ফিচার

মার্গারিতা নাকি মাবিয়া বাংলাদেশের গর্ব

গল্প শুনবেন, গল্প? দুই নারীর গল্প, একজন বাংলাদেশি আরেকজন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত! আমার গল্পের দুই নায়িকা হলো মাবিয়া আক্তার আর মার্গারিতা। এই কয়দিন আগেও আমি এদের কাউকে চিনতাম না কিন্তু আজ এরা দু’জন আমার গল্পের নায়িকা। যারা খেলা দেখেন আর সোশ্যাল মিডিয়ার সাথে যুক্ত আছেন তাদের মধ্যে থেকে মার্গারিতাকে চিনেন না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া মুশকিল। কারণ গত কয়েকদিন ধরে মার্গারিতাকে নিয়ে যে পরিমাণ নিউজ হচ্ছে; তাতে যে চিনতে চাইবে না তাকেও চিনতে হবে। এর মাঝে আমরা বাঙালিরা আবার কখনই একমত হতে পারি না। কারণ আমরা নিজস্ব মতবাদে বিশ্বাসী! একদল মার্গারিতাকে নিয়ে গর্বিত, আর একদল ওর সমালোচনায় ব্যস্ত। যারা ওকে নিয়ে গর্বিত তারা বলছেন ও অলিম্পিকে বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করছে, ও বাংলাদেশের গর্ব। আচ্ছা, ও তো রাশিয়ার হয়ে খেললো, তাহলে কেমন করে বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করলো? ওইখানে তো আমার বাংলাদেশের পতাকা ওড়েনি, ওর গায়ে তো আমার লাল-সবুজ পতাকাটা ছিলো না। তবে হ্যাঁ, বাংলাদেশ নামটা এসেছে। এটাই কম কিসের! যারা ওর সমালোচনা করছেন তাদেরকে বলছি, মার্গারিতাকে কিন্তু ওর বাবা বাংলাদেশে নিয়ে এসেছিলেন। কিন্তু ওই সময় ফেডারেশন থেকে সেভাবে সহযোগিতা না পাওয়ায় ফিরে গিয়েছিলেন রাশিয়ায়। তাহলে, দোষটা কি তার, নাকি আমাদের! আজ হয়তো মেয়েটার গায়ে আমাদের লাল-সবুজ পতাকাটা থাকতো। আর খবরের শিরোনামটা হতো বাংলাদেশি মেয়ের অলিম্পিকে সোনা জয়! আহারে, এক জীবনে কি যে মিস করলাম আমরা! এই মার্গারিতা শুধু বাংলাদেশ নামটা নিয়ে আসলো কিন্তু আমার দেশের পতাকাটাকে ওড়াতে পারেনি। আমার দেশের জাতীয় সংগীত বাজাতে পারেনি, তাতেই ওকে নিয়ে আমাদের গর্বের শেষ নেই। আর এই গর্ব থেকেই ওকে নিয়ে একের পর এক নিউজ। আর তাতেই বাচ্চা থেকে বুড়া সবার কাছে গর্ব এখন মার্গারিতা।কিন্ত যে মেয়েটা বাংলাদেশি হয়ে একেবারেই খাঁটি বাঙালি হয়ে এই দেশের পতাকা উড়িয়ে, এই দেশের জাতীয় সংগীত বাজিয়ে সোনা নিয়ে আসলো তাকে কতজনে চেনেন? এই মাবিয়া আক্তারকে চেনেন? যে মেয়েটা জাতীয় সংগীত বাজার সাথে সাথে অঝোরে কাঁদছিলো। পতাকাটা মাথা উঁচু করে উড়ছিলো আর মেয়েটা ওই পতাকার দিকে তাকিয়ে কেঁদেই যাচ্ছিলো। চিনেন একে? না চিনলে আপনাদের পছন্দের ইউটিউবে গিয়ে মাবিয়া আক্তার লিখে সার্চ করে দেখে নিন। সে এই বছরই সাউথ এশিয়ান গেমসে নারীদের ৬৩ কেজি ওজন ইভেন্ট থেকে সোনা জিতেছে। ২০১৫ সালে সে নারীদের ৬৩ কেজি ওজন ইভেন্ট থেকে যুব বিভাগে একটি স্বর্ণ, ভারতে কমনওয়েলথ ভারোত্তোলন চ্যাম্পিয়নশিপে সিনিয়র জুনিয়রদের বিভাগে দু’টি রৌপ্য পদক জিতেছে। এই মেয়েটাকে নিয়ে কয়টা নিউজ হয়েছে, কয়টা শিরোনাম হলো এই মেয়েটাকে নিয়ে? এই মেয়েটার বিষয়ে আমরা কতটুকু জানি!এসইউ/আরআইপি

Advertisement