পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগনার মেয়ে। কাজ করেছেন সেখানকার নাটকে। অনেকদিন ধরে থিয়েটারের সঙ্গেও যুক্ত আছেন। শিখেছেন অভিনয়, নাচ। আছে গ্ল্যামার, মিষ্টি হাসি আর মায়াবী চাহনির অদ্ভূত গুণ। সম্প্রতি বাংলাদেশি চলচ্চিত্র নির্মাতা অনন্য মামুনের পরিচালনায় ‘বন্ধন’ ছবিতে শুটিং শুরু করেছেন তিনি। বড় পর্দায় এটাই তার প্রথম কাজ। অনেক স্বপ্ন নিয়ে শোবিজে যাত্রা শুরু করা মেয়েটি এখন দুই বাংলাতেই চিত্রনায়িকা হিসেবে প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। বলছি মৌমিতার কথা। বর্তমানে তিনি রয়েছেন বাংলাদেশেই। তার সঙ্গে কথা হলো সাম্প্রতিক ব্যস্ততা ও একান্ত নানা বিষয়ে। লিখেছেন লিমন আহমেদজাগো নিউজ : কেমন আছেন?মৌমিতা : খুব ভালো। টানা প্রায় পনেরো দিন নেপালে ছিলাম। সেখানে প্রচুর শীতের মধ্যে ‘বন্ধন’ ছবির শুটিং করেছি। এবার একটু বিশ্রাম নিচ্ছি। রয়েছি ঢাকাতেই। কিছু কাজ শেষ করে আগামী সপ্তাহে কলকাতায় ফিরে যাবো।জাগো নিউজ : বাংলাদেশি ছবিতে কাজ করা মানে এখানকার মানুষ, খাদ্যাভ্যাস, সংস্কৃতির সঙ্গে মেশা। কেমন লাগছে সবকিছু?মৌমিতা : এক কথায় অসাধারণ। কলকাতার সঙ্গে ঢাকার পার্থক্য খুবই কম। ভাষা, খাদ্যাভ্যাসও একইরকম প্রায়। কোনো সমস্যা হচ্ছে না। সবাই একটি টিম হয়ে ভালো ছবির জন্য কাজ করছি। এখানে অনেক হেল্পফুল সবাই।জাগো নিউজ : ‘বন্ধন’ ছবিতে কীভাবে যুক্ত হলেন?মৌমিতা : এই ছবির পরিচালক অনন্য মামুন ভাইকে আমি আগে থেকেই চিনতাম। উনার সাথে মিউজিক ভিডিওতে কাজ করেছি, সেগুলো এখনও প্রকাশ হয়নি। তারপর একদিন মামুন ভাই ‘বন্ধন’ ছবিতে কাজ করার জন্য আমাকে বললেন। গল্প শোনালেন। শুনে গল্পটা মনে ধরে যায়। ব্যাস, রাজি হয়ে গেলাম। জাগো নিউজ : ছবিতে আপনার চরিত্রটি কেমন?মৌমিতা : বেশ চমৎকার এবং গুরুত্বপূর্ণ। আমি একটা মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে। খুব মিষ্টি আর হাসিখুশি স্বভাবের একটা মেয়ে। মা ছাড়া আর কেউ নেই মেয়েটির। এরমধ্যে একটা কারণে সে অনেক রুক্ষ এবং ইন্ট্রোভার্ট হয়ে যায়। এই অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসার জন্য আমার বন্ধুরা অনেক সাহায্য করে। জাগো নিউজ : ছবিটিতে আপনার নায়ক কে?মৌমিতা : এখানে তিনটি জুটি দেখা যাবে। শিপন মিত্র-এমি, সাঞ্জু জন-স্পর্শিয়া এবং আমি ও চ্যানেল আই-ফেয়ার এন্ড লাভলী মেন হ্যান্ডসাম খ্যাত তন্ময়। ও খুব মিশুক আর মেধাবী। আমরা দুজনেই নতুন। চেষ্টা করছি ভালো কিছু করতে।