নাকের সার্জারি করাতে গিয়ে ভুল চিকিৎসায় মৃত্যুর অভিযোগ

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৯:২৩ পিএম, ২৬ আগস্ট ২০২৪
সামসুদ্দোহা শিমুল/ ছবি সংগৃহীত

নাকের সেপ্টোপ্লাস্টি সার্জারি করাতে গিয়ে ভুল চিকিৎসায় মিনিস্টার-মাইওয়ান গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক সামসুদ্দোহা শিমুলের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ঢাকার গ্রিনরোডে অবস্থিত কমফোর্ট হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক ও সংশ্লিষ্টদের দায়িত্বে অবহেলা ও ভুল চিকিৎসার কারণে শিমুলের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন স্বজন ও সহকর্মীরা।

এ অভিযোগে ‘জাস্টিস ফর শিমুল’ ব্যানারে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সাত দফা দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়। সেখানে অংশ নেন শিমুলের স্বজন ও সহকর্মীরা। সামসুদ্দোহা শিমুল অটবি ফার্নিচার কোম্পানির সাবেক জেনারেল ম্যানেজার এবং এসিআই গ্রুপের সাবেক ডিরেক্টর।

অবস্থান কর্মসূচি থেকে দাবি করা হয়, কমফোর্ট হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় সামসুদ্দোহা শিমুলের মৃত্যুর ঘটনায় তার ভাগ্নে রিয়াজ ইসলাম বাদী হয়ে গত ২১ আগস্ট কলাবাগান থানায় ডা. জাহির আল-আমীনকে প্রধান আসামি করে চারজনের নামে মামলা দায়ের করেন এবং চিকিৎসককে গ্রেফতার করা হয়।

পরবর্তীসময় মৃত ব্যক্তিকে দাফনের আগেই আসামিকে জামিন দেওয়া হলে তার স্বজন, সহকর্মীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এর প্রতিবাদে এই অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়েছে, বলে অবস্থান কর্মসূচি থেকে জানানো হয়।

অবস্থান কর্মসূচি থেকে সাত দফা দাবি জানানো হয়। এর মধ্যে রয়েছে-

>> সার্জন প্রফেসর ডা. জাহের আল-আমীন ও অ্যানেস্থেশিয়ান ডা. ইফতেখারের গাফিলতির কারণে রোগীর মৃত্যু হয়েছে যার সকল দায়ভার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও ডাক্তারকে নিতে হবে।

>> কলাবাগান থানার ওসি আবু জাফর মোহাম্মদ মাহফুজুল কবির ও নিউমার্কেট জোনের অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার রাফায়েতের যোগসাজশে রিমান্ডের প্রেয়ার দেওয়া হয়নি এবং আসামি পরের দিনই জামিন পেয়েছেন। এদের ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

>> অভিযুক্ত চিকিৎসক যেন তার সংশ্লিষ্ট সহকর্মী দ্বারা ময়নাতদন্তের রিপোর্ট জালিয়াতি করতে না পারেন সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে হবে।

>> হাসপাতালের কার্যক্রম স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কর্তৃক স্থায়ীভাবে বন্ধ করতে হবে যেন ভবিষ্যতে অন্য কোনো পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।

>> ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।

>> অভিযুক্ত সার্জন প্রফেসর ডা. জাহের আল-আমীন ও অ্যানেস্থেশিয়ান ডা. ইফতেখারের সনদ স্থায়ীভাবে বাতিল করতে হবে এবং দৃষ্টান্তমৃলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

>> বাংলাদেশের সকল প্রাইভেট হাসপাতালের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণে মেডিকেল টিম গঠন করতে হবে এবং যেসব প্রাইভেট হাসপাতাল চিকিৎসা প্রদানে অনুপোযোগী সেগুলোর লাইসেন্স দ্রুত বাতিল করতে হবে।

অবস্থান কর্মসূচি থেকে জানানো হয়, কলাবাগান থানার মামলার নম্বরটি ২(৮) ২০২৪। মামলা করার সময় আসামিদের যেন সর্বোচ্চ শাস্তি হয় সেজন্য থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জাফর মোহাম্মদ মাহফুজুল কবিরকে বাদী পক্ষ থেকে বারবার মামলাটির ধারা পরিবর্তন করে দেওয়ার অনুরোধ করলেও কোনো এক অজ্ঞাত কারণে ধারা পরিবর্তন না করে মামলাটি বাংলাদেশ দণ্ডবিধি আইনের ৩০৪ এর ‘ক’ ধারা অনুযায়ী রুজু করেন। এ ধারা অনুযায়ী একজন আসামির সর্বোচ্চ শাস্তি পাঁচ বছর এবং সর্বনিম্ন দুই বছর হয় যা অত্যন্ত প্রহসনমূলক এবং সুষ্ঠু বিচারের পরিপন্থি।

অবস্থান কর্মসূচি থেকে আরও দাবি করা হয়, এই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে অতীতেও ভুল চিকিৎসার অভিযোগ রয়েছে। এর আগে ২০২২ সালে তিনি এক নারীর কানের ভুল সার্জারির কারণে তার লাইসেন্স এক বছরের জন্য স্থগিত করা হয়েছিল যা এখনো আপিল বিভাগে বিচারাধীন বলে তিনি নিজেই স্বীকার করেছেন। এমন একজন চিকিৎসক কী করে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন তা নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ এবং কর্তৃপক্ষকে আইনের আওতায় এনে বিচারের সম্মুখীন করার দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীর স্বজন, চিকিৎসারত রোগী ও তাদের স্বজনরা।

এমএএস/বিএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।