সীমান্তহত্যার বিষয়টি বহুল আলোচিত হলেও এখনো এটি বন্ধ হচ্ছে না। নানা সময় নানা রকম প্রতিশ্রুতি এসেছে। বিএসএফ প্রধান ২০১১ সালে ঢাকায় এসে সীমান্তহত্যা শূন্যে নামিয়ে আনার ঘোষণা দিয়েছিলেন। কিন্তু এ সবই কথার কথা হিসেবে রয়ে গেছে। এর সবশেষ প্রমাণ ঝিনাইদহের মহেশপুর এবং কুড়িগ্রামের রৌমারীতে দুইজন বাংলাদেশিকে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী কর্তৃক গুলি করে হত্যা। এ ধরনের হত্যাকাণ্ড কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়। একবিংশ শতাব্দীতে এ ধরনের অমানবিকতা কিছুতেই মেনে নেওয়া যায় না। তারচেয়েও বড় কথা ভারতের সাথে রয়েছে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক সম্পর্ক। মুক্তিযুদ্ধে ভারতের অবদান কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করে এ দেশের মানুষ। এছাড়া দুই দেশের মানুষের সাথেও রয়েছে ভাষা, সংস্কৃতির এক আত্মিক বন্ধন। বাংলাদেশের বহু মানুষ ভারতে চিকিৎসা নিতে যায়। ভারতের টিভি চ্যানেল বাংলাদেশে একচেটিয়া চলে। ভারতের সাথে রয়েছে ব্যাপক বাণিজ্যিক সম্পর্ক। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেদ্র মোদি বাংলাদেশ সফরে এসেও দুই দেশের সম্পর্কের কথা স্মরণ করেছেন। এবং প্রতিবেশি দেশ হিসেবে একসঙ্গে এগিয়ে যাওয়ার কথাও বলেছেন। নরেন্দ্র মোদির সময়েই স্থলসীমান্ত চুক্তি স্বাক্ষর ও বাস্তবায়ন সম্ভব হয়েছে। ছিটমহল বিনিময়ের পর ৬৫ বছরের লাঞ্ছনার অবসান হয়েছে। নিঃসন্দেহে এগুলো এক বিরাট ঐতিহাসিক অর্জন। এরই অর্জন ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয় যখন সীমান্তে নির্বিচারে বাংলাদেশিদের হত্যা করা হয়।সীমান্তহত্যার জন্য চোরাচালানকে দায়ী করা হয়। অস্বীকার করা যাবে না এই সমস্যা রয়ে গেছে। কিন্তু এর জন্য শুধু বাংলাদেশকে দোষারোপ করলে চলবে না। আর গুলি করে হত্যার মধ্যেও শর্টকাট কোনো সমাধান নেই। বরং সমস্যার গভীরে গিয়ে তা সমাধানের চেষ্টা চালাতে হবে। চোরাচালান বন্ধে আইনের প্রয়োগ করতে হবে। মামলা মোকদ্দমা করেও দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করা যায়। দিল্লিতে বিএসএফ-বিজিবি মহাপরিচালক পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে আগামী সপ্তাহে। এই বৈঠকে সীমান্তহত্যা বন্ধে প্রয়োজনীয় কৌশল নির্ধারণে আলোচনা হবে নিশ্চয়ই। আমরা আশা করবো বৈঠকটি ফলপ্রসূ হবে। এবং সীমান্তহত্যা বন্ধে দুটি ভ্রাতৃপ্রতিম দেশ ঐতিহাসিক সিদ্ধাতে পৌঁছাতে সক্ষম হবে। এইচআর/এমএস
Advertisement