উত্তর কোরিয়ার পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের ৮ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার অর্থ পিয়ং ইয়ংয়ের হ্যাকাররা হাতিয়ে নিয়েছিল বলে দাবি করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থা (এনএসএ)।
Advertisement
মঙ্গলবার মার্কিন এই জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার উপ-পরিচালক রিক লিজেট এ তথ্য জানিয়েছেন। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে হ্যাকাররা ফেডারেল ব্যাংক অব নিউইয়র্কে বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট থেকে ৯৫ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরির চেষ্টা করলেও ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার লুট করতে সক্ষম হয় তারা। পরে কিছু অর্থ উদ্ধারও হয়েছে।
অর্থ লুটের ওই ঘটনার পর বেশ কিছু নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান উত্তর কোরিয়ার দিকে আঙ্গুল তোলে। তবে অনেক গবেষক এই অভিযোগের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেন। কিন্তু মঙ্গলবার মার্কিন এই গোয়েন্দা সংস্থার উপ পরিচালক বাংলাদেশ ব্যাংকের হ্যাকিংয়ের জন্য উত্তর কোরিয়াকে দায়ী করেন।
অ্যাসপেন ইনস্টিটিউটের এক গোল টেবিল বৈঠকে অংশ নিয়ে রিক লিজেট বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক হ্যাকের সঙ্গে ২০১৪ সালে সনি পিকচার্স হ্যাকের যোগসূত্র রয়েছে বলে বেসরকারি খাতের গবেষকরা তথ্য পেয়েছেন।
Advertisement
উল্লেখ্য, উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উনকে হত্যা করা হয়েছে; এমন একটি কাহিনী নিয়ে নির্মিত সনি পিকচার্সের একটি ছবি ২০১৪ সালের ২৫ ডিসেম্বর মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই সনি পিকচার্সে সাইবার হামলা হয়। সনি পিকচার্সে ওই হামলার জন্য পিয়ং ইয়ংকে যুক্তরাষ্ট্র দায়ী করলেও উত্তর কোরিয়া তা বরাবরই নাকচ করে দিয়ে আসছে।
লিজেট বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক ও সনি পিকচার্সে সাইবার হামলার যদি যোগসূত্র থাকে; তাহলে এর অর্থ হচ্ছে একটি রাষ্ট্র ব্যাংক ডাকাতি করছে। এটি একটি অনেক বড় বিষয়।
গোল টেবিল বৈঠকের সঞ্চালক ও এনএসএ’র সাবেক সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল জন কার্লিন সঙ্গে সঙ্গে প্রশ্ন করেন, আপনি কি মনে করেন যে, একটি রাষ্ট্র ব্যাংক ডাকাতি করছে? লিজেট বলেন, হ্যাঁ, আমি মনে করি।
গত বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকে রাখা বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের ৮ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার চুরি করে হ্যাকাররা। চুরি যাওয়া ৮১ মিলিয়ন ডলারের কিছু অর্থ ফিলিপাইনের অারসিবিসি ব্যাংকের কয়েকটি অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করে হ্যাকাররা।
Advertisement
এ নিয়ে দীর্ঘ তদন্তের পর ম্যানিলার ব্লু রিবন কমিটি জানায়, ফিলিপাইনের আরসিবিসি ব্যাংকের জুপিটার স্ট্রিটের শাখা থেকে ওই ৮ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার ব্যাংকটির চারটি অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করা হয়। পরে এই অর্থ ক্যাসিনোতে ব্যবহার করা হয়।
সূত্র : ফরেইন পলিসি।
এসআইএস/পিআর