পদ্মা সেতু প্রকল্পের চলতি অর্থবছরের বরাদ্দ কাটছাঁট করা হচ্ছে। বরাদ্দের পুরো অর্থ ব্যয় করতে না পারায় সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (আরএডিপি) এই অর্থ কাটছাঁটের প্রস্তাব করা হয়েছে। সেতু বিভাগের প্রস্তাবনা অনুসারে এই বরাদ্দ কমানো হচ্ছে বলে জানিয়েছে পরিকল্পনা কমিশন।কমিশন সূত্র জানায়, চলতি অর্থবছরের এডিপিতে পদ্মা সেতু প্রকল্পে বরাদ্দ ছিল ৬ হাজার ২৬ কোটি টাকা। কিন্তু বরাদ্দের পুরো অর্থের ব্যবহার না হওয়ায় সংশোধিত এডিপিতে ১ হাজার ৩৫২ কোটি টাকা ফেরত দেওয়ার প্রস্তাব করেছে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা সেতু কর্তৃপক্ষ। এতে চলতি অর্থবছরের এডিপিতে পদ্মা সেতুর জন্য বরাদ্দ থাকছে ৪ হাজার ৬৭৪ কোটি টাকা। সেতু বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে এডিপিতে পদ্মা সেতুর জন্য ৭ হাজার ৪০০ কোটি টাকা বরাদ্দ থাকলেও আরএডিপিতে বরাদ্দ ৩ হাজার ৮০৮ কোটি টাকাই ফেরত গেছে। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ৮ হাজার ১০০ কোটি টাকা থেকে বরাদ্দ কমিয়ে আরএডিপিতে ধরা হয়েছিল ৭ হাজার ৮৬০ কোটি টাকা। এর আগের অর্থবছর আরএডিপিতে পদ্মা সেতুর বরাদ্দ থেকে ফেরত গেছে ২৫৩ কোটি।পদ্মা সেতু প্রকল্পের পিডি ( প্রকল্প পরিচালক) শফিকুল ইসলাম বলেন, সেতুর কাজ যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে, তাতে আমরা সন্তুষ্ট। তবে বরাদ্দের অর্থ পুরোপুরি ব্যয় তরতে না পারলেও কাছাকাছি যেতে পারবো। ২০২০ সাল নাগাদ এর কাজ শেষ করার টার্গেট নেয়া হয়েছে। সেভাবে কাজও এগিয়ে চলছে। সেতু বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গত ডিসেম্বর পর্যন্ত চলতি অর্থবছরের ৬ মাসে পদ্মা সেতু প্রকল্পে বরাদ্দ থেকে ব্যয় হয়েছে মাত্র ১ হাজার ২৯৬ কোটি টাকা। প্রকল্পের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত মোট ১২ হাজার ২৭৩ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। এরই মধ্যে পদ্মা সেতুর সার্বিক নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে ৪০ শতাংশ। এছাড়াও মাওয়া অ্যাপ্রোচ সড়ক শতভাগ শেষ হয়েছে, সার্ভিস এরিয়ার ভৌত অবকাঠামো নির্মাণ সম্পূর্ণ শেষ হয়েছে। এ ছাড়া জাজিরা অ্যাপ্রোচ সড়কের ভৌতকাজও প্রায় ৮৫ শতাংশ শেষ হয়েছে। তবে অর্থ বরাদ্দের সঙ্গে তাল মিলিয়ে অর্থ ব্যয় করতে না পারায় নির্ধারিত সময়ে প্রকল্পের কাজ শেষ না হওয়া নিয়েও শঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। দেখা যাবে, শেষ দিকে এসে প্রকল্পের মেয়াদ বাড়তে পারে। আর মেয়াদ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রকল্প ব্যয়ও বাড়তে পারে বলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে সেতু বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান।উল্লেখ্য, গত বছর ৮ হাজার ২৮৬ কোটি টাকা ব্যয় বাড়িয়ে পদ্মা সেতু প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ২৮ হাজার ৭৯৩ কোটি টাকা। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ না হওয়ায় এই ব্যয় আরও বাড়তে পারে। এমএ/এআরএস/পিআর
Advertisement