`খুশী হমুনা ? একটা পোলার (ছেলে) লাইগা পাগল ছিলাম-এক সঙ্গে তিনটা পেলাম` এভাবেই অনুভুতি ব্যক্ত করলেন কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারীতে একসঙ্গে তিন ছেলে সন্তানের জন্ম দেয়া এক মা। মায়ের নাম নাসিমা খাতুন (২৬)। স্বামী শুক্কুর আলী। জমি বলতে দুই কাঠার বসতভিটা। দিন মজুরের কাজ করে সংসার চালায়। ইতিমধ্যে সংসারে তাসিনা (১১), সুকতন (৮) ও খাদিজা (৫) নামের তিন মেয়ে রয়েছে। তারপরও শান্তি ছিলো না কারণ সংসারে ছেলে সন্তান নেই। সেজন্যই তিন সন্তানের পর আবার সন্তান নিয়েছেন। আর এবার একটির স্থলে তিন ছেলে সন্তান পেয়েছেন। আর এজন্য শুক্কুর আলীও খুশি। কিন্তু দুঃচিন্তা তার চোখে মুখে। বাঁচাতে পারবেন তো তিনি তিন সন্তানকে ? কারণ ক্লিনিকের চিকিৎসকরা জানিয়েছে, একসঙ্গে তিন সন্তান হওয়ায় এরা অপুষ্টিতে ভুগছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের রংপুরে নেয়া প্রয়োজন। কিন্তু অর্থ কই ? তাই আল্লার উপর ভরসা করে শুক্কুর আলী ভুরুঙ্গামারীর সীমান্ত ক্লিনিকে ভর্তি রেখেছেন স্ত্রী ও সন্তানদেরকে।কচাকাটার চরটেপাপুর গ্রামে গত সোমবার দুপুরে নিজ বাড়িতে স্বাভাবিকভাবে একটি সন্তার প্রসব করে নাসিমা। পরবর্তী বাচ্চা প্রসবে বিলম্ব হওয়ায় তাকে ভুরুঙ্গামারীতে ‘সীমান্ত’ ক্লিনিকে আনা হয়। সেখানে সিজারের মাধ্যমে অন্য দুটি সন্তান প্রসব করানো হয়। ভুরুঙ্গামারী উপজেলা হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ও সীমান্ত ক্লিনিকের চিকিৎসক ডা. রাশেদুল ইসলাম বলেন, মায়ের অপুষ্টির কারণে বাচ্চাগুলোর মধ্যে অপুষ্টিসহ বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিয়েছে। এজন্য তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যেতে পরামর্শ দেয়া হয়েছে। কিন্ত অর্থভাবে এ পরিবারটি রংপুরে যেতে পারেনি বলে জানান তিনি। ভুরুঙ্গামারী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নুরন্নবী চৌধুরী জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরে তিনিসহ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আজাহারুল ইসলাম ক্লিনিকে মা ও সন্তানদের দেখতে যান। চিকিৎসার খোজ-খবর নেন। তিনি বলেন, নবজাতকরা বুকের দুধ কম পাওয়ায় সংকটে পড়েছে। বাচ্চাদের খাবারের জন্য চার হাজার টাকা সহায়তা দেয়া হয়েছে।নাজমুল হোসেন/এআরএ/এমএস
Advertisement