দুই মাসে সিটিসেল হারিয়েছে ৩১ হাজার গ্রাহক। চলতি বছরের ৩১ মার্চ পর্যন্ত সিটিসেলের মোট গ্রাহক ছিল ৭ লাখ ৯৯ হাজার। দুই মাসের ব্যাবধানে বৃহস্পতিবার (২৬ মে) তাদের গ্রাহক সংখ্যা এসে দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৬৮ হাজারে।গত পাঁচ বছরে সিটিসেল মোট ১১ লাখের বেশী গ্রাহক হারিয়েছে। ২০১০ সালের আগস্ট মাসে সিটিসেলের গ্রাহক সংখ্যা ছিল ২২ লাখ ৯৫ হাজার। চলতি বছরের জানুয়ারিতে তাদের গ্রাহক সংখ্যা এসে দাঁড়ায় ১২ লাখ ৭৬ হাজারে। ক্রমাগত গ্রাহক হারানোর কারণে ব্যবসা বন্ধের পথে বাংলাদেশের বাজারে আসা প্রথম মোবাইল ফোন অপারেটর সিটিসেল। সনাতন সিডিএমএ প্রযুক্তি, মানহীন গ্রাহক সেবা, দুর্নীতি-অনিয়ম, প্রতারণায় ডুবতে বসেছে প্রতিষ্ঠানটি। এসব কারণে প্রতিদিনই গানিতিক হারে কমছে সিটিসেলের গ্রাহক। ভয়েস ডাটা সার্ভিস ছাড়াও নানা প্রকল্পের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি বিপুল অংকের টাকা আয় করলেও সরকারি পাওনা প্রায় ৫শ কোটি টাকা দিচ্ছে না। জিএসএম চালুর আবেদনও করে রেখেছে প্রতিষ্ঠানটি।এদিকে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছে পাওনা টাকা পরিশোধের আগে সিটিসেলকে জিএসএম সুবিধা দেওয়া হবে না।বিটিআরসির হিসাব অনুযায়ী প্রতি মাসেই কমছে সিটিসেলের গ্রাহক। কমিশনের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জাগো নিউচকে জানান, সিটিসেলের গ্রাহক সেবার মান এখন এতটাই নাজুক যে, তাদের সিম কেউ কিনছে না।এতে দেউলিয়া হওয়ার উপক্রম প্র্রতিষ্ঠানটি। তিনি বলেন, মালিক পক্ষও নানাভাবে প্রতি মাসে অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা লোপাট করছে। এই অবস্থায় সম্প্রতি সিটিসেলকে কারণ দর্শানোর নোটিশও দিয়েছে বিটিআরসি। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সরকারি পাওনা পরিশোধ না করলে লাইসেন্স বাতিল করারও হুমকি আছে ওই নোটিশে। তিনি আরো বলেন, শুধু সরকারই নয়, অসংখ্য সরকারি-বেসরকারি সংস্থা সিটিসেলের কাছে বিপুল অংকের টাকা পায়। কিন্তু নানা ছলচাতুরির মাধ্যমে এই টাকা দিতে কালক্ষেপণ করছে সিটিসেল। দ্বিতীয় প্রজন্মের মোবাইল প্রযুক্তি টু-জির তরঙ্গ লাইসেন্স নবায়ন ফি ছাড়াও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এনবিআরও সিটিসেলের কাছে পাবে ২শ কোটি টাকার বেশি। এই টাকাও দিচ্ছে না সিটিসেল।দেশের অন্যসব মোবাইল অপারেটরগুলো ক্রমাগত উন্নয়নের দিকে ধাবিত হলেও সিটিসেল কেন গ্রহণযোগ্যতা হারাচ্ছেএমন প্রশ্নের জবাবে সিটিসেলের মার্কেটিং বিভাগের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, মান ঠিক রাখার জন্য আমরা চেষ্টা করছি কিন্তু বিটিআরসি তথা সরকারের শতভাগ সহযোগিতা পাচ্ছি না। আমাদের যদি জিএসএম অনুমোদন দিতো তবে ব্যবসা করে সরকারের পাওনা টাকাও পরিশোধ করতে পারতাম। তবে সিটিসেলের হেড অব মার্কেটিং তাসলিম আগমেদ এ বিষয়ে কোন কথা বলতে রাজি হননি।উল্লেখ্য, বাংলাদেশের প্রথম মোবাইল অপারেটর হিসেবে ১৯৯৩ সালে সিডিএমএ প্রযুক্তি নিয়ে যাত্রা শুরু করে সিটিসেল। এখনও প্রতিষ্ঠানটি জিএসএম প্রযুক্তিতে কনভার্ট হতে চেষ্টা করছে। তবে আগের পাওনা পরিশোধে গড়িমসি করার কারণে বিটিআরসি এ প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছে।আরএম/এআরএস/এবিএস
Advertisement