ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেছেন, ১৫ আগস্টকে শুধু আনুষ্ঠানিকতার মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্ম থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ অনুসরণের মাধ্যমে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) মিলনায়তনে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের ৪১তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মো. এনামউজ্জামান অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দীন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ, যুগ্ম-সম্পাদক অধ্যাপক ড. নীলিমা আকতার বক্তব্য রাখেন।উপাচার্য বলেন, ১৯৭৫ সালের এই দিনে বঙ্গবন্ধুর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আগমনের কথা ছিল। সেদিন তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা প্রদান করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তার আর বিশ্ববিদ্যালয়ে আসা হয়নি। এর আগেই ঘাতকদের নির্মম বুলেটে তাকে শাহাদাত বরণ করতে হয়।উপাচার্য বঙ্গবন্ধু চরিত্রের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে তিনি বলেন, তিনি অত্যন্ত সৎ, উদার, দেশপ্রেমিক, সাহসী ও মানবিক মূল্যবোধ সম্পন্ন মহান ব্যক্তিত্ব ছিলেন। সাধারণ মানুষের ভাগোন্নয়নের সংগ্রামে তিনি মৃত্যু, জেল, জুলুমকে কখনও ভয় পাননি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ৪র্থ শ্রেণি কর্মচারীদের পক্ষে আন্দোলন করতে গিয়ে ১৯৪৯ সালের ২৬ মার্চ তিনি ছাত্রত্ব হারান। বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন কর্তৃপক্ষ মুচলেকা ও ১৫ টাকা জরিমানার বিনিময়ে তাকে ছাত্রত্ব ফিরিয়ে দিতে চেয়েছিল। তখনও তিনি অন্যায়ের সঙ্গে আপস করেননি এবং ছাত্রত্ব ফিরিয়ে নেননি। বঙ্গবন্ধু পরবর্তীতে জাতীয় রাজনীতিতে যুক্ত হন এবং বাংলাদেশের স্বাধীকার আন্দোলন শুরু করেন। ১৯৭১-এর ২৫ মার্চ কালরাতে পাকিস্তান বাহিনীর বন্দুকের মুখেও তিনি বাসায় অবস্থান করছিলেন। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে তিনি কখনো আত্মগোপন করেননি বা পালিয়ে যাননি। আজীবন তিনি আভিজাত্য নিয়ে রাজনীতি করেছেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঘাতকদের বুলেটের সামনেও তিনি অবিচল ছিলেন। এই আভিজাত্য নিয়েই তিনি মৃত্যুকে আলিঙ্গন করেন। এদিকে শাহাদাতবার্ষিকী পালন উপলক্ষে ঢাবি কর্তৃপক্ষের অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে ছিল- সব ভবন ও হলে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা ও কালো পতাকা উত্তোলন, বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে জাতির জনকের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন, আলোচনা সভা, আলোকচিত্র প্রদর্শনী, শিশু-কিশোর চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা প্রভৃতি।এছাড়াও বাদ জোহর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদসহ প্রত্যেক হল ও আবাসিক এলাকার মসজিদে দোয়া মাহফিল এবং বিভিন্ন ধর্মীয় উপাসনালয়ে বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হয়। এমএইচ/জেএইচ/পিআর
Advertisement