ঘড়ির কাঁটায় তখন ১২৩ মিনিট। মেসির বাড়ানো পাস থেকে গোল করে হাত উঁচু করে বুঝিয়ে দিলেন ম্যাচের ফলাফল। ২-০ গোলে ইউরোপা লিগ চ্যাম্পিয়ন সেভিয়াকে হারিয়ে কোপা দেলরের রেকর্ড ২৮তম শিরোপা জিতলো বার্সেলোনা। ১৯৯৮ সালের পর প্রথম দল হিসেবে টানা দু’বার কোপা দেলরের শিরোপা জিতলো কোনদল। দু দলের সামনেই ছিল মৌসুমে দ্বিতীয় শিরোপা জেতার সুযোগ কিন্তু হাড্ডাহাড্ডি এবং পেশী শক্তির লড়াইয়ের এই ম্যাচে শেষ পর্যন্ত বার্সারই জয় হয়। রেফারিকেও বেশ বেগ পেতে হয়েছে ম্যাচ পরিচালনা করতে গিয়ে। ১১টি হলুদ কার্ড এবং ৩টি লাল কার্ড দেখিয়ে ফুটবলারদের কাছে রীতিমত খলনায়কে পরিণত হন রেফারি। ম্যাচের শুরু থেকেই দু দল পজিশন নির্ভর ফুটবল উপহার দিতে থাকে কিন্তু বার্সেলোনার সাথে অতটা পেড়ে উঠছিল না উনাই এমরির দল। মাত্র ১০০ ঘন্টার ভেতরেই টানা দ্বিতীয় ফাইনাল খেলতে নেমেও তাদের অদম্য মানসিকতার কাছে বারবার পরাস্ত হচ্ছিলেন মেসি-নেইমার-সুয়ারেজরা। প্রথম ৩০ মিনিটে কোন দলই তেমন কোন সুযোগ সৃষ্টি করতে পারেনি। ৩৬ মিনিটেই ম্যাচের উল্লেখযোগ্য মুহূর্তে সেভিয়ার স্ট্রাইকার গ্রামেরোকে ফাউল করে সরাসরি লাল কার্ড দেখেন মাসচেরানো। আর এতেই দশ জনের দলে পরিণত হয় বার্সা। ডি বক্সের বাইরে থেকে বানেগার করা ফ্রি কিক রুখে দেন বার্সা গোলকিপার টের স্টেগান। একজন কমে যাওয়াতেই বার্সাকে চেপে ধরে সেভিয়া কিন্তু প্রথমার্ধ গোলশূন্য ড্র থেকেই শেষ হয়।বিরতি থেকে ফিরে যেন আরো নাজেহাল হয়ে পড়ে বার্সা। তার উপর রেফারির একের পর একে হলুদ কার্ডে দুদলই ম্যাচ থেকে মনোযোগ হারিয়ে পেশী শক্তির দিকেই বেশি মনযোগ দিচ্ছিল। ৫০ মিনিটে বানেগার করা শট গোলবারে লেগে ফিরে এলে গোল বঞ্চিত হয় সেভিয়া। বার্সেলোনার বড় ধাক্কাটি আসে ৫৭ মিনিটে। হ্যামস্ট্রিং ইনজুরিতে পড়ে মাঠ ছাড়তে হয় গোল্ডেন বুট জয়ী লুইস সুয়ারেজকে। তার পরিবর্তে রাফিনহা নেমেও তেমন কোন সুবিধা করতে পারেননি। ম্যাচের একদম অন্তিম মুহূর্তে সেভিয়ার বানেগা নেইমারকে ফাউল করলে রেফারি তাকে লাল কার্ড দেখান। দু’দলই পরিণত হয় দশজনের দলে। নির্ধারিত সময়ে আর কোন গোল না হলে খেলা গড়ায় অতিরক্তি সময়ে। অতিরিক্ত সময়ের শুরুতেই মেসির মাঝমাঠ থেকে মাথার উপর দিয়ে বাড়ানো বলে গোল করে দলকে উল্লাসে মাতিয়ে তোলেন জর্দি আলবা। মৌসুমে এটিই তার প্রথম গোল। আর প্রথম গোলটি করে বসলেন দলের যখন গোল দরকার ঠিক তখন। গোল খেয়ে যেন মরিয়া হয়ে ওঠে সেভিয়া। একের পর এক বার্সেলোনার ডিফেন্সে আক্রমণ চালালেও কাঙ্ক্ষিত গোলের দেখা পাচ্ছিলনা দলটি। উল্টো ম্যাচের ১২১ মিনিটে সেভিয়ার ফুটবলার কারিকো দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখলে তাকেও লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়তে হয়। ৯ জনের সেভিয়াকে পেয়ে ম্যাচের ১২২ মিনিটে গোল করে দলের শিরোপা নিশ্চিত করেন নেইমার। আরআর/জেএইচ
Advertisement