যেখানে হাত দিচ্ছি সেখানেই সমস্যা আর অনিয়ম: স্বাস্থ্য উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০২:৪৮ এএম, ০১ জানুয়ারি ২০২৫
মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাজ করে দেখছি, যেখানেই হাত দিচ্ছি সেখানেই সমস্যা আর অনিয়ম- এমন অভিযোগ করেছেন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম।

তিনি বলেন, এই অবস্থা থেকে উত্তরণে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। এজন্য প্রয়োজন সবার সহযোগিতা। 

মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) রাজধানীর মিন্টো রোডে শহীদ আবু সাঈদ ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন হলে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব বলেন। ওষুধ শিল্প সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের নিয়ে এই সভা আয়োজন করা হয়।

স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বলেন, আমার মনে হয় আমরা সবাই যে জায়গায় আছি, সবাই যদি নিজেদের জায়গা থেকে একটু ত্যাগ স্বীকার করি, একটু একটু করে যদি অভ্যাসটি আমরা তৈরি করতে পারি, তাহলে দেশ হিসেবে আমরা এগোতে পারবো।

তিনি বলেন, আমাদের সব জায়গায় সিস্টেমে সমস্যা আছে। এই যে বিভিন্ন আইন আছে সেই আইনের প্রয়োগ ও আইন না মানা বা তা নিয়ে ফলোআপ করা হয় না। আইন নানান কারণে না-ও মানা হতে পারে, যেমন জবাবদিহির অভাব। আবার অনেক ক্ষেত্রে জবাবদিহি থাকলেও সেটা নিয়ে কেউ চার্জ করে না।

নূরজাহান বেগম বলেন, যেসব জায়গায় ফাঁকফোকর ও অনিয়ম আছে, সেগুলা শুধরে নিয়ে আমরা যদি চেষ্টা করি, তাহলে আমরা সাধারণ মানুষের কষ্ট কিছুটা হলেও লাঘব করতে পারবো।  এবার ২৪ এর আন্দোলনে যে অসংখ্য মানুষ আর ১৯-২০ বছর বয়সী ছেলে-মেয়েরা অঙ্গ হারালো, তাদের ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে আসুন আমরা একযোগে কাজ করি।

তিনি আরও বলেন, গ্রাম পর্যায়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে কাজ করে আমার জীবনে ৪৫ বছর কেটেছে। আমার মনে হয়, ওদের কষ্টটা আমি জানি ও অনুভব করি। মাস দুয়েক আগে ড. হোসেন জিল্লুর রহমান (বেসরকারি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান ব্র্যাকের চেয়ারম্যান) আমাদের এখানে একটা প্রেজেন্টেশন দিয়েছিলেন। তিনি বলেছেন, আট থেকে নয় শতাংশ মানুষ দরিদ্র থেকে দরিদ্রতর হয়ে যাচ্ছে শুধু ওষুধ এবং চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে গিয়ে। কিন্তু সেখানেও তারা কোনো স্যাটিসফেকশন পাচ্ছে না। যদি চিকিৎসক, মন্ত্রণালয়, ওষুধ প্রস্তুতকারী ও বিক্রেতা-সবাই নিজেদের জায়গা থেকে একটু চেষ্টা করি, তাহলে আমরা দেশের সাধারণ মানুষকে এ ব্যয়ভার থেকে কিছুটা হলেও স্বস্তি দিতে পারবো।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান বলেন, আমরা রেগুলেটর, ম্যানুফ্যাকচারার এবং ডিসপেন্সারের সঙ্গে বিস্তারিত কথা বলেছি। এছাড়া ডাক্তার এবং যারা ওষুধ ব্যবহার করেন, তাদের সঙ্গে আমাদের বসার পরিকল্পনা আছে। বাকি দুই গ্রুপের সঙ্গে কথা বলে সবাই মিলে ওষুধ শিল্পের জন্য একটি কমপ্রিহেনসিভ প্ল্যান (সমন্বিত পরিকল্পনা) তৈরি করবো।

স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. সাইদুর রহমানের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন- ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. শামীম হায়দার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. সৈয়দ আব্দুল হামিদ, গণস্বাস্থ্য ফার্মাসিটিক্যালস লিমিটেডের ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. মনজুর কাদির আহমেদ, রেডিয়েন্ট ফার্মাসিটিক্যালস লিমিটেডের চেয়ারম্যান মো. নাসের শাহরিয়ার জাহেদী, এসিআই হেলথকেয়ার লিমিটেডের চেয়ারম্যান মো. মহিবুজ জামান, ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের পরিচালক আসরাফ হোসেন, বাংলাদেশ কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতির (বিসিডিএস) পরিচালক মো. মিজানুর রহমান প্রমুখ।

এএএম/কেএসআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।