জাতীয়

দীর্ঘ লাইনে ভোর-দুপুর : মিলছে না কাঙ্ক্ষিত রুটের টিকিট

ঈদের ছুটিতে প্রতি বছরই বাস বা রেলের টিকিট নিয়ে হাহাকার ও এক রকম যুদ্ধাবস্থা সবারই জানা। তবে এবার ঈদের বেশ আগেই সরকারি ছুটি শুরু হওয়ায় টিকিট ক্রয়ে সহজ হবে আশা করেছিলেন টিকিট প্রত্যাশীরা। কিন্তু দৃশ্য ভিন্ন। সেহরি খেয়ে লাইনে দাঁড়িয়েও কাঙ্ক্ষিত টিকিট পাচ্ছেন না তারা। যাও পাচ্ছেন তাও আবার কাঙ্ক্ষিত রুটের নয়।যাত্রীদের অভিযোগ, এক রকম বেশি টাকা গচ্চা দিয়ে টিকিট কিনতে হচ্ছে। এছাড়া গন্তব্যের চেয়ে বেশি দূরত্বের টিকিট কিনতে হচ্ছে। যেমন- বগুড়ার যাত্রীকে রংপুরের টিকিট, দিনাজপুরের যাত্রীকে ঠাকুরগাঁওয়ের টিকিট, রংপুরের যাত্রীদের লালমনিরহাটের টিকিট ক্রয়ে বাধ্য করছে পরিবহন কর্তৃপক্ষ। ফলে টিকিট না পাওয়ার শঙ্কায় বাধ্য হয়েই বেশি টাকা দিয়ে এসব টিকিট কিনছেন যাত্রীরা।ঈদুল ফিতর উপলক্ষে আজ (সোমবার) থেকে শুরু হয়েছে অগ্রিম টিকিট বিক্রি। সকাল সাড়ে ৭টা থেকে উত্তরাঞ্চল ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের ৬০টিরও বেশি রুটের এ টিকিট বিক্রি হচ্ছে।সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, টিকিট প্রত্যাশী যাত্রীরা সেহরির সময় থেকেই বাস কাউন্টারগুলোর সামনে লাইনে দাঁড়িয়েছেন। সময় যত বাড়তে থাকে টিকিট প্রত্যাশীদের লাইনও দীর্ঘ হতে থাকে। কেউবা আবার পত্রিকা বিছিয়ে বসে পড়েন। এত কষ্টের মাঝেও ঈদের বাড়ি যাওয়ার আনন্দ থাকলেও তাদের অভিযোগ, এত কষ্টের পরও কাঙ্ক্ষিত রুটের টিকিট পাওয়া যাচ্ছে না।রেহমান জিৎ নামে একজন বলেন, দীর্ঘ লাইনে দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়েও কাঙ্ক্ষিত টিকিট পাচ্ছি না। আমাকে কুড়িগ্রামের টিকিট ধরিয়ে দিয়ে অতিরিক্ত টাকা নেয়া হয়েছে। যদিও আমার গন্তব্য রংপুর। শুধু রংপুরের নাকি ভালো মানের টিকিট নেই।বগুড়ার যাত্রী রাজু জানান, আমাকে নওগাঁর টিকিট দিয়েছে টিআর ট্রাভেলস। যদিও আমি বগুড়ায় নামবো। টিকিট পেতেই শুধুমাত্র এ অতিরিক্ত টাকা দিলাম।শুধু রেহমান বা রাজু নন, টিকিট প্রত্যাশী শত শত যাত্রীর একই অভিযোগ। কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যের চেয়ে বেশি দূরত্বের টিকিট ধরিয়ে দেয়া হচ্ছে। ফলে গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত টাকা।এ বিষয়ে জানতে চাইলে এসআর ট্রাভেলসের ম্যানেজার মো. আমিন নবী জাগো নিউজকে জানান, টিকিটের দাম বিআরটিএ কর্তৃক নির্ধারিত। বগুড়া ৩৮০ টাকা, নওগাঁ ৪৭০, গাইবান্ধা ৫২০, রংপুর ৫৯০, নীলফামারি ৬৮০ টাকা। এর বেশি নেয়া হচ্ছে না। তবে যারা বগুড়ার টিকিট পাচ্ছেন না কিংবা ভালোমানের টিকিট চাচ্ছেন তাদের একই রুটের অন্য জেলার টিকিট দেয়া হচ্ছে।একই তথ্য জানান হানিফ কাউন্টারের টিকিটমাস্টার বাবুল আক্তার। তিনি জানান, হানিফ বাসের টিকিটের অভাব নেই। তবে ৩০ জুন ও ৪ জুলাই টিকিটের চাহিদা বেশি। এই দু’দিনের টিকিট হয়তো দ্রুতই শেষ হয়ে যাবে। তবে অন্য দিনের পর্যাপ্ত টিকিট রয়েছে।বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি ও শ্যামলী পরিবহনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রমেশ চন্দ্র ঘোষ জাগো নিউজকে জানান, ‘গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আজ (সোমবার) সকাল থেকে বাসের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। সরকার নির্ধারিত ভাড়ায় টিকিট বিক্রি হচ্ছে। নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে বাড়তি ভাড়া আদায় করলে সমিতির পক্ষ থেকে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’এছাড়া অগ্রিম টিকিট বিক্রিকে কেন্দ্র করে যে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে উল্লেখ করে রাস্তায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সহযোগিতায় এবারের ঈদ যাত্রা ভালো হবে বলে আশা করেন তিনি।জেইউ/আরএস/আরআইপি

Advertisement