রাজধানীর জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটসহ সারা দেশের সরকারি হাসপাতালে হৃদরোগীদের স্ট্যান্ট (করোনারি রিং) অস্ত্রোপচার কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে।
Advertisement
সম্প্রতি ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের এক সার্কুলারে স্ট্যান্টের মূল্য নির্ধারণ ও নিয়ন্ত্রণের প্রতিবাদে সরবরাহকারী কোম্পানিগুলো অঘোষিত ধর্মঘট অর্থাৎ স্ট্যান্ট সরবরাহ বন্ধ করে দেয়ায় স্ট্যান্ট লাগানোর জন্য অপেক্ষমাণ হৃদরোগীরা বিপাকে পড়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের পাঁচটি ক্যাথল্যাব অপারেশন থিয়েটারে (ওটি) প্রতিদিন গড়ে ৩০টি স্ট্যান্ট লাগানো হলেও বুধবার সকাল থেকে সিরিয়ালে থাকা রোগীদের স্ট্যান্ট না লাগিয়ে ওটি থেকে ফিরিয়ে দেয়া হচ্ছে। হাসপাতালের একাধিক রোগী ও চিকিৎসক এ খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের একজন সহযোগী অধ্যাপক বুধবার বেলা সোয়া ১১টায় জাগো নিউজকে জানান, সরকারিভাবে মূল্য নির্ধারণ করে দেয়ার প্রতিবাদে স্ট্যান্ট সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলো ধর্মঘট ডেকেছে। তারা সরকার নির্ধারিত মূল্যে স্ট্যান্ট সরবরাহ করবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে।
Advertisement
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শুধু হৃদরোগ ইনস্টিটিউটেই নয়, সারা দেশের সরকারি হাসপাতালে স্ট্যান্ট ব্যবসায়ীদের অঘোষিত ধর্মঘট চলছে। এ পরিস্থিতিতে বুধবার সকালে ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটসহ বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালের পরিচালকদের জরুরি বৈঠক চলছে।
মঙ্গলবার ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোস্তাফিজুর রহমান এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, স্ট্যান্ট আমদানির জন্য বর্তমানে দেশে ২২টি কোম্পানির বৈধ অনুমোদন রয়েছে। এ কোম্পানিগুলো মোট ৪৭ ধরনের স্ট্যান্ট আমদানি করে।
তিনি জানান, এখন থেকে রেজিস্ট্রেশনপ্রাপ্ত সব স্ট্যান্ট সরবরাহকারী কোম্পানিকে তাদের কাছ থেকে মূল্য নির্ধারণ করে নিতে হবে। ১৭ সদস্যের বিশেষজ্ঞ কমিটি স্ট্যান্টের মূল্য নির্ধারণ করবে। এখন থেকে প্রতিটি কোম্পানিকে আমদানিকৃত স্ট্যান্টের গায়ে ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (ডিআর) রেজিস্ট্রেশন নম্বর, পণ্যটির মূল্য ও এর মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ উল্লেখ করতে হবে।
তিনি আরও জানান, দেশের চারটি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান হৃদরোগের অর্থাৎ করোনারি স্ট্যান্টের প্রস্তাবিত মূল্য ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরে দাখিল করে। প্রস্তাবনা অনুসারে বেয়ার মেটাল ও ডিইএস স্ট্যান্টের মূল্য ২৫ হাজার ও ড্রাগ ইলিওটিং স্ট্যান্টের মূল্য ৫০ হাজার টাকা প্রস্তাব করা হয়। কোম্পানিগুলো হলো- কার্ডিয়াক কেয়ার, ভাসটেক লিমিটেড, মেডিগ্রাফিক ট্রেডিং লিমিটেড ও ওরিয়েন্টর এক্সপোর্ট কোম্পানি লিমিটেড।
Advertisement
জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিউটের পরিচালক অধ্যাপক ডা. আফজালুর রহমানের এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, স্ট্যান্টের মূল্য নির্ধারণ নিয়ে ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের একটি বৈঠকে আছেন। সকাল ৯টা থেকে হাসপাতালে স্ট্যান্ট লাগানো শুরু হয়। তিনি এর আগেই হাসপাতাল থেকে চলে আসায় সঠিকভাবে বলতে পারছেন না। তিনি দুপুরে বিষয়টি সম্পর্কে জেনে জানাবেন বলে জানান।
এমইউ/জেডএ/এআরএস/আরআইপি