কথায় বলে বিপদের সময়ে মাথায় বাজ পড়েছে! সে তো কথার কথা, কিন্তু বিপদের দিনে যে বাজ নয়, গরুও অথবা বাছুরও পড়তে পারে আকাশ থেকে, সেটা হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছেন আব্দুল মান্নান। কলকাতার তিলজলা এলাকার বাসিন্দা ৪৩ বছর বয়সী আব্দুল মান্নান রোববার সকালে গিয়েছিলেন বাজারে।
Advertisement
শসা কেনার জন্য তিনি যখন নিচু হয়েছিলেন, তখন তার মাথায় এসে পড়ে ভীষণ ভারী কোনো বস্তু। রাস্তায় উল্টে পড়ে যান তিনি। চারদিকে রক্ত। তারপরেই তিনি খেয়াল করেন যে আস্ত একটি বাছুর পড়েছে তার মাথায়। জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন তিনি।
প্রথমে একটি বেসরকারি নার্সিং হোমে এবং পরে তাকে সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান স্থানীয়রা। কিন্তু আকাশ থেকে বাছুর পড়ল কীভাবে? খোঁজ নিয়ে স্থানীয়রা জানতে পারেন, মান্নান যে বাড়ির সামনে শসা কিনতে দাঁড়িয়েছিলেন, সেটার চারতলার ছাদ থেকে লাফিয়ে নিচে পড়ে যায় ছয় মাস বয়সী, ৮৫ কেজি ওজনের ওই বাছুরটি।
বাড়ির মালিক আঞ্জুম আলম আহত মান্নানের পরিবারকে জানিয়েছেন যে তার বাড়িরই এক ভাড়াটিয়া ছাদে দড়ি দিয়ে ওই বাছুরটিকে বেঁধে রেখেছিল। রোববার তাকে স্নান করানোর পরই সে খেপে গিয়ে লাফ ঝাঁপ দিতে শুরু করে। গলায় যে রশি দিয়ে তাকে বেঁধে রাখা হয়েছিল, সেটি ছিঁড়ে ছাদের দেয়াল টপকে প্রায় ৭০ ফুট নিচে পড়ে যায় বাছুরটি। ঠিক সেখানেই দাঁড়িয়ে ছিলেন আব্দুল মান্নান।
Advertisement
তার স্ত্রী সীমা বেগম বিবিসি বাংলাকে বলেন, কপালে এটাই হওয়ার ছিল। আকাশ থেকে গরু এসে পড়ে ওর একটা পা ভেঙ্গেছে, ১৮টা সেলাই পড়েছে। গায়ে, হাতে, পায়ে অনেক জায়গায় চোট আছে। সাত সদস্যের পরিবারে একমাত্র উপার্জনকারী আব্দুল মান্নান স্কুলের সামনে ছোলা-বাদাম বিক্রি করেন। আগামী অন্তত সাত দিন তিনি কাজে বেরতে পারবেন না বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।
তবে যে বাড়ি থেকে বাছুরটি লাফ দিয়ে পড়েছিল, সেই বাড়ির মালিক মান্নানের চিকিৎসার খরচ দিয়েছেন। পুলিশের কাছে কোন অভিযোগ না জানানো হলেও তিলজলা থানা একটি জেনারেল ডায়েরিতে ঘটনাটির উল্লেখ করে রেখেছেন।
এসআইএস/জেআইএম
Advertisement