দেশজুড়ে

নেপালি গরু টানছে সিলেটের ক্রেতাদের

সিলেটে জমে উঠছে পশুর হাট। এবছর প্রথমবারের মত সিলেটের পশুর হাটে নেপালি গরু আসায় ক্রেতারা নেপালি গরুর প্রতিই বেশি আকৃষ্ট হচ্ছেন। এছাড়া খামারের দেশি গরুর প্রতিও তাদের আগ্রহ রয়েছে।এবার নগরের প্রাচীনতম কাজীরবাজার পশুর হাটের পাশাপাশি আখালিয়া এলাকায় বিজিবির মাঠ ও শাহী ঈদগাহ খেলার মাঠে পশুর হাট বসানো হয়েছে। তবে এই বৃষ্টির দিনেও হাটগুলোতে অন্যান্য বারের মতো নেই কাদাপানি।হোসাইন দুগ্ধ খামারের মালিক কবির মেম্বার ১৫টি নেপালি গরু হাটে বিক্রি করতে এনেছেন। তিনি সবচেয়ে বড় গরুটির দাম হেঁকেছেন সাড়ে ৮ লাখ টাকা। সেই গরুটির সঙ্গেই সেলফি তুলছেন অনেক ক্রেতা। বেপারি কবির মেম্বার বলেন, নেপালি গরু ১৫টি আনলেও একটিও এখনো বিক্রি করতে পারিনি। ক্রেতারা দেখে, আর সেলফি তোলে। তবে আশা করছি, আগামী শুক্রবার থেকে কোরবানির বাজার পুরোদমে জমে ওঠবে। নিজস্ব খামারের ৫০টি গরুও আছে। দেড় লাখ থেকে আড়াই লাখ টাকা করে এসব গরুর দাম ধরা হয়েছে। সিরাজগঞ্জ থেকে ২৭টি গরু নিয়ে কাজিরবাজারে এসেছেন আরেক গরুর খামারি সাইদুল ইসলাম। তিনি জানালেন, সোমবার থেকেই মূলত সিলেটে কোরবানির গরু বেচাকেনা শুরু হয়েছে। আগামী শুক্রবার প্রচুর বেচাকেনা হবে বলে তিনি আশাবাদী। এখন টুকটাক বিকিকিনি হচ্ছে। তার গরুগুলোর দাম ৫০ হাজার থেকে ৩ লাখ টাকা। তবে এবার ক্রেতাদের পছন্দের দাম ৮০ থেকে দেড় লাখ টাকার মধ্যে বলেও জানান তিনি। কাজিরবাজার ঘুরে দেখা গেল, এ হাটে আছে নিজস্ব নিরাপত্তা কর্মী। একই সঙ্গে হাটের প্রবেশমুখে পুলিশি নিরাপত্তাও রয়েছে। অন্যবার তালতলা সড়কের ওপর হাট বসে যান চলাচলে বাধা তৈরি হতো। কিন্তু এবার তালতলা সড়ক ফাঁকা। ট্রাক থেকে নেমেই গরুগুলোকে বাজারের ভেতরে এনে বাঁশের তৈরি ছাউনিতে বেঁধে রাখা হচ্ছে। রাতের জন্য বাতি লাগানো হয়েছে বাঁশে বাঁশে। গরু কেনার পর বিভিন্ন স্থানে রসিদ কাটার গদি রয়েছে। গরুর খাবারও বিক্রি হচ্ছে হাটে। শুকনো খড় ও ঘাস বিক্রি করছেন স্থানীয় মৌসুমি ব্যবসায়ীরা। ঘাস বিক্রেতা হৃদয় আহমদ জানালেন, তিনি বিশ্বনাথের খাজাঞ্চি গ্রামে কিছু ধান রোপণ করেছিলেন। কিন্তু পোকায় খেয়ে ফেলেছে। তাই এগুলো ঘাস হিসেবে বিক্রি করছেন পশুর হাটে। প্রতি আঁটি ১০ টাকা। কাজিরবাজারের বিশাল গরুর হাটের এক টুকরো হৃদয় বলা যায় ছাগলের হাটকে। কেননা, গরুর ভিড় ঠেলে কিছু ক্রেতা শুধু ছাগল কিনতে আসেন গোলাকার পাকা ভবনের ছাদের নিচের ছাগলহাটে। রংপুর, কুড়িগ্রাম, বগুড়া থেকে মকবুল, রুবেল, ময়েদ, জাহাঙ্গির ও জৈন্তার শাহিন বেপারি এ হাটে অন্তত ৩ হাজার ছাগল নিয়ে এসেছেন। সোমবার প্রথম দিনেই দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত ৫০টি ছাগল তারা বিক্রি করেছেন। ঈদের আগের রাত পর্যন্ত চলবে ছাগল বিক্রি। কাজিরবাজারের এ হাটে সবচেয়ে বেশি ছাগল বিক্রির রেকর্ড রয়েছে। এখানে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ট্রাকে হাজার হাজার ছাগল আনা হয় বলে জানালেন মকবুল।  কাজিরবাজার পশুর হাটের ব্যবস্থাপক লোলন মিয়া বলেন, এবার গরুর দাম বেশি। তবে গরুর আমদানি কম থাকায় বিক্রি গতবারের চেয়ে কম। এখনো বাজার পুরোপুরি জমেনি। ঈদের আগ মুহূর্তে বেচাকেনা আরও বাড়বে।এফএ/পিআর

Advertisement