জাতীয়

পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির সম্ভাবনা নিয়ে কিছু বলেননি ইউনূস

ক্ষমতাসীনদের কথায় পদ্মা সেতু প্রকল্পে বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়ন আটকানোর ‘ষড়যন্ত্রকারী’ হিসেবে মুহাম্মদ ইউনূসের নাম উঠে আসার প্রতিক্রিয়ায় ইউনূস সেন্টার বলছে, পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির সম্ভাবনা নিয়ে কিছু বলেননি ইউনূস।বৃহস্পতিবার পাঠানো প্রতিবাদপত্রে বলা হয়, কয়েক দিন ধরে প্রধানমন্ত্রী, তার ছেলে প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা, কয়েকজন মন্ত্রী ও বেশ কয়েকজন সংসদ সদস্যসহ দেশের শীর্ষ আইনপ্রণেতারা ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে, সংসদের ফ্লোরে দাঁড়িয়ে, সংবাদ সম্মেলন করে এবং বিভিন্ন নীতিনির্ধারণী বৈঠকে পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির মিথ্যা অভিযোগ সৃষ্টির নেপথ্যে থাকার জন্য প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসকে কঠোরভাবে অভিযুক্ত করে কটু ভাষায় বক্তৃতা-বিবৃতি দিয়ে আসছেন। প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির সম্ভাবনা বিষয়ে প্রকাশ্যে বা ব্যক্তিগতভাবে কোনো বিবৃতি দেননি।ইউনূস সেন্টার জানায়, প্রফেসর ইউনূস ২০১১ সাল থেকে বহুবার এই মর্মে বলে এসেছেন যে তিনি বরাবরই বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষের স্বপ্ন পদ্মা সেতু প্রকল্পের একজন সমর্থক এবং এ স্বপ্নের বাস্তবায়নে তার বাধা হয়ে দাঁড়ানোর কোনো প্রশ্নই আসে না।প্রতিবাদপত্রে আরও বলা হয়, পদ্মা সেতু-সংক্রান্ত অভিযোগ ছাড়াও কয়েকটি পত্রিকার সূত্র উল্লেখ না করে এই মর্মে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড প্রফেসর ইউনূসের ওপর ৬৯ লাখ টাকা জরিমানা ধার্য করেছে। এই তথ্যও সত্য নয়। প্রফেসর ইউনূসের কাছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কোনো অনাদায়ী অর্থের দাবি নেই। প্রফেসর ইউনূস তার সব কর পুরোপুরি ও সময়মতো পরিশোধ করে থাকেন। তার আয় ও কর-সংক্রান্ত সব তথ্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কাছে রয়েছে। তিনি তার আইনগত অধিকারবলে সাম্প্রতিক কিছু কর দাবি সম্পর্কে, যা তার কাছে অন্যায্য মনে হয়েছে, আদালতের শরণাপন্ন হয়েছেন। বিষয়টি এখনও আদালতে বিচারাধীন এবং এ বিষয়ে আদালতের যে কোনো সিদ্ধান্ত তিনি মেনে নেবেন।প্রতিবাদপত্রে বলা হয়, আকস্মিকভাবে এবার আরেকটি অভিযোগ তোলা হয়েছে গ্রামীণ ট্রাস্ট কর্তৃক বিদেশে অর্থ প্রেরণ নিয়ে। গ্রামীণ ট্রাস্ট প্রতিষ্ঠা করা হয় অন্যান্য দেশে ক্ষুদ্রঋণ পদ্ধতি রেপ্লিকেশনে সহায়তা করার উদ্দেশ্যে। পত্রিকার প্রতিবেদন অনুযায়ী, গ্রামীণ ট্রাস্ট ১৯৯৬-৯৭ ও ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ইউএসএআইডি ও নেদারল্যান্ডসসহ কয়েকটি সাহায্য সংস্থা থেকে ডোনার ফান্ড বাবদপ্রাপ্ত ৪৭ কোটি ৩৫ লাখ টাকা সমপরিমাণ অর্থ ৩৮টি দেশে বিভিন্ন ক্ষুদ্রঋণ প্রকল্পে সহায়তা বাবদ পাঠিয়েছে। প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, এই স্থানান্তরের বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমোদন-সংক্রান্ত কোনো তথ্য আয়কর ফাইলে নেই। এতে এ ধারণার সৃষ্টি হতে পারে যে, গ্রামীণ ট্রাস্ট বাংলাদেশকে দেয়া সহায়তার অর্থ বিদেশে স্থানান্তর করছে। বিষয়টি তা নয়। দাতারা গ্রামীণ ট্রাস্টকে এই অর্থ শুধু ওই সব দেশে ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচি গড়ে তোলার উদ্দেশ্যেই পাঠিয়েছিলেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা বিভাগ এবং সংশ্লিষ্ট অন্য সব কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ওই দেশগুলোর ওই সব প্রকল্পে অর্থ প্রেরণের সব আইনগত অনুমোদন গ্রহণ করা হয়েছে।এমআরএম/পিআর

Advertisement