সবার জন্য ওষুধের সমান সুযোগ না থাকাকে বিশ্ব শান্তির জন্য বড় ঘাতক বলে অভিহিত করেছেন বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। তার ভাষায় ওষুধের দুস্প্রাপ্যতা বিশ্বব্যাপী ‘ভিলেন অব পিস’।সোমবার রাজধানীর গুলশানের লেকশোর হোটেলে ‘সব পর্যায়ে ওষুধের সহজপ্রাপ্যতা বিষয়ে’ যুক্তরাষ্ট্রের ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স দ্য নিউ স্কুলের অধ্যাপক সাকিকো ফুকুদা পার বক্তব্য প্রদান করেন। তার বক্তব্যের সারাংশ টানতে গিয়ে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য এ মন্তব্য করেন।বক্তব্য প্রদান অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। এতে উপস্থিত ছিলেন- সিপিডির চেয়ারম্যান ড. রেহমান সোবহান, নির্বাহী পরিচালক ড. মোস্তাফিজুর রহমান। অনুষ্ঠানে মুক্ত আলোচনায় দেশের বিশিষ্টজনরা বক্তব্য রাখেন।অধ্যাপক সাকিকো বলেন, সবার জন্য ওষুধ প্রাপ্তির সুযোগ (একসেস টু মেডিসিন) শুধু উন্নয়নশীল দেশেই নয়, সারা বিশ্বেই সমস্যা। ওষুধের উচ্চমূল্যের কারণেই তা সবার জন্য সহজলভ্য হয় না। অনেক সময় উৎপাদন খরচও অনেক বেশি পড়ে।তিনি বলেন, এই সমস্যা বাণিজ্যের সঙ্গে সম্পর্কিত নয়। এটা বিনিয়োগের সঙ্গে সম্পৃক্ত। তবে এ বিনিয়োগ সমস্যা সমাধানযোগ্য। এর জন্য দ্বিপাক্ষিক, বহুপাক্ষিক ও আঞ্চলিক মেগা পলিসি গ্রহণ করতে হবে।সব স্তরে ওষুধের সহজলভ্যতা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশকে গবেষক, উৎপাদক ও ভোক্তাসহ সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের স্বার্থের মধ্যে ভারসাম্য আনতে হবে জানিয়ে সাকিকো বলেন, বাংলাদেশে একটি ব্যবসায়িক কাঠামো দাঁড় করানো যেতে পারে, যা হবে জাতীয় স্বাস্থ্যনীতির সঙ্গে সংগতিপূর্ণ।অনুষ্ঠানে ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ওষুধের দুষ্প্রাপ্যতা শান্তি প্রতিষ্ঠায় বড় ঘাতক। বাংলাদেশে ওষুধের দাম এখনও অনেক বেশি। এজন্য সরকারকে একটি নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে। যাতে ব্যবসায়ীরা মাত্রারিক্ত ব্যবসা করতে না পারে। আর ভোক্তারাও যেন মানসম্মত ওষুধ সুলভ মূল্যে পেতে পারে। এজন্য তিনি ওষুধের উপর গবেষণায় বিনিয়োগ বাড়ানোর আহ্বান জানান।অনুষ্ঠানের সমাপনী বক্তব্যে সিপিডির চেয়ারম্যান ড. রেহমান সোবহান বলেন, টেকশই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হলে স্বাস্থ্যকে প্রাধান্য দিতে হবে। বিশ্বায়নের এই যুগে সবার জন্য স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা অনেক বড় চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় গবেষণায় জোর দেয়ার বিকল্প নেই। এক্ষেত্রে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। উন্নত বিশ্বে বেসরকারিভাবেই এগুলো হয়ে থাকে। তবে উন্নয়নশীল দেশে সরকারি-বেসরকারি ও দ্বিপাক্ষিক-আঞ্চলিক উদ্যোগে বিনিয়োগ বাড়ানো যেতে পারে।এমএ/এনএফ/এমএস
Advertisement