জাগো নিউজ : ঢাকাই ছবিতে অনেক নায়িকা আছেন। এখানে প্রতিযোগিতাও অনেক বেশি। আর ইন্ডাস্ট্রিটাও আপনার জন্য নতুন। এখানে ছবি করাটা খুব বেশি চ্যালেঞ্জিং নয় কী?মৌমিতা : আমি এভাবে ভেবে দেখিনি কখনো। আমি প্রথমবারের মতো চলচ্চিত্রে অভিনয় করছি। ইন্ডাস্ট্রিও আমার কাছে নতুন। সেটা যেখানেরই হোক। আর এপার-ওপার দুই বাংলাতেই ভাষা ও জীবন যাপনটা একই প্রায়। আমার মনে হয় না কলকাতার বলে ঢাকার দর্শকরা আমাকে এড়িয়ে যাবেন। তাছাড়া আজকাল দুই বাংলার শিল্পীরাই একে অন্যের দেশে গিয়ে ছবি করছেন এবং ভালো করছেন। একটা সম্মিলিত উন্নতির যে চেষ্টা চলছে বাংলা সিনেমার, সেখানে আমিও শামিল হতে পারছি এটাই আনন্দের। সুযোগ হলে বাংলাদেশের ছবিতে নিয়মিত হবো।
Advertisement
জাগো নিউজ : এর আগে কলকাতায় শোবিজে যাত্রাটা কিভাবে? নাটক নাকি মডেলিং?মৌমিতা : আমি সিরিয়াল করেছি। তারও আগে মডেলিং করতাম একটা সময়। কিন্তু এখন আর করিনা। আমি থিয়েটারের সাথে যুক্ত আছি শৈশব থেকে। চেষ্টা করেছি অভিনয় শিখে আসতে। আর মডেলিং দিয়ে যাত্রা করলেও আমি সবসময় অভিনয় করতে চেয়েছিলাম। বিশেষ করে ফিল্মে। তাই নিজেকে তৈরি করার জন্য অভিনয় ওয়ার্কশপে জয়েন্ট করি। আর নাচ আমি অনেক পছন্দ করি। স্কুলের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে এবং অনেক প্রোগ্রামে নাচে অংশ নিতাম। ছোটবেলা থেকে নাচ শিখতাম। বেশ কিছুদিন আগে ভাবলাম ভারতনাট্যম শিখবো। ভর্তি হয়ে গেলাম। একমাস শিখে পরে আর সময় দিতে পারিনি। তবে যা করেছি সবই নিজেকে অভিনেত্রী হিসেবে তৈরি করতে। কতোটা কী করতে পেরেছি সেটির প্রমাণ মিলবে বন্ধন হলে নামার পর। জাগো নিউজ : আপনার জন্ম ও বেড়ে ওঠা কী কলকতাতেই?মৌমিতা : না। আমার জন্ম মূল কলকাতা শহরে নয়। বাদুড়িয়াতে। এটা উত্তর চব্বিশ পরগনায় অবস্থিত। ওখানেই আমার সবাই থাকে। সেখানেই আমি পড়াশোনা করেছি, বড় হয়েছি। আর আমি কলকাতাতে থাকি কাজের জন্য। জাগো নিউজ : আপনার পরিবার সম্পর্কে কিছু বলবেন....মৌমিতা : আমি ছোট থেকেই অনেক আদরে বড় হয়েছি। আমার বাবা প্রবীর হরি আর কাকা দুবাই থাকেন। ছোটবেলা থেকে অনেক কম সময় কাছে পেয়েছি তাদের। তবে যখনই দেখা হয় রাজকন্যার মতো ভালোবাসেন। এছাড়াও একান্নবর্তী পরিবারে আছেন আমার মা মিঠু হরি, ছোট মা, ঠাকুমা আর আমার ছোট বোন ঈশিতা। সবাইকে নিয়ে আনন্দের বেঁচে থাকা। জাগো নিউজ : শেষবেলায় ঢাকাই ছবির ইন্ডাস্ট্রিতে আপনাকে স্বাগতম এবং অভিনন্দন। অভিষেক সফল হোক রুপালি পর্দায়।মৌমিতা : অশেষ ধন্যবাদ আপনাকে এবং জাগোনিউজকে। সবাই আমার জন্য শুভকামনা রাখবেন।এলএ