মতামত

সবার আগে নিরাপত্তা

উন্নয়ন সহযোগী দেশগুলো থেকে শুরু করে দেশের শ্রমিক সংগঠনগুলো নানাভাবে শ্রমিক নিরাপত্তার  বিষয়টি নিয়ে কথা বলে আসছে। কিন্ত এ দেশে শ্রমিক নিরাপত্তার দিকটি যে এখনো নাজুক অবস্থায়, তা আবারো দেখা গেলো গত মঙ্গলবার আশুলিয়ায় এক কারখানার অগ্নিকাণ্ডে। এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এক শিশু শ্রমিকের মৃত্যু হয়, দগ্ধ হয় ২৬ জন। আহতদের অবস্থা করুণ। এ ধরনের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হলেও কোনো প্রতিকার যেন নেই। মানুষের প্রাণ যায়, আহত হয়ে সারা জীবনের জন্য ক্ষত বয়ে বেড়ায় কিন্তু কাউকে কোনো দায় নিতে হয় না। প্রশ্ন হচ্ছে এভাবে আর কতো দিন?সহযোগী দৈনিকের এ সংক্রান্ত খবর থেকে জানা যায়- আশুলিয়ায় গ্যাস লাইটার প্রস্তুতকারী কারখানাটি ছিল খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। আগুন নেভানোর ছিল না পর্যাপ্ত ব্যবস্থা। লাইটার তৈরির মতো ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত শ্রমিকদের নিরাপত্তা জ্যাকেট দেয়ার নিয়ম থাকলেও মানা হয়নি সেটিও। এই না মানার বিষয়টি যেন জাতীয় রোগে পরিণত হয়েছে। স্বাধীনতার পর আমাদের দেশে শিল্পায়ন হচ্ছে। কিন্তু ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার যতো হচ্ছে শ্রমিক নিরাপত্তার বিষয়টিতে সে অনুযায়ী মনোযোগ দেয়া হচ্ছে না। নইলে বার বার এ ধরনের ঘটনা ঘটে কী করে। কখনো ভবন ধসে, কখনো আগুন লেগে অকাতরে প্রাণ যাচ্ছে শ্রমিকের। কর্ম পরিবেশ সুষ্ঠু ও নিরাপদ রাখার তাগিদ থাকা সত্ত্বেও এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মনোযোগ কম। কাউকে কোনো দায় নিতে হয় না বলে ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটেই চলেছে। এক-একটি ঘটনার পর কিছুদিন তা নিয়ে আলোচনা হয়। তারপর অবস্থা তথৈবচ। এসব ঘটনায় মামলা হলেও কারো সাজা হওয়ার নজির খুব কম। অভিযুক্তরা সহজেই পার পেয়ে যাওয়ায় শ্রমিক নিরাপত্তার দিকটি উপেক্ষিতই থেকে যায়। এ অবস্থায় প্রতিটি শিল্প কারখানার নিরাপত্তা নিয়ে সার্বিকভাবে ভাবতে হবে। বিশেষ করে অগ্নিকাণ্ড থেকে বাঁচার জন্য নিতে হবে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা। অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা থাকা বাধ্যতামূলক করতে হবে। এ বিষয়ে মহড়াও যেন নিয়মিত হয়, তারও ব্যবস্থা করতে হবে। আমরা এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি দেখতে চাই না। সবার আগে নিরাপত্তা-এটাই হোক নীতি। এইচআর/এনএইচ/আরআইপি

Advertisement