দেশজুড়ে

সাঁওতালপল্লী পরিদর্শন করলেন আ.লীগের প্রতিনিধি দল

রংপুর চিনি কলের আওতাধীন গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সাহেবগঞ্জ ইক্ষু খামারের জমি থেকে পুলিশি হামলা চালিয়ে আদিবাসীদের (সাঁওতাল) উচ্ছেদ ঘটনার আট দিন পর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল গোবিন্দগঞ্জের সাঁওতালপল্লী (মাদারপুর ও জয়পুরপাড়া) পরিদর্শন করেছে।রোববার বেলা সোয়া ১টার দিকে আওয়ামী লীগের পাঁচ সদস্যের একটি দল সাঁওতালপল্লী (মাদারপুর ও জয়পুরপাড়া) পৌঁছে। তারা ক্ষতিগ্রস্ত সাঁওতালদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে অভিযোগ শোনেন। এ সময় ক্ষতিগ্রস্তদের হাতে ত্রাণ তুলে দেন তারা। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্তদের সহযোগিতারও আশ্বাস দেওয়া হয়। প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক। তাদের সঙ্গে ছিলেন সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, অর্থ ও পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক টিপু মুন্সী, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী এবং কেন্দ্রীয় সদস্য রেমন্ড আরেং। এছাড়া প্রতিনিধি দলের সঙ্গে গাইবান্ধা-৪ (গোবিন্দগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ, আওয়ামী লীগের সংরক্ষিত মহিলা সংসদ সদস্য (গাইবান্ধা-জয়পুরহাট) উম্মে কুলসুম স্মৃতি, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা প্রশাসক সৈয়দ ছামছুল আলম হিরু এবং জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক আবু বক্কর সিদ্দিক উপস্থিত ছিলেন। এর আগে গত ৬ নভেম্বর পুলিশ পাহারায় রংপুর চিনি কলের কর্মাচারী-শ্রমিক -এসব জমিতে আখ রোপণ করতে গেলে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে সাঁওতালের ছোড়া তীরবিদ্ধ হয়ে নয় পুলিশ সদস্য আহত হন। এছাড়া কয়েক দফায় সংঘর্ষে সাঁওতাল ও চিনিকলের প্রায় ৩০ শ্রমিক-কর্মচারী আহত হন।প্রসঙ্গত, রংপুর চিনিকল কর্তৃপক্ষ ১৯৬২ সালে আখ চাষের জন্য গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সাহেবগঞ্জ (বাগদা-কাটা) এলাকায় সাঁওতাল সম্প্রদায়ের কাছ থেকে ১৮৪২ একর জমি অধিগ্রহণ করে। তখন থেকে এসব জমিতে উৎপাদিত আখ চিনিকলে সরবরাহ করা হচ্ছিল। কিন্তু দীর্ঘদিন ওইসব জমিতে মিল কর্তৃপক্ষ আখ চাষ না করে স্থানীয় কিছু প্রভাবশালীর কাছে লিজ দেন। তারা লিজ নেয়ার পর ওইসব জমিতে তামাক, ধান, শাক-সবজিসহ বিভিন্ন ফসলের আবাদ করতে থাকে। এছাড়া এসব জমিতে অন্তত ১২টি পুকুর খনন করে মাছ চাষ করছে প্রভাবশালীরা। এ বছর কিছু জমিতে আখ চাষ করা হলেও সেই আখের চেহারা এতই খারাপ যে, তা বাঁশের কঞ্চির চেয়েও চিকন। পরে এসব জমি পূর্বপুরুষদের দাবি করে আন্দোলনে নামে আদিবাসী (সাঁওতাল) সম্প্রদায়ের লোকজন। আন্দোলনের এক পর্যায়ে তারা গত ১ জুলাই এই খামারের প্রায় ১০০ একর আবাদি জমিতে ছোট ছোট কুঁড়েঘর নির্মাণ করে দখলের চেষ্টা চালায়। এরই মধ্যে তারা সেখানে ধান ও মাশকলাই চাষ শুরু করে। ওই দিন থেকে তারা তীর-ধনুক নিয়ে জমি পাহারা দেয়। সর্বশেষ গত রোববার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত পুলিশের সঙ্গে আদিবাসী (সাঁওতাল) ও কিছু দখলকারীর সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে নয় পুলিশসহ উভয় পক্ষের অন্তত ৩০ জন আহত হয়।জিল্লুর রহমান পলাশ/এফএ/এমএস

Advertisement