স্বাস্থ্যের পরিচালকসহ লাইন ডিরেক্টরদের অপসারণ দাবি ড্যাবের

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৭:৫০ পিএম, ২০ অক্টোবর ২০২৪
ছবি-সংগৃহীত

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত পরিচালক (প্রশাসন) ডা. এবিএম আবু হানিফসহ লাইন ডিরেক্টরদের অপসারণ ও শাস্তি দাবি করেছে বিএনপি সমর্থিত চিকিৎসকদের সংগঠন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (ড্যাব)। তবে তাদের এই তথ্য একেবারেই ভিত্তিহীন ও মিথ্যা বলছেন নতুন এই পদে নিয়োগপ্রাপ্তরা।

রোববার (২০ অক্টোবর) সকালে স্বাস্থ্যসেবা অধিদপ্তরের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশে ড্যাব থেকে স্বৈরাচারের দোসর আখ্যা দিয়ে নতুন নিয়োগ পাওয়া কর্মকর্তাদের পদত্যাগ দাবি করেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, সমাবেশে ড্যাবের কেন্দ্রীয় কমিটি ও ডিজি শাখাসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের পাশাপাশি স্থানীয় যুবদল ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীদেরও দেখা গেছে। তাদের নিয়মিত অবস্থানে কার্যত স্থবির হয়ে ছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

সমাবেশ থেকে অধিদপ্তরে কর্মরত অধিকাংশ স্বাস্থ্য প্রশাসককে ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর আখ্যা দিয়ে তাদের পদ থেকে সরে যাওয়ার আহ্বান জানান তারা। অন্যথায় তাদের ব্যাপারে ড্যাব আপস করবে না বলে সমাবেশে জানানো হয়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. রোবেদ আমীনকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে পুনর্বাসন চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ করেন ড্যাব নেতারা।

সম্প্রতি চারজন চিকিৎসককে প্রত্যন্ত অঞ্চলে বদলির আদেশ বাতিলের দাবি জানায় ড্যাব। তারা হলেন, ডা. শাহ আলী আকবর আশরাফী, ডা. মো. আব্দুল ওয়াদুদ, ডা. মো. ফারুক হোসেন ও ডা. মাহবুব আরেফীন রেজানুর।

আন্দোলনে আগ্রহী নয় জানিয়ে দ্রুত তাদের দাবি মেনে নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে ড্যাবের চিকিৎসকরা বলেন, তারা চান সরকারের শুভবুদ্ধির উদয় হোক। অন্যথায় আন্দোলনের মাধ্যমে স্বাস্থ্য উপদেষ্টাসহ মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অপসারণ করা হবে। তারা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের সময় মদদপুষ্ট কোনো চিকিৎসককে সুবিধা নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হবে না।

অন্তর্বর্তী সরকারের সদস্যরা শপথ ভঙ্গ করেছেন বলে অভিযোগ করেন জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানের (নিটোর) ডা. খায়রুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘চিকিৎসকরা স্বাস্থ্য খাতের গুরুত্বপূর্ণ অংশীজন। আর চিকিৎসকদের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ সংগঠন ড্যাব। তাদের বাদ দিয়ে আপনারা কার্যক্রম চালাতে পারবেন না।

এ সময় ড্যাব নেতা ডা. মেহেদী হাসান বলেন, বিতর্কিত নিয়োগের মাধ্যমে স্বাস্থ্য খাতকে অস্থির করা হচ্ছে। আজকের এই স্বাধীনতার জন্য ড্যাবের সব সদস্যের ভূমিকা রয়েছে।

ড্যাবের করা এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নতুন পরিচালক প্রশাসন ডা. এবিএম আবু হানিফ। তিনি দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে আসেন, তবে আন্দোলন পরিস্থিতির কারণে কার্যালয়ে না ঢুকে আবার ফিরে যান এ স্বাস্থ্য প্রশাসক।

এ সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ তোলা হয়েছে, তা সঠিক অভিযোগ না। আমরা যেসব কর্মস্থলে কাজ করে এসেছি, সেগুলোতে খোঁজ নিলে আপনারা বঝুতে পারবেন। প্রশাসনের চেয়ারগুলোতে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে অনেক কিছুর সঙ্গে অ্যাডজাস্ট করে আমাদের কাজ করতে হয়। এগুলো এখন রেফার হিসেবে বিবেচনা করা মনে হয়, সঠিক কাজ না। আমরা যে চেতনায় বিশ্বাস করি, এর সঙ্গে এসব অভিযোগ যায় না।’

তাহলে এ পরিস্থিতি স্বাস্থ্যখাত অস্থির করার পাঁয়তারা কিনা—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এই কথাগুলো আমি এভাবে বলবো না। যে পদে আমাকে পদায়ন করা হয়েছে, সে পদে এক মাস ধরে দায়িত্ব পালন করছি। আমি সবার কাছ থেকে সহযোগিতাই পেয়েছি। কোনো অসহযোগিতা পাইনি। সুতরাং এখানে কাউকে আমি আলাদা করতে রাজি না। উনারা (ড্যাব) উনাদের অবস্থান থেকে কথা বলেছেন। আশা করি, উনাদের অবস্থানও পরিষ্কার হয়ে যাবে।’

এ সময় জটিলতা লাঘবে সবার সহনশীলতা প্রত্যাশা করেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক। বলেন, ‘আশা করি ভুল বোঝাবুঝি কেটে যাবে, সবাইকে নিয়ে আমরা একসঙ্গে কাজ করবো।’

এ লক্ষ্যে সবার সঙ্গে বসবেন কিনা, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা সবাই কানেকটেড আছি। আশা করি, এগুলো কেটে যাবে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হসপিটাল সার্ভিস ম্যানেজমেন্ট বিভাগের লাইন ডিরেক্টর জয়নাল আবেদিন টিটো বলেন, সরকারি চাকরিতে যোগদান করার পর থেকে আমি কখনও কোনো রাজনৈতিক দলের মিটিং মিছিলে যাইনি। সততার সাথে, নিষ্ঠার সাথে রাষ্ট্রের অর্পিত দায়িত্ব পালন করেছি। বিগত সরকারের আমলে আমাকে কুষ্টিয়ায় বদলি করা হয়েছে। সেটাকে ‘সরকারের সিদ্ধান্ত’ মনে করে আমি কুষ্টিয়ায় যোগদান করেছি।

এএএম/এমআরএম/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।