এটি অত্যন্ত স্বস্তির বিষয় যে, দখলদারদের হাত থেকে অবশেষে রাজধানীর শ্যামলী শিশু পার্ক (শিশু মেলা) উদ্ধার করা গেছে। দীর্ঘ এক যুগের বেশি সময় ধরে অবৈধ দখলে থাকার পর গতকাল শনিবার পার্কটি দখলে নেয় ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি)। দখল সম্পর্কে ডিএনসিসি মেয়র আনিসুল হক বলেছেন, ‘দীর্ঘ এক যুগ ধরে প্রতি তিন বছরের জন্য এক লাখ ৪৫ হাজার টাকার বিনিময়ে পার্কটি ইজারা দেয়া হচ্ছিল। ইজারা চুক্তি শেষে আমরা পার্কটি দখলের সিদ্ধান্ত নিই। কিন্তু একের পর মামলা আর রিটের কারণে আমরা দখলে যেতে পারিনি। এখন আমাদের পক্ষে রায় এসেছে। আমরা জয়ী হয়েছি। তাই পার্কটি দখলে নিয়েছি।’১৯৮৫ সালের ১৫ অক্টোবর শ্যামলীর শিশু হাসপাতালের পাশে প্রায় ১ দশমিক ৪০ একর ভূমি গণপূর্ত মন্ত্রণালয় থেকে শিশু পার্ক হিসেবে পরিচালনার জন্য ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরবর্তী সময়ে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন গুলশান-২-এ অবস্থিত একটি পার্ক ও শ্যামলীর একটি পার্কে নিজ খরচে আধুনিক খেলার যন্ত্রাংশ স্থাপন করার জন্য ইজারা দেয়া হয়। এরপর ২০০২ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি মেসার্স ভায়া মিডিয়া বিজনেস সার্ভিসেসের পক্ষে গুলশানের ওয়ান্ডারল্যান্ডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর জিএমএম রহমানের সঙ্গে এক লাখ ৪৫ হাজার ৭৫৬ টাকার বিনিময়ে ৩ বছরের জন্য চুক্তি করে ডিএনসিসি। চুক্তির সময় শেষে ইজারা বাতিল করে শিশুপার্কটি উচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেয় সিটি কর্পোরেশন। কিন্তু এরপর আদালতে একটি রিট করে চুক্তিকারীরা। মামলাটি শুনানির জন্য আদালতে তালিকাভুক্ত রয়েছে। নিষেধাজ্ঞা বা স্থগিতাদেশ না থাকায় কর্পোরেশন উচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেয়।সরকারি জমি যেনতেন উপায়ে ভোগ করা আমাদের দেশে নিয়মে পরিণত হয়েছে। অতি অল্প টাকায় রাজধানীর ব্যস্ততম একটি জায়গা পার্ক পরিচালনার জন্য কী করে লিজ দেয়া হয়েছিল, সেটিই ভাবনার বিষয়। এখানে স্পষ্টতই রাষ্ট্র রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়েছে। এখন পার্কটি দখলে নিয়ে উত্তর সিটি কর্পোরেশন যথার্থ কাজটিই করেছে। দখলে নেয়ার পর পার্কটি সিলগালা করে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। আশা করা যায়, এ সংক্রান্ত ঝামেলা মিটিয়ে পার্কটি অচিরেই খুলে দেয়া হবে। সিটি কর্পোরেশন নিজে এটা চালাতে পারে। অথবা যথাযথ ইজারা মূল্যসাপেক্ষে এটা লিজ দেয়া যেতে পারে। তবে পার্ক হিসেবেই এটি রাখতে হবে।রাজধানীতে বিনোদনের যথেষ্ট অভাব রয়েছে। বিশেষ করে শিশুদের বিনোদনের ভুবন ক্রমেই ছোট হয়ে আসছে। এ অবস্থায় নগরীতে শিশু পার্কের যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে। তাই এ ব্যাপারে ডিএনসিসি ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত নেবে রাজধানীবাসী -এমনটিই আশা করে। এইচআর/এনএইচ/এমএস
Advertisement