আমার মেয়ের হত্যাকারীর বিচার চাই বলে আদালতের বারেন্দায় অঝোরে কান্না করছিলেন নিহত সুরাইয়া আক্তার রিশার মা তানিয়া হোসেন। তিনি কাঁদতে কাঁদতে বলছিলেন, আমার মেয়ের হত্যাকারী ওবায়দুলের বিচার যেন দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে হয়। এ হত্যার বিচার যেন হাইকোর্টে গিয়ে আটকে না যায়। কেবল বারান্দায় নয়, আদালতের সাক্ষীর কাঠগড়ায়ও অঝোরে কাঁদছিলেন তিনি। চোখে বৃষ্টিধারা নেমেছিল রিশার বাবা রমজান আলীরও।বৃহস্পতিবার রাজধানীর উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী সুরাইয়া আক্তার রিশার (১৪) সন্দেহভাজন হত্যাকারী ওবায়দুল খানকে আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় তার বিরুদ্ধে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা রমনা মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আলী হোসেন।রিমান্ড শুনানিতে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আবু বলেন, ওবায়দুল একটা বখাটে ছেলে। সে নিষ্পাপ রিশাকে ধারালো ছুরি দিয়ে আঘাত করে হত্যা করেছে। এ হত্যাকাণ্ডের পেছনে আর কি রহস্য আছে, তা উদঘাটনের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা প্রয়োজন।শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম দেলোয়ার হোসেন ছয়দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।শিক্ষার্থীদের তীব্র আন্দোলনের মুখে কয়েকদিনের অভিযানের পর বুধবার ভোরে নীলফামারী ডোমার থেকে ওবায়দুলকে গ্রেফতার করে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ৫/৬ মাস আগে রিশা ও তার মা তানিয়া ইস্টার্ন মল্লিকা মার্কেটে বৈশাখী টেইলার্সে কাপড় সেলাই করাতে যান। এ সময় তারা মা ওই দোকানের রসিদের রিসিভ কপিতে ফোন নম্বর দিয়ে আসেন। ওই টেইলার্সের কর্মচারী ওবায়দুল রিসিভ কপি থেকে ফোন নম্বর নিয়ে রিশাকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে বিরক্ত করত। রিশার মা এ বিষয়ে ওবায়দুলকে শাসান বলেও জানা যায়।এরপর গত ২৪ আগস্ট রিশা ও তার বন্ধু মুনতারিফ রহমান রাফি (১৫) পরীক্ষা শেষ করে কাকরাইল ওভারব্রিজ দিয়ে পার হওয়ার সময় ওবায়দুল রিশাকে প্রেমের প্রস্তাব দেয়। রিশা তা প্রত্যাখ্যান করলে ওবায়দুল তাকে ছুরিকাঘাত করে। রক্তাক্ত অবস্থায় রিশাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। ২৮ আগস্ট চিকিৎসাধীন অবস্থায় রিশা মারা যায়।এ ঘটনায় ২৪ আগস্ট রিশার মা তানিয়া হোসেন বাদী হয়ে রমনা থানায় একটি মামলা করেন।এ হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবিতে ফার্চুয়াল দুনিয়া সরব। ফেসবুক, ব্লগ, টুইটারে রিশার হত্যাকারীর সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি করা হচ্ছে। রিশার সহপাঠীরাও বিচারের দাবিতে একাধিকবার সড়কে নেমেছে। জেএ/এসএইচএস/পিআর
Advertisement