সকাল সাড়ে ৯টায় ছিল ভারতীয় দলের ক্রিকেটারদের অনুশীলন। বিরাট কোহলিসহ ব্যাটসম্যানরা মাঠেই প্রবেশ করলেন না। মাঠের পাশে চলে গেলেন নেটে। বোলাররা কিছুক্ষণ মাঠে বোলিং অনুশীলন করেছেন। প্র্যাকটিস উইকেটে দৌড়ে এসে বোলিং প্র্যাকটিস করেছেন। তাও মাত্র কিছুক্ষণ। এরপর সবাই চলে গেলেন নেটে। তখনও সেন্টার উইকেটের কাজ শুরু করেনি মাঠকর্মীরা; ব্যস্ত আউটফিল্ড নিয়ে। সাড়ে ১০টার পর সেন্টার উইকেট নিয়ে ব্যস্ত হলেন কিউরেটর এবং তার কর্মীরা।নেট সেশনে বিরাট কোহলিরা ব্যাটিং প্র্যাকটিস করে গেলেন নেট বোলারদের সামনে। এমনকি অশ্বিনকেও দেখা গেলো খুব মনযোগ দিয়ে ব্যাটিং অনুশীলন করতে। এরই ফাঁকে সংবাদ সম্মেলন করে গেলেন ভারতীয় অধিনায়ক বিরাট কোহলি। ভারতীয় দলের অনুশীলন পর্বও শেষ হয়ে গেলো সাড়ে ১১টার দিকে। তার কিছুক্ষণ পরই মাঠে এসে প্রবেশ করলেন বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটাররা। মুশফিক, সাকিব, তামিম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ থেকে শুরু করে প্রায় প্রত্যেক ক্রিকেটারেরই আগ্রহের কেন্দ্রে উইকেট। সবাই এসে একবার হলেও ঢুঁ মেরে দেখার চেষ্টা করলেন উইকেটটা কেমন; কিন্তু ততক্ষণে উইকেটকে ঢেকে দেয়া হয়েছে গোলাপি রংয়ের ম্যাট দিয়ে। ঢেকে দেয়ার আগেই উইকেটটা ভালো করে পরখ করতে পেরেছেন টেস্ট অধিনায়ক মুশফিকুর রহীমসহ দু’তিনজন।শুরুতেই দেখা গেলো, যে উইকেটে খেলা হবে তাতে কিছুটা ঘাস রয়েছে। হালকা সবুজ। তবে কিউরেটর এবং তার কর্মীরা কাজ করার পর সেই সবুজাব ভাব উধাও। দূর থেকেই বোঝা যাচ্ছিল, ফ্ল্যাট একেবারে ন্যাড়া উইকেট। নেটে যাওয়ার মুখে মুমিনুল আর সাকিব আল হাসান শুধু বললেন, উইকেট ঢেকে রেখেছে। কিছুই দেখিনি। হয়তো এড়িয়ে যাওয়ার জন্যই তারা এমনটা বলেছেন। তবে পেসার কামরুল ইসলাম রাব্বি বললেন, ‘ভারতে যেমন উইকেট হয় সাধারণত, তেমনই মনে হলো। স্লো উইকেট হবে। স্পিনাররাই সম্ভবত সবচেয়ে বেশি সুবিধা পাবে। স্পিনারদের বল টার্ন ধরবে।’তাসকিন আর মোসাদ্দেক এক সাথে যাচ্ছিলেন নেটে প্র্যাকটিস করতে। তারাও উইকেট নিয়ে খুব একটা ধারণা দিতে পারলো না। তাসকিন বললেন, ‘উইকেট দেখে তো মনে হচ্ছে স্পিনারদের জন্য। আমাদের (পেসারদের) জন্য কতটুকু হবে এখনও বোঝা যাচ্ছে না।’ মেসাদ্দেক বলললেন, ‘প্রথমবার ভারত এলাম। এখনও অনেক কিছু শেখার বাকি আছে।’বাংলাদেশ দলের অনুশীলন শুরু হওয়ার আগেই সংবাদ সম্মেলনে এলেন অধিনায়ক মুশফিকুর রহীম। তার কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, উইকেট কেমন দেখলেন? রাব্বির মতোই প্রায় জবাব দিলেন তিনি। তবে বাংলাদেশ দলের অধিনায়কের মতে, স্পিনারদের জন্য টার্নিং উইকেট হলেও, ব্যাটসম্যানদের ব্যাটে রান আসবে এই উইকেটে। পেসাররা হয়তো শুরুতে ভালো করতে পারে।মুশফিকুর রহীম বলেন, ‘উইকেট সাধারণত ভারতের যেমন হয়, অনেক টার্নিং- সে রকমই হবে হয়তো। তবে উইকেটটা অনেক কঠিন এবং আমার দেখে মনে হয়েছে, এটা ব্যাটিংয়ের জন্য অনেক ভালো একটা উইকেট। তবে পেস বোলাররাও হয়তো শুরুতে বেশ ভারো সুবিধা পেতে পারে। আর উইকেট যেহেতু অনেক শক্ত, আশা করি স্পিনাররাও হয়তো একটু বাউন্স পাবে।’ বাংলাদেশ দলের অধিনায়কের মতে, দু’দিন কিংবা তিনদিন পার হওয়ার পর উইকেটে টার্ন ধরবে। তখন স্পিনাররা ভালো করবে। মুশফিকের বক্তব্য, ‘দুদিন বা তিন দিনের পর থেকে হয়তো অনেক টার্ন করতে পারে উইকেটে। স্পিনাররা অনেক ভালো করবে। আমার মনে হয়, ক্রিকেটের জন্য আদর্শ উইকেট। তবে সবচেয়ে বড় কথা হলো, উইকেট যেমনই হোক সেখানে আসলে আমরা কিভাবে খেলি এবং কতটুকু প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলতে পারি সেটাই হবে বড় বিষয়।’তবে পরিসংখ্যান ঘেঁটে দেখা যাচ্ছে, সর্বশেষ এই মাঠে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষ টেস্ট খেলেছিল ভারত, ২০১৩ সালে। ওই টেস্টে অস্ট্রেলিয়াকে ২৩৭ রানে অলআউট করে দিয়ে ভারত করেছিল ৫০৩ রান। যা এই মাঠের সর্বোচ্চ। চেতেশ্বর পুজারা করেছিলেন ডাবল সেঞ্চুরি। ২০৪ রান এসেছিল তার ব্যাট থেকে। ১৬৭ করেছিলেন মুরালি বিজয়। দ্বিতীয় ইনিংসে অশ্বিন-জাদেজা তোপে ১৩১ রানে অলআউট অস্ট্রেলিয়া। হেরেছিল তারা ইনিংসও ১৩৫ রানের বিশাল ব্যবধানে। দুই ইনিংসে অশ্বিন আর জাদেজা মিলে নিয়েছিলেন ১২ উইকেট। এই মাঠে ভারতের সর্বনিম্ন রান ৪৩৮। আইএইচএস/এনইউ/জেআইএম
Advertisement