অন্য মেডিকেলে মাইগ্রেশন চান আইচি মেডিকেলের ১৫০ শিক্ষার্থী
রাজধানীর উত্তরার বেসরকারি আইচি মেডিকেল কলেজের ১৫০ জন শিক্ষার্থী তাদের শিক্ষাজীবন নিয়ে অনিশ্চয়তায় পড়েছেন। দ্রুত সময়ের মধ্যে তারা অন্য মেডিকেলে মাইগ্রেশনের ব্যবস্থা করা দাবি জানিয়েছেন।
রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান তারা। অনুমোদনহীন কলেজটির ২০১৮-১৯ থেকে ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষ পর্যন্ত মোট ১৫০ জনের শিক্ষাজীবন রক্ষায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তারা।
সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীদের পক্ষে বক্তব্য তুলে ধরেন শাফিন আহমেদ। তিনি বলেন, বেসরকারি আইচি মেডিকেল কলেজ ২০১৩ সালে ঢাকার উত্তরায় প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকে প্রথম তিনব্যাচ ভর্তি করিয়ে এমবিবিএস নীতিমালা অনুযায়ী সাময়িক অনুমোদন পায়। কলেজের মানোন্নয়ন না করায় বেসরকারি মেডিকেল কলেজ স্থাপনা ও পরিচালনা নীতিমালা-২০১১ (সংশোধিত) বাস্তবায়নের জন্যে আইচি মেডিকেল কলেজকে কিছু শর্তারোপ করা হয়। কিন্ত তা প্রতিপালনকালে ব্যর্থ হওয়ায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আইচি মেডিকেল কলেজকে ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষ থেকে এমবিবিএস কোর্সে ভর্তি কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ করে। পরবর্তীতে হাইকোর্টে রিট আবেদন করে ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষে ২ জন, ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে ৪৯ জন, ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে ৪৯ জন, ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে ৪৯ শিক্ষার্থী ভর্তি করান। যদিও অটোমেশন পদ্ধতির কারণে দুইব্যাচ ২০২২-২৩ ও ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে কোনো শিক্ষার্থী ভর্তি করাতে পারেননি।
কলেজ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে জালিয়াতির অভিযোগ করে তিনি বলেন, ভর্তির সময়ে বিভিন্ন ডকুমেন্টে আমাদের স্বাক্ষর নেওয়া হয়। ভর্তির কিছুদিন পর জানতে পারি স্বাক্ষর করা বেশিরভাগ কাগজপত্রই ভুয়া ছিলো। স্বাক্ষর নিতে বিভিন্ন মিথ্যা তথ্য, অনিয়ম ও দুর্নীতির আশ্রয় নিয়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষ।
মাইগ্রেশন প্রসঙ্গে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, চলতি বছরের ২৮ আগষ্ট আইচি মেডিকেল কলেজ চালাতে ব্যর্থ ও অপারগতা প্রকাশ করে বর্তমান সব শিক্ষার্থীকে অন্য মেডিকেল কলেজে মাইগ্রেশন করে দিতে কোনো আপত্তি নেই বলে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদফতরকে জানানো হয়। স্বশরীরে কলেজ কর্তৃপক্ষের সেক্রেটারি জাহিদুল ইসলাম স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরে গিয়ে মাইগ্রেশনের জন্যে আবেদন করেন। অধিদপ্তরের চিকিৎসা শিক্ষা শাখা এ আবেদন গ্রহণ করেছেন। কিন্তু কলেজ কর্তৃপক্ষের অসহযোগিতায় তা বাস্তবায়ন হয়নি।
এ সময় শিক্ষার্থীদের পক্ষে অবস্থান নিয়ে বক্তব্য রাখেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্বাস্থ্যখাত সংস্কার উপ-কমিটির সদস্যরা। মাসরুর নামে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই শিক্ষার্থী বলেন, আইচি মেডিকেলের শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন মাইগ্রেশনের দাবি জানিয়ে আসছেন। এতদিনে এই বিষয়টি সমাধান হওয়া উচিত ছিল। কেন হলো না এটা বড় প্রশ্ন। সবাই ১৫ বছরের কথা বলছে কিন্তু এটি আসলে ৫৩ বছরের অনিয়মের ফল। আইচি মেডিকেল কর্তৃপক্ষ এই শিক্ষার্থীদের সঙ্গে জালিয়াতি করেছে। এই জালিয়াতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে এবং তাদের মাইগ্রেশনের ব্যবস্থা করতে হবে।
এএএম/এসআইটি/জেআইএম