কক্সবাজারের পেকুয়ার উপকূলীয় করিয়ারদিয়া মৌজায় নির্মাণাধীন কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য অধিগ্রহণকৃত লবণ মাঠের ন্যায্য ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন জমির মালিকরা। শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে কক্সবাজার প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।
Advertisement
সংবাদ সম্মেলনে জমির মালিকরা জানান, একর প্রতি লবণ মাঠে বার্ষিক আয় হয় ১০ লাখ টাকা। ক্ষতিপূরণের জন্য প্রাথমিকভাবে প্রস্তাবিত ৮ লাখ টাকা এক বছরের আয়ের চেয়েও কম। তাই একর প্রতি অন্তত ৫০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ হওয়া উচিৎ। এ বিষয়ে তারা প্রধানমন্ত্রীর জরুরী হস্তক্ষেপও কামনা করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে ক্ষতিগ্রস্ত জমির মালিকদের পক্ষে লিখিত বক্তব্য দেন আইনজীবী ও জেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট শহীদুল্লাহ চৌধুরী।
তিনি বলেন, কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের জন্য ইলেক্ট্রিসিটি জেনারেশন কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেড (ইজিসিবি) নামের একটি প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে সরকার করিয়ারদিয়া মৌজার ১২শ একর জমি অধিগ্রহণের প্রস্তাব করে। গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে এ সংক্রান্ত ৩ ধারার একটি নোটিশ জমির মালিকদের কাছে পৌঁছানো হয়। কিন্তু অধিগ্রহণকৃত জমির ক্ষতিপূরণের যে প্রস্তাব করা হয়েছে, তাতে জমির মালিকরা প্রকৃত মূল্য দূরে থাক, তার কিয়দংশও পাবে না। এই আশঙ্কায় গত প্রায় সোয়া বছর ধরে জেলা প্রশাসন ও ভূমি মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দফতরে জোর দেন দরবার করা হচ্ছে। কিন্তু দাবির স্বপক্ষে এখনও কোনো আশ্বাস পাইনি।
Advertisement
সংবাদ সম্মেলনে অধিগ্রহণকৃত জমির উচ্চ উৎপাদনশীলতার কথা উল্লেখ করে বলা হয়, বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য করিয়ারদিয়া মৌজার যে ১২শ একর জমি অধিগ্রহণ করা হচ্ছে, তার পুরোটাই লবণ মাঠ। এছাড়া সেখানে ৫ শতাধিক বসতবাড়িও রয়েছে। বর্তমানে এই এলাকার প্রতি একর জমিতে বার্ষিক লবণ উৎপাদন হয় ৭৫০ মণ, যার বর্তমান বাজারমূল্য সাড়ে ৩ লাখ টাকার বেশি।
জমির মালিকরা বলেন, উক্ত জমির উপর প্রায় ১৪ হাজার মানুষের জীবন-জীবিকা নির্ভরশীল। অধিগ্রহণ করা হলে এসব মানুষের জীবন-জীবিকা পড়বে চরম ঝুঁকির মুখে। এরপরও আমরা চাই, দেশের উন্নয়নের স্বার্থে এখানে একটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র হোক। তবে তা হওয়া উচিত ন্যায্য ক্ষতিপূরণসহ ক্ষতিগ্রস্তদের যথাযথভাবে পুনর্বাসন করে। ক্ষতিপূরণ হিসেবে প্রতি একর জমির মূল্য অন্তত ৫ বছরের আয়ের সমান বা ৫০ লাখ টাকা হওয়া উচিৎ বলে আমরা মনে করি।
সংবাদ সম্মেলনে করিয়ারদিয়ার জমির মালিকদের মধ্যে হোসাইন আহমদ, হেমায়েত হোসেন, মোহাম্মদ কফিলউদ্দিন, সাবেক চেয়ারম্যান সাহাবউদ্দিন, অধ্যাপিকা শিরীন নূর, জামিল ইব্রাহিম, সিরাজুল মোস্তফা মেম্বার, নুর হোসাইন মেম্বার, মনজুর হোসাইন, মানিক মিয়া, কামরুল ইসলাম, বোরহানউদ্দিন, মিজানুর রহমান হিরু ও হেফাজতুর রহমান টিপু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সায়ীদ আলমগীর/আরএআর/পিআর
Advertisement