নব্বই বছর আগের কথা। লাহোরের দরবেশ লঙ্কর শাহ্- এর পক্ষ থেকে আদিষ্ট হয়ে এক পোয়া চাল আর ডাল দিয়ে শুরু করেছিলেন ওরশ মোবারক। এখন হাজার হাজার মানুষের আয়োজন। সুফি-সাধক আলেপ চান শাহ ওরফে আলফু দেওয়ান। উপমহাদেশে শুদ্ধ সুফিবাদ চর্চার অন্যতম পুরধা এই সাধক বাউলকূলের শিরোমণি। বহু ভাষার সমন্বয় ঘটিয়ে এ অঞ্চলে আধ্যাত্মিক গানে তার জুড়ি নেই। আত্মার সঙ্গে পরমাত্মার মিলন ঘটাতে সুর-সাধনা যে সেতু হতে পারে, তারই নজির মেলে আলফু দেওয়ানের গানে।দুই বাংলায় পালা গানের (কবি গানের ভিন্ন রূপ) স্রষ্টাও বলা হয় তাঁকে। প্রায় শত বছর আগে রচিত তাঁর অসংখ্য আধ্যাত্মিক-মুর্শিদি গান নিয়েই বাংলায় চলছে শুদ্ধ সঙ্গীত সাধন। রাজধানীর অদূরে কেরানীগঞ্জের বামনশুরে বসে সাধন-ভজন করলেও এই সঙ্গীতজ্ঞের খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে গোটা বাংলায়। বংশ পরম্পরায় আধ্যাত্মিক গানের মধ্য দিয়ে সুফিবাদের চর্চা অব্যাহত রয়েছে এখনও। তারই ধারাবাহিকতায় প্রতি বছর ওরশ মোবারক অনুষ্ঠিত হয় দেওয়ান বাড়িতে।বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হচ্ছে দুই দিনব্যাপী ওরশ মোবারক। মালেক দেওয়ান স্মৃতি সংসদের আয়োজনে আলোচনা ছাড়াও এতে থাকবে দেশের বিখ্যাত বাউলদের পরিবেশনায় আধ্যাত্মিক গানের আসর। দেশীয় যন্ত্র আর মন মাতানো সুরে মিলবে ভক্তকূলের সাধন-ভজন।আলফু দেওয়ানের দৌহিত্র মাজারের খাদেম বাউল সাধক আরিফ দেওয়ান। তিনি বলেন, ‘এই উপমহাদেশে দেহতত্ব বা ভাববাদী আধ্যাত্মিক গানের অন্যতম রূপকার আলফু দেওয়ান। বাণী আর সুরের ধারায় শত বছর ধরে বাউল জগতে এই সাধক বিশেষভাবে সমাদৃত। তার বাণী এবং মর্মকথা মানুষের মাঝে বিলিয়ে দিতেই মূলত প্রতি বছর এ আয়োজনের ক্ষুদ্র প্রয়াস।এএসএস/ওআর/আরআইপি
Advertisement