গোলটেবিল বৈঠকে বিশেষজ্ঞরা
ডেঙ্গু আক্রান্তদের নিজ জেলায় চিকিৎসা নেওয়ার পরামর্শ
ডেঙ্গু এখন মৌসুমি রোগ নয়, সারা বছরই মানুষকে আক্রান্ত করছে। শুধু ঢাকায় না, সারা দেশেই ছড়িয়েছে ডেঙ্গু। ঢাকায় মৃত্যু বেশি দেখা গেলেও সবাই ঢাকায় আক্রান্ত হচ্ছে না। বাইরে থেকেও অনেক রোগী চিকিৎসা নিতে ঢাকায় আসছেন, মারাও যাচ্ছেন। এ অবস্থায় অনেক রোগী দ্রুত চিকিৎসা না নিয়ে অবস্থার অবনতি হলে হাসপাতালে যাচ্ছেন। তাই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হলেই রোগীদের ঢাকামুখী না হয়ে নিজ নিজ জেলার এবং পাশের হাসপাতালে দ্রুত চিকিৎসা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা।
এছাড়াও ডেঙ্গু মোকাবিলায় সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে একসঙ্গে এগিয়ে আসারও আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) জাগো নিউজ আয়োজিত ‘ডেঙ্গুর প্রকোপ: সচেতনতায় করণীয়’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে আলোচকরা এসব কথা বলেন। গোলটেবিল বৈঠকে ডেঙ্গুর জীবাণুুবাহী এডিস মশা নিধন ও ডেঙ্গু আক্রান্ত মানুষের চিকিৎসা ও সচেতনতা নিয়ে করণীয় বিষয়ে বিস্তর আলোচনা হয়। অনুষ্ঠানে পৃষ্ঠপোষকতা করে ‘ভিশন মশকিউটো কিলিং ব্যাট ডেঙ্গু সতর্কতা সিজন-৩’।
জাগো নিউজের প্ল্যানিং এডিটর মনিরুজ্জামান উজ্জ্বলের সঞ্চালনায় গোলটেবিল বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ইমেরিটাস অধ্যাপক ডা. এ বি এম আবদুল্লাহ, জাতীয় প্রতিষেধক ও সামাজিক চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের (নিপসম) কীটতত্ত্ব বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক মো. গোলাম ছারোয়ার ও শ্যামলী ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট টিবি হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. আয়েশা আক্তার, জাগো নিউজের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক জিয়াউল হক, চিফ রিপোর্টার ইব্রাহীম হুসাইন অভি, ভিশন ইলেকট্রনিক্সের ডেপুটি ব্র্যান্ড ম্যানেজার রেজওয়ানুল হকসহ অনেকে।
আলোচনায় ডা. এবিএম আবদুল্লাহ বলেন, আমাদের শত্রু এখন মশা। মশার কাছে আমরা হেরে যাবো? এ বছর ডেঙ্গুতে মৃত্যু ২৬৮-এর বেশি হয়ে গেছে। আমরা চাই মানুষ আক্রান্ত না হোক, আক্রান্ত হলেতো আমাদের চিকিৎসা দিতে হবে। ডেঙ্গু হলে হাড়ভাঙা ব্যথা যেটাকে বলা হয়, তেমন শরীরে ব্যথা হয়, র্যাশ ওঠে। ডেঙ্গুর একপর্যায়ে জ্বর কমে আসে। সেসময় যদি মনে করা হয়, আমিতো ভালো হয়ে গেলাম বা চিকিৎসক ঠিকমতো খেয়াল না করে সে ক্ষেত্রে রোগীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে পারে।
যে কারও জ্বর হলেই ডেঙ্গু পরীক্ষা করার পরামর্শ দেন ডা. এবিএম আবদুল্লাহ। সাধারণ জ্বর মনে করে অবহেলা না করার পরামর্শও দেন তিনি।
ডা. গোলাম ছারোয়ার বলেন, আমাদের ঢাকা শহরে মশা মারার জন্য যে কীটনাশক দেওয়া হয় তা একজন কীটতত্ত্ববিদের পর্যালোচনায় দেওয়া প্রয়োজন। যে কীটনাশক দিচ্ছে তা নিয়ে জ্ঞান থাকা প্রয়োজন। কোন সময়ে কীভাবে প্রয়োগ করলে মশার বিরুদ্ধে এটি কার্যকরী হবে তা জেনে দিতে হবে। এছাড়াও সামনের দিনে পরিবেশবান্ধব কীটনাশক কেনার বিষয়ে আলোচনা হচ্ছে। সামনে হয়তো এর প্রয়োগ দেখা দিতে পারে।
ডা. আয়েশা আক্তার বলেন, ডেঙ্গুতে নারীদের মৃত্যু বেশি হচ্ছে অবহেলার কারণে। জ্বর হলেও ঘরের কাজ এবং অন্যান্য কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকে নারী। দেরি করে হাসপাতালে আসছে। সঠিক সময়ে চিকিৎসা না নেওয়ার ফলে অনেক নারীই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। ডেঙ্গু সংক্রমণ রোধে আমাদের সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
জিয়াউল হক বলেন, আমরা চাই জাগো নিউজের মাধ্যমে মানুষ ডেঙ্গু নিয়ে সচেতন হোক। আমাদের প্রচারে যদি একজন মানুষও উপকৃত হয় তাতেই আমাদের সার্থকতা।
অনুষ্ঠানে আগত অতিথিদের তিনি দেশের জন্য কাজ করায় ও অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করায় ধন্যবাদ জানান।
এএএম/এমআইএইচএস/এমএমএআর/এএসএম