আন্তর্জাতিক

দৃঢ় বন্ধুত্বের বার্তা দিলেন মোদি

সব প্রটোকল ভেঙে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বিমানবন্দরে অভ্যর্থনা জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ভারতের ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেসের এক খবরে এ কথা জানানো হয়েছে।

Advertisement

ভারতের স্থানীয় সময় দুপুর ১২টা ৫ মিনিটে দিল্লিতে অবতরণ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সাত বছর পর এটি শেখ হাসিনার প্রথম দ্বিপক্ষীয় ভারত সফর। এই সফরে বেশ কিছু চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে।

ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেসের খবরে বলা হয়েছে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত কেবল যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের ক্রাউন প্রিন্স শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদকেই বিমানবন্দরে সশরীরে হাজির হয়ে অর্ভ্যথনা জানিয়েছেন মোদি। আর আজ তিনি উষ্ণ অর্ভথ্যনা জানালেন শেখ হাসিনাকে।

Advertisement

এর অর্থ হলো, মোদি খুব ভালোভাবেই জানেন তার ঘনিষ্ট বন্ধু কারা কাদের সঙ্গে ঘনিষ্টতা রক্ষা করতে হবে।

শেখ হাসিনা দিল্লিতে পৌঁছানোর পর তাকে স্বাগত জানিয়ে দু’টি টুইটও করেছেন মোদি।

এই সফরে শেখ হাসিনা ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জী ও দেশটির বিরোধীদলীয় নেতা সোনিয়া গান্ধির সঙ্গেও বৈঠক করবেন।

বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত করবেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ।

Advertisement

শুক্রবার রাতে বাংলাদেশ হাইকমিশনারের বাসভবন ‘বাংলাদেশ হাউজে’ প্রধানমন্ত্রীর সম্মানে নৈশভোজের আয়োজন করা হয়েছে। বাংলাদেশ হাইকমিশন থেকে বাংলাদেশ হাউজে যাবেন প্রধানমন্ত্রী। নৈশভোজ শেষে তিনি ফের যাবেন রাষ্ট্রপতি ভবনে।

শনিবার সকাল থেকেই ব্যস্ত সময় কাটাবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শুরুতে রাষ্ট্রপতি ভবনে তাকে আনুষ্ঠানিক অভ্যর্থনা জানানো হবে। এ সময়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভ্যর্থনা জানাবেন। ভারতের তিন বাহিনীর একটি চৌকস দল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে গার্ড অব অনার দেবেন। এরপর রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে মহাত্মা গান্ধি মেমোরিয়ালে যাবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানকার আনুষ্ঠানিকতা শেষে সকাল ১০টার দিকে আবারও রাষ্ট্রপতি ভবনে ফিরে আসবেন তিনি।

সেখানে কিছু সময় বিশ্রাম নিয়ে সাড়ে ৩টার দিকে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে যেসব ভারতীয় সেনাসদস্য শহীদ হয়েছেন তাদের মরণোত্তর ‘মুক্তিযুদ্ধ সম্মাননা’ প্রদান করবেন প্রধনামন্ত্রী। পদকপ্রাপ্তদের মধ্যে সাতজনের নিকটাত্মীয়দের হাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘মুক্তিযুদ্ধ সম্মাননা পদক’ এবং সম্মাননাপত্র তুলে দেবেন। এ অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি উপস্থিত থাকবেন এবং বক্তৃতা দেবেন। প্রাথমিকভাবে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে শহীদ এক হাজার ৬৬১ জনকে মরণোত্তর সম্মাননা দেয়া হচ্ছে।

অনুষ্ঠানে যোগদানের পর আবারও রাষ্ট্রপতি ভবনে ফিরে আসবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর সন্ধ্যা ৬টার দিকে ভারতের উপ-রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ হামিদ আনসারির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত করতে তার বাসভবনে যাবেন। বৈঠক শেষে সাড়ে ৬টায় রাষ্ট্রপতি ভবনে ফিরে আসবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সফরের তৃতীয় দিন রোববার সকালে জয়পুর যাবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এয়ার ইন্ডিয়ার বিশেষ ফ্লাইটে জয়পুর যাবেন তিনি। জয়পুর বিমানবন্দর থেকে হেলিকপ্টারে করে আজমির শরিফ যাবেন তিনি। এখানে জিয়ারত শেষে হেলিকপ্টারে যাবেন জয়পুর বিমানবন্দরে। সেখান থেকে দুপুর ১টার দিকে আবারও দিল্লির উদ্দেশে রওনা দেবেন।

দিল্লি পৌঁছে দুপুরে রাষ্ট্রপতি ভবনে মধ্যাহ্নভোজ শেষে বিশ্রাম নেবেন। সন্ধ্যা ৬টার দিকে বৈঠক করবেন ভারতের বিরোধী দল কংগ্রেসের সভাপতি সোনিয়া গান্ধির সঙ্গে। সন্ধ্যা ৭টায় ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির সঙ্গে সৌজন্য বৈঠক করবেন তিনি। এরপর প্রধানমন্ত্রীর সৌজন্য রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির পক্ষ থেকে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও নৈশভোজের আয়োজন করা হয়েছে।

সফরের চতুর্থ দিন সোমবার সকালে হোটেল তাজ প্যালেসে বাংলাদেশ-ভারত ব্যবসায়িক ইভেন্টের আয়োজন করা হয়েছে। সে অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে আবারও ১১টার দিকে রাষ্ট্রপতি ভবনে ফিরে আসবেন প্রধানমন্ত্রী।

সেখানে বিশ্রাম নিয়ে সোমবার বিকেল সাড়ে ৩টায় শেখ হাসিনা বাংলাদেশ বিমানের বিশেষ ফ্লাইটে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেবেন।

এনএফ/এমএস