর বিরুদ্ধে এক ঘৃণ্য অপরাধ। মামলাটি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করতে হবে। প্রয়োজনে দ্রুত বিচারের ব্যবস্থা করতে হবে। এ ধরনের অপরাধের শাস্তি না হলে তার পুনরাবৃত্তি হতেই থাকবে। ভুক্তভোগীরা আশঙ্কা করছেন অভিযুক্তরা প্রভাবশালী হওয়ায় মামলা ভিন্নখাতে নেয়ার অপচেষ্টা হতে পারে। একটি দুর্ভাগ্যজনক প্রবণতা হচ্ছে অনেক সময় অপরাধীরা প্রভাবশালী হওয়ায় তারা আইনের ফাঁক গলে বেরিয়ে যায়। তাছাড়া নির্যাতিতাকেও নানাভাবে নাজেহাল করা হয়। ধর্ষণের বিচার প্রক্রিয়াটিও অত্যন্ত জটিল। এখানে নির্যাতিতাকে আক্ষরিক অর্থেই নানা পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। সমাজ থেকে এই অন্ধকার দূর করতে হবে। বিভিন্ন দিক থেকেই দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। নারীর ক্ষমতায়ন হচ্ছে, মাতৃমৃত্যুর হার কমেছে। এসব উন্নতি বিফলে যাবে যদি নারী নির্যাতন বন্ধ করা না যায়। বিশেষ করে ধর্ষণের মতো ঘৃণ্য অপরাধের শাস্তি হতেই হবে। অপরাধীরা যতোই প্রভাবশালী হোক না কেন।

এইচআর/এমএস