নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার ভুলতা-গোলাকান্দাইল এলাকার ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ও এশিয়ান হাইওয়ে (বাইপাস) নামে দুই মহাসড়কে যানজট এখন নিত্যদিনের চিত্র।প্রতিদিন উভয় সড়কে দীর্ঘ যানজটের কারণে ঘণ্টার পর ঘণ্টা শত শত যানবাহন ও যাত্রীদের আটকে থাকতে হচ্ছে। রাত-দিন সমান তালে যানজট থাকায় সড়ক দুর্ঘটনা ও যাত্রী হয়রানি বাড়ছেই। এর সঙ্গে শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে চেকপোস্টের নামে যানবাহন দাঁড় করিয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে।পরিবহন শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পুলিশ কাগজপত্র দেখার নামে পরিবহন থেকে চাঁদা আদায় করছে। এতে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। অহেতুক যানবাহনে রেকার লাগানো, সড়কে বড় বড় গর্ত, ফুটপাত ও ভুলতা ফ্লাইওভার নির্মাণকাজের মালামাল আনা-নেয়ার কারণে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে।এছাড়া ফ্লাইওভার নির্মাণকাজে দিন-রাত ধুলাবালুতে পুরো এলাকা অন্ধকার হয়ে যায়। ধুলাবালুর কারণে স্থানীয়রা অসুস্থ হচ্ছে। নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এদিকে সোম ও মঙ্গলবার বৃহত্তর গাউছিয়া পাইকারি কাপড়ের বাজার ও বৃহস্পতিবার গোলাকান্দাইল গরুর হাটের জন্য দুই মহাসড়কে ভয়াবহ যানজট হয়। পুলিশ জানায়, দুই মহাসড়কের যানজট নিয়ন্ত্রণ রাখতে ট্রাফিক পুলিশের একজন সার্জেন্টসহ তিনজন পুলিশ সদস্য ও কাঁচপুর হাইওয়ে থানা পুলিশের একজন এসআইসহ তিনজন পুলিশ সদস্য দেয়া হয়েছে। এদের নিয়ন্ত্রণ করছেন ট্রাফিক পুলিশের একজন ইন্সপেক্টর। পুলিশ সদস্যের সংখ্যা কম হওয়ায় যানজট নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খাচ্ছে পুলিশ।পরিবহন চালক, যাত্রী ও পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার গোলাকান্দাইল চৌরাস্তা এলাকা দিয়ে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ও এশিয়ান হাইওয়ে (বাইপাস) সড়ক ক্রস করেছে। ফলে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রাখতে হলে এশিয়ান হাইওয়ে (বাইপাস) সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ রাখতে হয়। আবার এশিয়ান হাইওয়ে (বাইপাস) সড়কে যানাবাহন চলাচল স্বাভাবিক রাখতে হলে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ রাখতে হয়। দুই সড়কে যানবাহনের চাপ অনেক বেশি। তাই দুটি সড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রাখতে গিয়ে পুলিশ প্রশাসনকে হিমশিম খেতে হয় এবং যানজট সৃষ্টি হয়ে যায়। এছাড়া ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক প্রশস্ত হলেও এশিয়ান হাইওয়ে (বাইপাস) সড়কটির প্রশস্ততা কম। ফলে এশিয়ান হাইওয়ে (বাইপাস) সড়কে কোনো প্রকার যানবাহন বিকল হয়ে পড়লেই তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়।এছাড়া অভিযোগ রয়েছে, পুলিশ প্রশাসনকে ম্যানেজ করে গোলাকান্দাইল-কাঞ্চন, কুড়িল বিশ্বরোড ও কালিগঞ্জ সড়কে ফিটনেসবিহীন প্রাইভেটকার ও লেগুনা চলাচল করছে। এসব ফিটনেসবিহীন গাড়ি বিকল হলে মহাসড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়। এসব যানবাহনগুলো প্রায় সময় সড়কে বিকল হয়ে পড়ে। এতে করে যানজট সৃষ্টি হয়ে যাচ্ছে। মাসিক মাসোহারার কারণে অনুমোদনবিহীন এসব যানবাহনে রেকার লাগানো হয় না।জানতে চাইলে ট্রাফিক ইন্সপেক্টর মাহাবুব আলম বলেন, কাগজপত্র দেখার নামে পরিবহন থেকে চাঁদা আদায় ও অহেতুক রেকার লাগানোর বিষয়টি সঠিক নয়। নিয়ম অনুযায়ী পরিবহনগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়। এছাড়া যানজট নিরসন করতে সব সময় পুলিশ প্রশাসন অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছে। এসব বিষয়ে ভুলতা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ও ইন্সপেক্টর শহিদুল হক বলেন, ট্রাফিক ও হাইওয়ে পুলিশের পাশাপাশি রূপগঞ্জ থানা পুলিশও যানজট নিরসনে কাজ করে যাচ্ছে। তবে ট্রাফিক আইন না মেনে যানবাহনগুলো চলাচলের কারণে বেশির ভাগ যানজট সৃষ্টি হয়ে থাকে।মীর আব্দুল আলীম/এএম/আরআইপি
Advertisement