রাজধানীতে অবৈধ দখলে থাকা খাল উদ্ধার করতে আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি থেকে যৌথ অভিযান শুরু হবে। ৯ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হবে বেড়িবাঁধে উচ্ছেদ। ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) নেতৃত্বে এ অভিযানে অংশ নেবে ঢাকা ওয়াসা, ঢাকা জেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ড। রোববার বিকেলে দক্ষিণ নগরভবন মিলনায়তনে এক সমন্বয় সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ঢাকার খাল উদ্ধার ও জলাবদ্ধতা নিরসনে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সাঈদ খোকন বলেন, রাজধানীর খালগুলো বেদখল হওয়ার কারণে বর্ষা মৌসুমে নগরীতে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়। বিভিন্ন প্রভাবশালী মহল এসব খাল দখল করে রেখেছে। এসব দখলদার যেই হোক না কেন তাকে উৎখাত করা হবে। হোক না সে রাজনৈতিক নেতা বা জনপ্রতিনিধি। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে আমরা কাউকে ছাড় দেব না। তিনি আরও বলেন, আগামী ৯ ফেব্রুয়ারি থেকে নগরবাসীর চলাচল নির্বিঘ্ন করতে হাজারীবাগের শিকদার মেডিকেল কলেজ থেকে বাবুবাজার পর্যন্ত বেড়িবাঁধ সড়কের দু’পাশের অবৈধ স্থাপনা অপসারণ কাজ শুরু হবে। এ কাজে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে সার্বিক সহযোগিতা দেবে ডিএসসিসি। এক প্রশ্নের জবাবে ডিএসসিসি মেয়র জানান, নন্দীপাড়া ত্রিমোহনী খালের দখলদার উচ্ছেদের মধ্য দিয়ে খাল উদ্ধার কার্যক্রম শুরু হবে। এটা অব্যাহত থাকবে। আগামী বর্ষায় যাতে নগরীতে জলাবদ্ধতা না হয় সে লক্ষ্যে তড়িৎ গতিতে কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। আরেক প্রশ্নের জবাবে সাঈদ খোকন জানান, খাল দখল করে যেসব রাজনৈতিক কার্যালয়, মসজিদ বা ধর্মীয় অন্যান্য উপাসনালয় গড়ে উঠেছে সবই উচ্ছেদ করা হবে। এক্ষেত্রে ধর্মীয় উপাসনালয় অপসারণ করার পূর্বে সংশ্লিষ্ট ধর্মগুরুদের মতামত নেয়া হবে। মেয়র আরও বলেন, এসব অবৈধ স্থাপনা বিশেষ উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়েছে। ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী তাকসিম এ খান বলেন, রাজধানীর খালগুলো নানাভাবে দখল হয়ে গেছে। ঢাকা ওয়াসা সরকারি ও দাতা সংস্থার সহায়তায় এসব খাল টেকসই দখলমুক্ত করার কার্যক্রম শুরু করেছে। ডিএসসিসি মেয়রের এ উদ্যোগ খাল দখলমুক্তকরণ কার্যক্রমকে আরও বেগমান করবে। এ সময় তিনি পরিসংখ্যান তুলে ধরে বলেন, রাজধানীর ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনা এক সময় প্রাকৃতিকভাবেই নিয়ন্ত্রিত হতো। তখন নগরীতে ৬৫টি খাল ছিল। বর্তমানে প্রবাহমান খালের সংখ্যা ২৬টি। এর মধ্যে ৭টি খাল পড়েছে ডিএসসিসি এলাকায়। বাকি খালগুলো পড়েছে উত্তর সিটি কর্পোরেশন এলাকায়। ঢাকা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন বলেন, আমার কাছে ডিএসসিসি আওতাভূক্ত কিছু খালের তথ্য আছে। সেগুলো হলো, ধোলাই খাল, নন্দীপাড়া খাল, ত্রিমোহনী খাল, ডিএনডি বাঁধ বন্যা নিয়ন্ত্রণ খাল। এসব খালে বিভিন্ন অবৈধ স্থাপনা গড়ে উঠেছে। পর্যায়ক্রমে এসব অবৈধ স্থাপনা অপসারণ করলে খালগুলো আবারও আগের মতো সচল হবে। তিনি আরও বলেন, রাজধানীর বিভিন্ন খালের মালিকানা ব্যক্তির নামেও রেকর্ড হয়ে গেছে। এসব জটিলতাও নিরসন জরুরি হয়ে পড়েছে। সমাপনী বক্তৃতায় সাঈদ খোকন বলেন, পুরাতন বিষয় নিয়ে সমালোচনা করে সময় নষ্ট করতে চাই না। তবে যেসব খালের রেকর্ড ব্যক্তি মালিকানায় চলে গেছে, সেসব জমি প্রয়োজনে অধিগ্রহণ করা হবে। তবুও বাসযোগ্য ঢাকা গড়তে খালগুলো পুনরুদ্ধার করা হবে। এক্ষেত্রে আরও যা যা করা দরকার, সবই করবে ডিএসসিসি। সভায় উপস্থিত ছিলেন,ডিএসসিসি মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন, ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী তাকসিম এ খান, ঢাকা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রতিনিধি প্রমুখ।এমএসএস/এসএইচএস/ওআর/জেআইএম
Advertisement