বিশেষ প্রতিবেদন

বাংলাদেশে নারীর অগ্রগতি আজ বিশ্বে রোল মডেল

গত দুই দশকের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও সামাজিক উন্নয়নের যেকোনো সূচকের বিচারে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব অগ্রগতি হয়েছে। বিশ্বে বাংলাদেশ আজ ঈর্ষার জায়গা দখল করে নিয়েছে। সবক্ষেত্রেই আমরা আজ বিশ্বকে চ্যালেঞ্জ জানাতে পারি। এ দেশের নারীরাও পিছিয়ে নেই। তাদের অগ্রগতি আজ বিশ্বে ‘রোল মডেলে’ পরিণত হয়েছে।নারীকে আরো এগিয়ে যেতে হবে। সবার আগে তাদের মানুষ হিসেবে বিবেচনা করতে হবে। নারী যে মানুষ, তা নারীকেও বুঝতে হবে- ‘নারী দিবস’ উপলক্ষে জাগো নিউজকে দেয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন দশম সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এমপি। তিনি আরো বলেন, নারী-পুরুষ প্রতিদ্বন্দ্বী নয়, একে অপরকে পরিপূরক ভাবলেই মানুষে মানুষে সমতা আসবে।ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী ১৯৬৬ সালের ৬ অক্টোবর ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন।বর্তমান দশম সংসদের স্পিকার হিসেবে ২০১৪ সালের ২৯ জানুয়ারি শপথগ্রহণ করেন। তিনি রংপুর-৬ আসন থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য। বিগত নবম সংসদেরও স্পিকার হিসেবে ২০১৩ সালের ৩০ এপ্রিল শপথগ্রহণ করেন। ৪৬ বছর বয়সে সর্বকনিষ্ঠ স্পিকার হিসেবে সাবেক স্পিকার ও বর্তমান রাষ্ট্রপতি অ্যাডভোকেট আবদুল হামিদের স্থলাভিষিক্ত হন শিরীন শারমিন চৌধুরী। এর আগে তিনি মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য এবং পরবর্তীতে আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক হন।বিশ্ব নারী দিবস উপলক্ষে ‘জাগো নিউজ’র মুখোমুখি হন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী। তার সাক্ষাৎকারটি নিচে পাঠকদের জন্য উপস্থাপন করা হলো- জাগো নিউজ: সাড়ে চার দশকের বাংলাদেশ। এগিয়েছে বহু দূর। নারীর অগ্রগতি কীভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন?  শিরীন শারমিন চৌধুরী: গত দুই দশকের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও সামাজিক উন্নয়নের যেকোনো সূচকের বিচারে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব অগ্রগতি হয়েছে। বিশ্বে বাংলাদেশ আজ ঈর্ষার জায়গা দখল করে নিয়েছে। সবক্ষেত্রেই আমরা আজ বিশ্বকে চ্যালেঞ্জ জানাতে পারি। এ দেশের নারীরাও পিছিয়ে নেই। তাদের অগ্রগতি আজ বিশ্বে ‘রোল মডেলে’ পরিণত হয়েছে।জাগো নিউজ: কোন সূচকের ভিত্তিতে এমনটি মনে করছেন?শিরীন শারমিন চৌধুরী: আমরা এখন অধিক সচেতন। নারী সমাজের অগ্রগতি নিয়ে কথা বলতে হলে সবার আগে বলতে হবে, বাংলাদেশের নারীদের অধিকারবোধ নিয়ে মানসিকতার দ্রুত পরিবর্তন ঘটছে। আজ থেকে এক যুগ আগেও নারী তার অধিকার নিয়ে এত সচেতন ছিলেন না। নারীরা আজ রাজনৈতিকভাবেও সচেতন। বাংলাদেশের সংসদে বর্তমানে প্রধানমন্ত্রী, স্পিকার এবং প্রধান বিরোধীদলীয় নেতাও নারী। এটি গোটা বিশ্বের নারী সমাজের জন্য অহঙ্কার।জাগো নিউজ: প্রতিনিধিত্বশীল এসব রাজনীতিবিদ দিয়ে কি গোটা নারী সমাজের রাজনীতি মূল্যায়ন করা যায়?শিরীন শারমিন চৌধুরী: এই প্রতিনিধিত্বকে খাটো করে দেখার অবকাশ নেই। নারী যোগ্য হলে পুরুষরা মূল্যায়ন করছে, ভোট দিচ্ছে। প্রায় তিন দশক ধরে সংসদে নারী-ই প্রধান থাকছেন। তৃণমূলের নারীরাও এখন রাজনৈতিক সচেতন। দলগুলোতেও নারী প্রতিনিধি বাড়ছে। স্থানীয় সরকার নির্বাচনেও উল্লেখযোগ্য প্রতিনিধি এসেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নারীর ক্ষমতায়নে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি পরপর ক্ষমতায় এসেছেন বলেই সমাজের সবক্ষেত্রে নারী অধিকার প্রতিষ্ঠা পাচ্ছে। নারীরা এখন বিমান চালায়, ট্রেন চালায়। তারা এখন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি।  জাগো নিউজ: নারীর এগিয়ে যাওয়ার কথা বলছেন। পিছিয়ে পড়ার কাহিনিও আছে। তারা এখনও নির্যাতনের শিকার হন শারীরিকভাবে, মানসিকভাবে?শিরীন শারমিন চৌধুরী: নারীর প্রতি সহিংসতা সত্যিই দুঃখজনক। এই সময়েও খাদিজাকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে জখম করা হয়। নারীকে তার আপনজনের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে টিকে থাকতে হয়। নারীর প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি বদলানো না গেলে, পিছিয়ে পড়া নারীর অধিকারে সমতা আনা সম্ভব হবে না।জাগো নিউজ: এ বিষয়ে আপনার পরামর্শ কি?শিরীন শারমিন চৌধুরী: নারীকে সবার আগে মানুষ হিসেবে বিবেচনা করতে হবে। নারী যে মানুষ, তা নারীকেও বুঝতে হবে। নারীর অগ্রগতির জন্য সবার আগে পরিবারের সদস্যদের মধ্যে মানসিকতার পরিবর্তন আনতে হবে। কারণ নারীকে প্রথমত পরিবার থেকেই আলাদা করে দেখা হয়। উন্নয়ন আর ক্ষমতায়নের প্রশ্নে নারীকে সুসংহত চিন্তা করতে হবে। নারী-পুরুষ প্রতিদ্বন্দ্বী নয়, একে অপরকে পরিপূরক ভাবলেই মানুষে মানুষে সমতা আসবে।এএসএস/এমএআর/এমএস

Advertisement