রাজধানীর হাজারীবাগ থেকে ট্যানারি স্থানান্তর না করার দায়ে ১৫৪ ট্যানারি মালিককে ৩০ কোটি ৮৫ লাখ টাকা জরিমানা সরকারি কোষাগারে জমা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।বৃহস্পতিবার বিচারপতি আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি আশীষ রঞ্জন দাসের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে গত বছরের ১৮ জুলাই সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ এক অন্তর্বর্তীকালীন আদেশে বলেন, ১৫৪ ট্যানারি মালিকের প্রত্যেককে ক্ষতিপূরণ বাবদ প্রতিদিন ১০ হাজার টাকা করে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দিতে হবে।প্রথমে হাইকোর্টের আদেশে বলা হয়েছিল, ১৫৪ ট্যানারি মালিককে প্রতিদিন ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা দিতে হবে। কিন্তু পরে কমিয়ে ১০ হাজার টাকা করা হয়।২০০১ সালে হাইকোর্ট এক রায়ে হাজারীবাগ থেকে সাভারে ট্যানারি শিল্প সরিয়ে নেয়ার নির্দেশ দেন। এরপর ২০০৯ সালের ২৩ জুন আরেক আদেশে ট্যানারি সরানোর জন্য ২০১০ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময় বেঁধে দেয়া হয়। পরবর্তীকালে সরকারপক্ষের আবেদনে ওই সময়সীমা কয়েক দফা বাড়ানোর পরও ট্যানারি স্থানান্তরে হাইকোর্টের আদেশ বাস্তবায়ন হয়নি।অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ জানান, পরিবেশের ক্ষতিসাধনকারী ১৫৪ ট্যানারি হাজারীবাগ থেকে স্থানান্তর না করার ফলে আদালত থেকে মালিকদের জরিমানা বকেয়া বাবদ ৩০ কোটি ৮৫ লাখ টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে ট্যানারি মালিকরা উক্ত টাকা জমা দেয়ার জন্য বলেছেন আদালত। এর আগে গত ২৫ জানুয়ারি সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও হাজারীবাগের ট্যানারি মালিকদের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণের অর্থ আদায়ে ব্যর্থতার বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে শিল্প সচিব মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়াকে তলব করেন হাইকোর্ট।হাজারীবাগ থেকে ট্যানারি সরিয়ে সাভারের হেমায়েতপুরে নিতে আদালতের নির্দেশ বাস্তবায়ন না করায় গত ১৮ জুলাই ক্ষতিপূরণ হিসেবে ১০ হাজার টাকা করে ধার্য করেছিলেন আপিল বিভাগ। শিল্প সচিবকে এই অর্থ আদায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করতে বলা হয়েছিল।শিল্প সচিব গত ১০ জানুয়ারি এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন দাখিল করে আদালতে। যেখানে দেখা যায় গত আগস্ট মাসে ১৫০টি কোম্পানি ১০ হাজার টাকা করে দিয়েছে। কিন্তু সেপ্টেম্বর মাসে চার ও অক্টোবর মাসে তিনটি কোম্পানি তাদের জরিমানার টাকা জমা দিয়েছে।এর আগে গত ১৬ জুন বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি এ কে এম সাহিদুল হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ ট্যানারি মালিকদের পরিবেশের ক্ষতিপূরণ হিসেবে প্রতিদিন ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে প্রদানের নির্দেশ দেন।পরে বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশন ও বাংলাদেশ ফিনিশড লেদার, লেদার গুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে আবেদন করে। সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৩ জুন হাইকোর্টের আদেশ ১৭ জুলাই পর্যন্ত স্থগিত করে শুনানির জন্য আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন অবকাশকালীন চেম্বার বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।এফএইচ/এনএফ/এমআরএম/আরআইপি
Advertisement