সমাজে অশান্তি সৃষ্টির মূল কারণ হলো ফেতনা ছড়ানো। এ কারনে কুরআনে ফেতনা তথা অশান্তি সৃষ্টির অপরাধকে হত্যার চেয়েও জঘন্য হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। আর পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ফেতনা হলো আল্লাহ তাআলার অস্তিত্বকে অস্বীকার করা।ইসলাম বিদ্বেষীরা সব সময় ইসলাম, কুরআন, রিসালাত ও মুসলমানদের ব্যাপারে ফেতনা ও অপবাদ ছড়ানোয় ব্যস্ত। আল্লাহর বিধানের বিরোধিতা করাই ইসলামের দুশমনদের কাজ। এ কারণেই আল্লাহ তা্অলা ফেতনা ছড়ানোর মাধ্যমে সমাজে অশান্তি সৃষ্টিকারীদেরকে হত্যাকারীর চেয়ে জঘন্য অপরাধী হিসেবে নির্ধারণ করেছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন-আয়াতের অনুবাদ-আয়াত পরিচিতি ও নাজিলের কারণসুরা বাকারার ২১৭ নং আয়াতে আল্লাহ তাআলা হারাম মাসে যুদ্ধ সংক্রান্ত বিষয়ে বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে করা প্রশ্নের জবাব প্রদান করেন। সব ধরনের অশান্তি সৃষ্টি করা হত্যার চেয়ে জঘন্য অপরাধের বিষয়টিও এ আয়াতে তুলে ধরা হয়েছে।রজব, জিলক্বদ, জিলহজ্জ ও মুহররম মাসে যে কোনো ধরনের রক্তপাত ও যুদ্ধ করা হারাম। ইসলামের আগমনের আগে জাহেলিয়াতের সময়ও এমনটি মনে করা হতো। ইসলামের আগমনের পরে অবিশ্বাসীরা বিশ্বনবিকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করে। তখন প্রিয়নবি হারাম মাসে যুদ্ধ বিগ্রহ ও রাক্তপাত সম্পর্কে কুরআনুল কারিমের এ আয়াতটি তুলে ধরেন।বিশ্বনবির জামানয় এক মুসলিম সৈন্য দলের হাতে একজন কাফের নিহত হয়। মুসলিম এ দলটির অবগত ছিল না যে, রজব মাস শুরু হয়ে গেছে। ওই সময় কাফেররা বলতে লাগলো, মুসলমানরা রজব মাসের সম্মানের দিকেও লক্ষ্য করল না। তারা হত্যা সংঘটিত করে ফেলেছে। তখনই এ আয়াত নাজিল হয় এবং বলা হয়-অবশ্যই হারাম মাসে যুদ্ধ করা মহাপাপ। কিন্তু যারা হারাম মাসের দোহাই দেয়, তারা নিজেদের কর্মের প্রতি দৃষ্টি দেয় না কেন? এরা তো রক্তপাত ঘটানোর চেয়ে বড় অপরাধী। তারা আল্লাহর পথ ও মসজিদে হারাম থেকে লোকদেরকে বাধা দেয়। সেখান থেকে মুসলমানদেরকে বের হতে বাধ্য করে। তাছাড়া শিরক এবং কুফরি তো হত্যার চেযে জঘন্য অপরাধ।আয়াতে আরও বলা হয়েছে যে, তারা যখন নিজেদের অপকর্ম, চক্রান্ত এবং তোমাদেরকে তোমাদের দ্বীন থেকে ফিরানোর চক্রান্তে লিপ্ত হয়; তখন তোমরা কেন হারাম মাসে তাদের সঙ্গে যদ্ধ করা থেকে বিরত থাকবে?অতঃপর আয়াতে বলা হয়েছে, ‘যারা মুরতাদ হয়ে যাবে।’ অর্থাৎ দ্বীন ত্যাগ করবে, তারা তাওবা করে ফিরে না আসলে, ইসলামের বিধান অনুযায়ী দুনিয়ায় তাদের শাস্তি হলো হত্যা। হাদিসে এসেছে, ‘যে তার দ্বীন পরিবর্তন করে ফেলেছে, তাকে হত্যা করে দাও।’ (বুখারি)অতঃপর আয়াতের শেষে মানুষের পরকালের শাস্তির কথা উল্লেখ করে বলা হয়েছে, ‘যারা সত্যকে প্রত্যাখ্যান করে মৃত্যু বরণ করবে, তাদের দুনিয়া ও পরকালের সব কর্ম নিষ্ফল হয়ে যাবে। পরকালে তারা হবে দোজখবাসী। সেখানেই তারা চিরকাল অবস্থান করবে। (নাউজুবিল্লাহ)পড়ুন- সুরা বাকারার ২১৬ নং আয়াতপরিষেশে...আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে কুরআনের সব বিধান সঠিক উপায়ে যথাযথভাবে পালন করার তাওফিক দান করুন। দুনিয়া শিরক ও কুফরির মতো অশান্তি সৃষ্টি করা থেকে বিরত থাকার তাওফিক দান করুন। সব ধরনের ফেতনাকে মুক্ত থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন।এমএমএস/এমএস
Advertisement