রাজধানীর মিরপুর কালশীতে নকল এন্টিবায়োটিক ঔষধ (এজিথ্রোমাইসিন) তৈরির কারখানা হতে এক লাখ পিস নকল জিম্যাক্স উদ্ধার করেছে র্যাবের ভ্রাম্যমান আদালত। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে কারখানার মালিকসহ ছয় জনের কারাদণ্ড এবং কারখানা সিলগালা করেছে ভ্রাম্যমান আদালত।সোমবার সকাল সাড়ে ৭টায় রাজধানী মিরপুর-১১ এর পলাশনগর কালসীতে সেড ফার্মাসিউটিকেল (আয়ুর্বেদিক) প্রতিষ্ঠানে এ অভিযান পরিচালিত হয়।র্যাব-২ ব্যাটালিয়নের সহযোগীতায় র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এএইচএম আনোয়ার পাশা এর সমন্বয়ে এবং ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের প্রতিনিধি জনাব সৈকত কুমার কর-এর উপস্থিতিতে একটি মোবাইল কোর্ট অভিযান পরিচালিত হয়।কারখানার মালিক সঞ্জয় বাড়ৈ (৩৬) ও কারিগড় মো. কাওছার (২৮)কে দুই বছরের কারাদণ্ড এবং দুই লক্ষ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরো ৩ মাসের কারাদণ্ড ও এক লক্ষ টাকা জরিমানা, এবং মোঃ সাইফুল ইসলাম (২০)কে এক লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়। এছাড়া অসিম হালদার (৫২)কে এক লক্ষ টাকা জরিমানা, মোঃ মোফাজ্জেল খন্দকার(৭৫) এক লক্ষ টাকা জরিমানা, দশরত মধু (৫০) এক লক্ষ টাকা জরিমানা জরিমানা অনাদায়ে ৩ মাসের কারাদণ্ড দেয় আদালত।র্যাব-২ ব্যাটালিয়নের সহযোগীতায় র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এএইচএম আনোয়ার পাশা জাগো নিউজকে জানান, জীবন রক্ষাকারী ঔষধ নকল করার সময় ৬ জনকে আটক করে তাৎক্ষনিকভাবে কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।সেড ফার্মাসিউটিকেল আয়ুর্বেদিক প্রতিষ্ঠানটি আয়ুর্বেদিক ঔষধ তৈরি করার লাইসেন্স থাকলেও গোপনে নামকরা কোম্পানীর নকল এলোপ্যাথি ঔষধ তৈরি হচ্ছিল। এন্টিবায়োটিক তৃতীয় প্রজন্মের বহুল পরিচিত একটি নামকরা কোম্পানীর প্রায় এক লক্ষ জিম্যাক্স ঔষধ নকল তৈরি করছিল এবং একটি বিশেষ কোম্পানীর নাম খোদাই করা ঔষধ তৈরির ছাচ পাওয়া যায়।কারখানার মালিক সঞ্জয় বাড়ৈ র্যাবকে জানান, দুই বছর যাবৎ তিনি তার কারখানায় আয়ুর্বেদিক ঔষধের পাশাপাশি এসব দামি এলোপ্যাথি ঔষধ গোপনে তৈরি করছেন।কারখানার প্রডাকশন ম্যানেজার কাওছার জানান, এই ঔষধটি ইতিমধ্যে তিন লক্ষ পিস তৈরি করে বাজারে ছাড়া হয়েছে। এছাড়া অন্য কোম্পানীর এন্টিবায়োটিকও তারা ইতিপূর্বে নকল করেছেন।অভিযুক্ত মালিক সঞ্জয় বাড়ৈ আরো জানান, একটি সংঘবদ্ধ চক্র নকল ঔষধ তৈরিতে সক্রিয়। বাজারে যেসব ঔষধ বেশি চলে এবং দাম বেশি সেসব ঔষধ তারা বিভিন্ন ছোট ছোট ঔষধ কোম্পানীর মাধ্যমে নকল করেন।কাওসার জানান, তৈরি এসব নকল ঔষধে ৩০ কেজি স্টার্চ (এক ধরনের ময়দা) এর সাথে এক কেজি নিম্নমানের এজিথ্রোমাইসিন মিশিয়ে ত্রিশ হাজার ঔষধ তৈরি করেছেন। ফলে প্রতিটি ঔষধে মূল উপাদান ৫০০ মিলিগ্রাম এজিথ্রোমাইসিনের উল্লেখ থাকলেও থাকে মাত্র ৩৫ মিলিগ্রাম। উক্ত ঔষধে কার্যকর উপাদান অতি কম এবং নিম্নমানের হওয়ায় মানুষের শরীরে এর রেজিস্টেক্স সৃষ্টি হয় ফলে এধরনের ঔষধ ভবিষ্যতে কাজে লাগে না।ট্যাবলেট তৈরি হওয়ার পর উক্ত সংঘবদ্ধ চক্রটি নিজেরাই নকল ফয়েল পেপার নিয়ে এসে গোপনে পেকিং করে নিয়ে যায়। ঔষধ তৈরির সাথে সাথে এগুলো অন্যত্রে সরিয়ে ফেলেন বলে তাদের সহজে ধরা যায় না।অভিযুক্ত সঞ্জয় আরো জানান, তিনি কারখানার পাশে গোপনে একটি গোডাউন ভাড়া নিয়েছেন এবং অবৈধ ঔষধগুলো তৈরির সাথে সাথে সেখানে সরিয়ে ফেলেন। গত রোববার তিনি দুই লক্ষ টাকার ৪০ কেজি সিলডেনাফিল সাইট্রেট কিনে এনেছেন। হারবাল নামে এগুলো দিয়ে উত্তেজক ঔষধ তৈরী করে প্রতারনা করা হচ্ছিল।জেইউ/আরএস
Advertisement