থাইল্যান্ডে গণভোটে নতুন সামরিক সংবিধানের পক্ষে রায় দিয়েছে দেশটির সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটার। প্রাথমিক ফলাফলে ৬০ শতাংশ ভোটার নতুন সংবিধানের পক্ষে ভোট দিয়েছেন বলে উঠে এসেছে। এ সংবিধান কার্যকর হলে দেশটির রাজনীতিতে সামরিক শাসন দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে। তবে থাইল্যান্ডের বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন সেনাবাহিনীর লিখিত এই সংবিধানের সমালোচনা করেছে। তারা বলছে, এর ফলে নির্বাচিত রাজনীতিবিদদের ওপরে নিয়োগকৃত কর্মকর্তাদের কর্তৃত্ব বৃদ্ধি পাবে। ২০১৪ সালে ইংলাক সিনাওয়াত্রার সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার পরপরই সেনাবাহিনী পুরনো সংবিধান বাতিল করে দেয়।পরে সেনাবাহিনীর একটি কমিটি গঠন করে নতুন সংবিধানের খসড়া তৈরির জন্য। প্রস্তাবিত এই সংবিধান এমন নির্বাচনী ব্যবস্থা রাখা হয়েছে যার ফলে কোনো একটি রাজনৈতিক দলের পক্ষে সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়া কঠিন হয়ে পড়বে। এর মধ্যে বিতর্কিত একটি প্রস্তাব হচ্ছে, থাই সংসদের উচ্চকক্ষ সিনেটের ২৫০ সদস্যই নিয়োগ করবে সেনা সরকার। সেনা অভ্যুত্থানের আগে এ সংখ্যা ছিল অর্ধেক।থাইল্যান্ডের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো প্রস্তাবিত এই সংবিধানের বিরোধীতা করেছে। তারা বলছে, ২০১৪ সালের সেনা অভ্যূত্থানকে বৈধতা দিতে এবং একইসাথে রাষ্ট্র পরিচালনায় সেনাবাহিনীর ক্ষমতা আরো বাড়োনোর একট কৌশল হিসাবে নতুন এই সংবিধান করা হচ্ছে। তবে গণভোট বর্জন করেনি রাজনৈতিক দলগুলো।ভোট দিয়েছেন ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী ইংলাক চিনাওয়াতও। ভোট দেওয়ার সময় থাই জনগণকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, থাইল্যান্ডের জন্য আজকের দিনটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ আজকের দিনটি গণতন্ত্রের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। বিষয়টি বুঝে মানুষকে তার মতামত দিতে হবে। ঘরে বসে থাকা ঠিক হবে না।এর আগে, প্রস্তাবিত এই সংবিধানের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের প্রচারণা নিষিদ্ধ করে সেনাবাহিনী। প্রচারণা চালানোর অভিযোগে অনেককে আটক করে। এমনকি নিরপেক্ষ ভোট পর্যবেক্ষণের অনুমতিও দেওয়া হয়নি। থাইল্যান্ডের সেনা সরকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে গণভোটে প্রস্তাবিত সংবিধানটি পাশ হলে, আগামী বছর শেষ নাগাদ নতুন নির্বাচন হবে এবং গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হবে।তবে সমালোচকরা আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছেন, নতুন সংবিধানের আওতায় যে গণতন্ত্র আসবে তা প্রকৃত কোনো গণতন্ত্র হবে না। ভবিষ্যতের সরকারের ওপর সেনাবাহিনীর প্রভাব প্রতিপত্তি বহুগুণে বেড়ে যাবে। প্রাথমিক ফলাফলে দেখা যাচ্ছে, ৬০ শতাংশ থাই ভোটার নতুন সংবিধানের পক্ষে ভোট দিয়েছে। ফলে, ভবিষ্যৎ সরকার নির্বাচনে সেনাবাহিনীর ব্যাপক ক্ষমতা থাকবে। প্রস্তাবিত সংবিধানের সমর্থকরা বলছেন, এতে থাইল্যান্ডে রাজনৈতিক অস্থিরতা দূর হবে এবং স্থিতিশীলতা নিশ্চিত হবে।এসআইএস/এবিএস
Advertisement