বাংলাদেশের তরুণ জাকির আহমেদ (২১)। তার বয়স যখন মাত্র ১৪ বছর সে সময় নরফোল্কের নরউইচ শহরের প্রিন্স ওয়েলস রোডে ঘুরে বেড়াচ্ছিল সে। সঙ্গে তার কেউ ছিল না। একেবারে অচেনা-অজানা একটা শহরে কি করে সে এলো তাও জানতো না। হয়তো মানবপাচারকারীদের হাতে পড়েছিল সে। গৃহকর্মী হিসেবে বেঁচে দিতে ওই মানবপাচারকারীরাই তাকে দূরদেশে নিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু সুযোগ বুঝে রাস্তায় একা ফেলে পালিয়ে গিয়েছিল ওই অমানুষগুলো। ওইটুকুন একটা বাচ্চা ছেলে কাউকে চেনে না জানে না। এত বড় শহরে একা একটা শিশু কি করবে, কোথায় যাবে কিছুই বুঝতে পারছিল না।রাস্তায় থাকা সেই শিশুটিকে আশ্রয় দেয় নরউইচ শহরের এক দম্পতি। শিশুটিকে নিজেদের সন্তানের মতই লালন পালন করেছেন তারা। ওই শিশুটি এখন যুবক জাকির আহমেদ। নরফোল্কই এখন তার নিজের দেশ, নিজের বাড়ি। কিন্তু সে তো ওই দেশের নাগরিক না। তাই চাইলে ওই দেশকে নিজের বলে দাবী করতে পারে না সে। তবে তার পাশে সব সময় আছে তার পালক বাবা-মা। তারা আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছেন যেন জাকিরকে সে দেশের স্থায়ী নাগরিক করা যায়। জাকির বলেন, আমি এখানে স্থায়ীভাবে থাকার জন্য কঠোর প্ররিশ্রম করে যাচ্ছি। আমি ভবিষ্যতে অনেক বড় কিছু করতে চাই। আমি বাংলাদেশে কিভাবে ফিরে যাব? সেখানে আমি কিছুই চিনি না। আমি কার কাছে যাব? সেখানে আমি কি করব? আমি জানি না বাংলাদেশে আমার বাবা-মা কোথায় থাকেন। তাই ওই দেশেই থাকতে চান জাকির।নরফোল্কে থাকতে হলে জাকিরকে বৈধ কাগজের জন্য প্রায় ৪ হাজার পাউন্ড ব্যয় করতে হবে। যদিও অর্থের দিক থেকে এটা একেবারেই কম নয়। তবে এতে মোটেও হতাশ নন জাকির। আর বরাবরই তার এই লড়াইয়ে পাশে থেকেছেন তার পালক বাবা-মা। তারা সব সময় তাকে এই লড়াইয়ে সাহস জুগিয়েছেন। জাকির এবং তার পালক বাবা-মায়ের আশা খুব শিগগিরই জাকির সে দেশের বাসিন্দা হতে পারবেন।টিটিএন/পিআর
Advertisement