গিরীশ গৈরিকের কাব্যগ্রন্থ ‘মা সিরিজ’ অমর একুশে বইমেলায় প্রকাশ হতে যাচ্ছে। বইটির ‘অশ্রুকাণ্ড’ থেকে তিনটি কবিতা পাঠকের সামনে তুলে ধরা হলো—হেমন্তের সকালে ঘুম থেকে জেগে দেখি—মাকড়সার জালে ধরা পড়েছে ভোরের শিশিরবিন্দু,এ যেন আমার মায়ের অশ্রুবিন্দু—মাকড়সা জালে।প্রতিটি অশ্রুবিন্দুর মাঝে লুকিয়ে আছে—এক একটি সূর্যআমি এতগুলো সূর্য—একসঙ্গে কখনো দেখিনি।অথচ হেমন্তের অশ্রুবিন্দু কেন যে বোঝে না?যাকে সে বুকে ধারণ করে—সেই তাকে শুষে নেবে।হায় সূর্য—যে তোমাকে বুকে ধারণ করে।তুমি তাকেই শুষে নাও।****সূর্য নিবে গেলে—পৃথিবীর সকলেই অন্ধ হয়ে যাবেতাই সূর্যকে বলা হয় বোধের তৃতীয়চোখ।এরূপ বোধের তৃতীয়চোখ আমার মায়ের আছেতাই আমি অন্ধের সন্তান—নাম আমার অন্ধকার।কেউ কেউ আমাকে কবর বলেযদিও আমার মা সোহাগ করে নাম দিয়েছে মৃত্যু।আমি মারা গেলে অর্থাৎ মৃত্যু মারা গেলেপৃথিবীর সকলেই পাবে বোধের তৃতীয়চোখ।আর সূর্যের রঙ হবে অন্ধকার।****আমার মায়ের চোখে একটি রেলস্টেশন ঘুমিয়ে থাকেমা। চোখ খুলে যে দিকে তাকায়—রেলগাড়িগুলো সে দিকে ধাবিত হয়আবার সন্ধ্যা হলে পাখির মতো—মায়ের চক্ষুনীড়ে রেলগাড়িগুলো ফিরে আসে।মা যখন কাঁদে—তখন রেলগাড়িগুলো বন্যায় ডুবে যায়।গতবছর তো মা আমার বর্ষার আকাশ হলোআর রেলগাড়িগুলো অবিরত ডুবে যেতে লাগলঅথচ—আমি মায়ের একমাত্র হাবাগোবা রেলগাড়ি।এসইউ/জেআইএম
Advertisement