মঙ্গলবার বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ভারি বর্ষণ; রেশ ছিল রাতেও। রাত নয়টার পরও কলম্বোর আকাশে ছিল মেঘের ঘনঘটা। বৃষ্টি পড়েছে টিপ টিপ। এর মধ্যে বাংলাদেশ দলের অনুশীলন যথাসময়ে শুরু হবে তো? এ শঙ্কা কাটল বৃহস্পতিবার ভোরেই।
Advertisement
আগের রাতের মেঘ ও বৃষ্টি কেটে সূর্যের দেখা মিলল ভোরেই। সকাল সাড়ে নয়টার কয়েক মিনিট আগেই টাইগারদের টিম বাস এসে থামল সিংহলিজ স্পোর্টস ক্লাব মাঠে। ঐচ্ছিক প্র্যাকটিস। বাধ্যতামূলক নয়। আগের দুই ম্যাচ খেলা একাদশের আটজনই বিশ্রামে।
শুধু মুশফিকুর রহীম, সৌম্য সরকার আর মোস্তাফিজুর রহমান প্র্যাকটিসে। সাথে এ সিরিজের এখনো খেলার সুযোগ না পাওয়া ওপেনার ইমরুল কায়েস, স্পিনিং অলরাউন্ডার শুভাগত হোম, উইকেটকিপার নুরুল হাসান সোহান, বাঁহাতি স্পিনার সানজামুল ইসলাম আর দুই পেসার রুবেল হোসেন ও শুভাশিস রায়।
১৭ জনের বহরের অর্ধেক প্রায় (৯ জন) প্র্যাকটিসে আসলে কোচিং স্টাফের সবাই ঠিক উপস্থিত। শুধু অনুশীলনে আসাই নয়, নির্দিষ্ট পরিকল্পনা নিয়েই আজ সিংহলিজ স্পোর্টস ক্লাব মাঠে সকাল সকাল প্র্যাকটিসে হেড কোচ চণ্ডিকা হাথুরুসিংহে, ব্যাটিং কোচ সামারাবিরা, সহকারি কোচ রিচার্ড হালসাল, পেস বোলিং কোচ কোর্টনি ওয়ালশ ও ট্রেনার মারিও ভিল্লাভারায়ন আজ এসেছিলেন বিশেষ কিছু মিশন নিয়ে।
Advertisement
একটু লক্ষ্য করুন, অধিনায়ক মাশরাফি, ওপেনার তামিম, সাকিব, মাহমুদউল্লাহ, সাব্বির, মিরাজ ও তাসকিন ও মোসাদ্দেক আসেননি। এসেছেন মুশফিক , সৌম্য আর মোস্তাফিজ। বলার অপেক্ষা রাখে না, তিনজনই চলতি সিরিজে নিজেকে মেলে ধরার অপেক্ষায়। প্রথম ম্যাচে তামিম সেঞ্চুরি করেছেন। সাব্বির-সাকিব হাফ সেঞ্চুরি করেছেন। আর শেষ দিকে অল্প সময় সুযোগ পেয়ে রান করেছেন মোসাদ্দেক ও মাহমুদউল্লাহও। রান পাননি শুধু সৌম্য (১০) ও মুশফিক (১)।
এজন্যই অসহ্য গরম আর ঘামে যেখানে প্রাণ ওষ্ঠাগত, তার মধ্যেও মুশফিক-সৌম্যকে আলাদা ব্যাটিং প্র্যাকটিস করানো। কোচ হাথুরুসিংহে আর ব্যাটিং কোচ সামারাবিরা পাখির চোখে পরখ করলেন মুশফিক ও সৌম্যর নেটের ব্যাটিং। দুজনে ‘বোলিং হাতায়’ বল ছুড়ে ব্যাটিং অনুশীলনে ভুমিকাও রাখলেন। এর মধ্যে কোচ হাথুরুসিংহের বিশেষ হাতায় ছুড়ে দেয়া বল পেটের ওপরের অংশ আর পাজরের ঠিক নিচের অংশে গিয়ে আঘাত হানলো সৌম্য সরকারের। অল্প সময়ের জন্য ব্যথায় কুকিয়ে উঠলেন এ বাঁহাতি। খানিক্ষণ বসেও থাকলেন। তারপর অবশ্য আবার ব্যাটিং প্র্যাকটিসে মনোযোগ দেয়া।
মুশফিক নেটে ব্যাটিং সেরে আবার আসলেন সেন্টার উইকেটে বাড়তি ব্যাটিং করতে। বোঝাই গেল মুশফিক ও সৌম্যকে শেষ মুহূর্তে ঝালিয়ে নেয়া। যাতে তারা শেষ ম্যাচে ‘চার্জড আপ’ থাকেন। একইভাবে মোস্তাফিজকেও বিশেষভাবে ট্রেনিং করানো হলো।
কারণ আগের দুই ম্যাচে নিজের মানে ভালো বোলিং করেননি মোস্তাফিজ। দুই ম্যাচেই ওভার পিছু ছয় রানের বেশি দিয়েছেন। প্রথম ম্যাচে ওভার পিছু ৬.৮৫ আর পরিত্যক্ত হওয়া দ্বিতীয় খেলায় ৭.৫০ রান করে দিয়েছেন কাটার মাসটার। বলার অপেক্ষা রাখে না তাই তাকে বাড়তি অনুশীলন করানো।
Advertisement
এই অনুশীলন পর্ব শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হলেন কেচ হাথুরুসিংহে। প্রশ্ন উঠলো, মূল একাদশের আটজনই বিশ্রামে কেন? কোচ হাথুুরুসিংহের কাছে প্রশ্নটা ভালো লাগল না। সব সময় ট্রেনিং করতে হবে এমন কথা নেই। শ্রীলঙ্কার প্রচণ্ড গরমের মধ্যে যথার্থ প্রস্তুতি নেয়া থাকলে আসলে সব দিন প্র্যাকটিস করার দরকার পড়ে না।
কোচের এ কথাই বলে দেয় কী কারণে মাশরাফি, তামিম ও সাকিব, মাহমুদউল্লাহসহ আগের দুই ম্যাচ খেলা আটজন বিশ্রামে। দেখা যাক, তিন নির্ভরযোগ্য পারফরমারকে তেঁতে রাখার এ চেষ্টা কতটা সফল হয়। ৪৮ ঘণ্টা পর শেষ ও সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে মুশফিক, সৌম্য ও মোস্তাফিজের কে কেমন করেন!
এআরবি/এনইউ/জেআইএম