বাংলাদেশকে মানবসম্পদ উন্নয়নে সর্বোচ্চ বিনিয়োগ করতে হবে। দারিদ্র্য বিমোচন ও বিনিয়োগ এখন সরকারের মূল এজেন্ডা। অতি দারিদ্র্য নিরসনে বাংলাদেশ ভালো করেছে, তবে আরো ভালো করার সুযোগ রয়েছে। এক্ষেত্রে সরকারি-বেসরকারি যৌথ বিনিয়োগে জোর দেয়া হয়েছে। বিশ্বব্যাংকের প্যানেল ডিসকাশনে এ বিষয়ে জোর দেয়া হয়েছে। সোমবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বিশ্ব দারিদ্র্যমুক্ত দিবস উপলক্ষে বিশ্বব্যাংক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) যৌথ উদ্যোগে এ প্যানেল ডিসকাশনের আয়োজন করা হয়। ভারতের সাংবাদিক শিরিন ভানের সঞ্চালনায় উপস্থিত ছিলেন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী, অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও লিড ইকোনমিস্ট পল রোমার, অ্যাকশন এইডের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির, নারী উদ্যোক্তা রুবানা হক। দর্শক গ্যালারিতে বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিমসহ বিশ্বব্যাংকের প্রতিনিধি দল উপস্থিত ছিলেন।অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী বলেন, দারিদ্র্য নিরসন ও বিনিয়োগ আমাদের মূল টার্গেট। মানবসম্পদ উন্নয়নে বিনিয়োগ আরো বাড়ানো হচ্ছে। সম্প্রতি দারিদ্র্য বিমোচন তথা অন্তর্ভুক্তমূলক প্রবৃদ্ধির জন্য ব্যাপক পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও সামাজিক নিরাপত্তা খাতে ব্যাপক বিনিয়োগ করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে কর্মসংস্থান তৈরিতে গ্রাম ও শহরের মধ্যে বৈষম্য কমিয়ে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, গ্রামভিত্তিক উন্নয়নে সরকার ব্যাপক পদক্ষেপ নিয়েছে। এজন্য দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা মোতাবেক এগোচ্ছে সরকার। ফলে দারিদ্র্যের হার দ্রুত কমে আসছে। আরো কমে আসবে। বাংলাদেশ ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জনের দিকে যাচ্ছে। এখন আমরা ৭.০৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছি। তিনি বলেন, প্রবৃদ্ধি বাড়লে কর্মসংস্থান বাড়ছে। দারিদ্র্যের হার কমে আসবে। ২০০০ সালে বাংলাদেশের দারিদ্র্যের হার ছিল ৩৪.৪, এখন সেটা ১২.৯ শতাংশে নেমে এসেছে।ডিসকাশনে নারী ক্ষমতায়ন নিয়ে কথা বলেন শিরীন শারমিন। তিনি বলেন, বাংলাদেশে নারীর ক্ষমতায়নে ব্যাপক পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পর্যায়ে নারীরা প্রতিনিধিত্ব করছে। নারী শিক্ষার হার বেড়েছে। এক সময় নারী শিক্ষার্থীর হার কম ছিল। এখন নারী-পুরুষ রেশিও প্রায় সমান সমান।পল রোমার বলেন, বিনিয়োগ মানুষের ওপর। মানব সম্পদে বিনিয়োগ করে দারিদ্র্যের হার দ্রুত কমিয়ে আনা সম্ভব।তিনি আরো বলেন, এক সময় দক্ষিণ কোরিয়া বিশ্বব্যাংক থেকে ঋণ নেয়ার ক্ষমতা ছিল না। তাদের আর্থিক সক্ষমতা ছিল না। এখন তারা কোথায় উঠে গেছে। মানবসম্পদ উন্নয়নে বিনিয়োগ করার মাধ্যমে তারা এই পর্যায়ে উঠে গেছে। বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিম বলেন, বাংলাদেশ দারিদ্র্য বিমোচনে এখন মাইলফলক বলা যেতে পারে। এজন্য অভিজ্ঞতা নিয়ে বিশ্বব্যাপী কাজ করা সম্ভব। এমএ/ এমইউএইচ/জেএইচ/পিআর
Advertisement